আন্তর্জাতিক
ভূদেব ভকত
পূর্ণিমাদেবী মাস তিনেক আগে তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন। একমাত্র পুত্র কৌশিক লন্ডনে চাকরি পেয়েছে। কিন্তু সেই সুখবরটি কৌশিকের বাবা জেনে যেতে পারেননি। শ্রাদ্ধশান্তির পর কৌশিক তার মাকে বলল, ‘মা, তুমিও আমাদের সঙ্গে লন্ডনে যাবে। তুমি তৈরি হও’। সদ্য স্বামীহারা পূর্ণিমাদেবীর চোখের জল শুকিয়ে না গেলেও তাঁর ঠোঁটের কোণে একটু যেন হাসি ফুটে উঠল। সময়ের সাথে সাথে কমে আসে দুঃখ, অসহায়তা। বুকের ভেতর জন্ম নেয় এক অদ্ভুত আকুতি। বিদেশ যাবার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়, পাসপোর্ট ইত্যাদি তৈরি করা হয়। ছেলে-বৌমা-নাতির সঙ্গে থাকতে পারার আনন্দ কম নয়। দেখতে দেখতে যাবার দিন এগিয়ে আসে। অধীর আগ্রহে কাটতে থাকে সময়। আন্তর্জাতিক কিছু নতুন নিয়মের জন্য দু’একটা কাগজ পেতে একটু দেরি হচ্ছে। পৃথিবী অনেক এগিয়েছে এই শতাব্দীতে। যুগ পাল্টেছে। অথচ যাবার জন্য একটা বিশেষ কাগজ আসতে কেন যে এত সময় লাগছে! পুত্রবধূ আশ্বাস দেয়, ‘মা, চিন্তা কোরো না, সব হয়ে যাবে’।
কেমন করে কে জানে, পাড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয়স্বজনদের কাছেও খবরটা ছড়িয়ে যায়। নিয়মিত আসতে থাকে টেলিফোনে ও মোবাইলফোনে অনেক অনেক শুভেচ্ছাবাণী। দুঃখ এবং সুখের এমন মেলানো মেশানো অনুভূতি পূর্ণিমাদেবী আগে কখনও উপভোগ করেননি।
যাবার দিন ঘনিয়ে এলো। জরুরি কাগজটা, আশা করা যাচ্ছে, দু’একদিনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে। আর মাত্র তিনদিন পরেই রওনা হতে হবে। পুত্র-পুত্রবধূ-নাতির সঙ্গে লন্ডন! বুকের ভেতরটা কেমন যেন দুরুদুরু করে ওঠে পূর্ণিমাদেবীর। কিন্তু ঐ জরুরি কাগজটা পেতে এত দেরিই বা কেন হচ্ছে! লন্ডন ঠান্ডার জায়গা। গরম কাপড় যত ছিল, তা একখানা বড় স্যুটকেশেও আঁটে না। দুটো আরও সাইডব্যাগ নিতে হলো পূর্ণিমাদেবীকে। মনের মধ্যে গুনগুন করে ওঠে – ‘আমার সকল দুখের প্রদীপ...’। কয়েকটা রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিডিও ভরে নিলেন সাইডব্যাগে। অচেনা দেশে এমন গান কি আর পাওয়া যাবে!
শেষ জরুরি কাগজটাও এসে গেল শেষ পর্যন্ত। ক্যুরিয়ার পোস্টে এলো। খাম খোলা হলো। আর খাম খুলতেই ছেলের মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। পুত্রবধূর অধীর জিজ্ঞাসা, ‘কী হলো?’ কৌশিক হতাশ হয়ে পড়ল। বলল, ‘মাকে অনুমতি দেয়নি লন্ডনে যাবার। কিন্তু আমাদের কোকো অনুমতি পেয়েছে’।
কৌশিকের আদরের একমাত্র কুকুরের নাম ‘কোকো’।
পূর্ণিমাদেবী মাস তিনেক আগে তাঁর স্বামীকে হারিয়েছেন। একমাত্র পুত্র কৌশিক লন্ডনে চাকরি পেয়েছে। কিন্তু সেই সুখবরটি কৌশিকের বাবা জেনে যেতে পারেননি। শ্রাদ্ধশান্তির পর কৌশিক তার মাকে বলল, ‘মা, তুমিও আমাদের সঙ্গে লন্ডনে যাবে। তুমি তৈরি হও’। সদ্য স্বামীহারা পূর্ণিমাদেবীর চোখের জল শুকিয়ে না গেলেও তাঁর ঠোঁটের কোণে একটু যেন হাসি ফুটে উঠল। সময়ের সাথে সাথে কমে আসে দুঃখ, অসহায়তা। বুকের ভেতর জন্ম নেয় এক অদ্ভুত আকুতি। বিদেশ যাবার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়, পাসপোর্ট ইত্যাদি তৈরি করা হয়। ছেলে-বৌমা-নাতির সঙ্গে থাকতে পারার আনন্দ কম নয়। দেখতে দেখতে যাবার দিন এগিয়ে আসে। অধীর আগ্রহে কাটতে থাকে সময়। আন্তর্জাতিক কিছু নতুন নিয়মের জন্য দু’একটা কাগজ পেতে একটু দেরি হচ্ছে। পৃথিবী অনেক এগিয়েছে এই শতাব্দীতে। যুগ পাল্টেছে। অথচ যাবার জন্য একটা বিশেষ কাগজ আসতে কেন যে এত সময় লাগছে! পুত্রবধূ আশ্বাস দেয়, ‘মা, চিন্তা কোরো না, সব হয়ে যাবে’।
কেমন করে কে জানে, পাড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয়স্বজনদের কাছেও খবরটা ছড়িয়ে যায়। নিয়মিত আসতে থাকে টেলিফোনে ও মোবাইলফোনে অনেক অনেক শুভেচ্ছাবাণী। দুঃখ এবং সুখের এমন মেলানো মেশানো অনুভূতি পূর্ণিমাদেবী আগে কখনও উপভোগ করেননি।
যাবার দিন ঘনিয়ে এলো। জরুরি কাগজটা, আশা করা যাচ্ছে, দু’একদিনের মধ্যেই পৌঁছে যাবে। আর মাত্র তিনদিন পরেই রওনা হতে হবে। পুত্র-পুত্রবধূ-নাতির সঙ্গে লন্ডন! বুকের ভেতরটা কেমন যেন দুরুদুরু করে ওঠে পূর্ণিমাদেবীর। কিন্তু ঐ জরুরি কাগজটা পেতে এত দেরিই বা কেন হচ্ছে! লন্ডন ঠান্ডার জায়গা। গরম কাপড় যত ছিল, তা একখানা বড় স্যুটকেশেও আঁটে না। দুটো আরও সাইডব্যাগ নিতে হলো পূর্ণিমাদেবীকে। মনের মধ্যে গুনগুন করে ওঠে – ‘আমার সকল দুখের প্রদীপ...’। কয়েকটা রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিডিও ভরে নিলেন সাইডব্যাগে। অচেনা দেশে এমন গান কি আর পাওয়া যাবে!
শেষ জরুরি কাগজটাও এসে গেল শেষ পর্যন্ত। ক্যুরিয়ার পোস্টে এলো। খাম খোলা হলো। আর খাম খুলতেই ছেলের মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। পুত্রবধূর অধীর জিজ্ঞাসা, ‘কী হলো?’ কৌশিক হতাশ হয়ে পড়ল। বলল, ‘মাকে অনুমতি দেয়নি লন্ডনে যাবার। কিন্তু আমাদের কোকো অনুমতি পেয়েছে’।
কৌশিকের আদরের একমাত্র কুকুরের নাম ‘কোকো’।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন