মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩

০৮ ঊর্মি খান

তোমার ছোঁয়া লাগল প্রাণে
ঊর্মি খান



-আজ আবার সেই বৃষ্টি...

-হুম, সেই বৃষ্টি! ভালো লাগাময়।

-হুম... ভালো লাগাময়। এখন বাইরে চমৎকার বাতাস।

-রোমান্টিক!

-তা বটে! বাইরে ঘুরলেন?

-না। ঘরেই আছি। তবে মনে মনে ঘুরে এলাম।

-কোথায় গেলেন মনে মনে?

-অন্ধকারে ছিলাম। অচেনা প্লেস।

-একা?

-হুম। আমি একা থাকতেই পছন্দ করি।

-একা ভালো লাগছিল?

-লাগছিল।

-বাহ...

-হ্যালো...

-হুম, বলেন

-কী করছেন এখন?

-কিছু...

-কী?

-আপনার সাথে বৃষ্টি নিয়ে কথা বলছি আর ধূমপান করছি।

-সে তো বেশ খানিকক্ষণ আগে! তারপর নিশ্চুপ হলেন...

-রান্নাঘরে গিয়ে একটু দেখে আসলাম

-কী দেখে আসলেন?

-ডাল, চুলায় গরম হচ্ছিল

-আপনি রান্না করেন?

-না, বুয়া রান্না করে

-ও... বুঝলাম

-আপনি রান্না করেন না?

-হুম...। আপনি তো লেখেন বহুকাল! আমি ছোটবেলায় সাহিত্যের পাতায় আপনার লেখা পড়তাম।

-ওহ! এখন আর পড়েন না?

-পড়ি। আমি তো ছোটবেলার কথা বলছি। তখন আমি স্কুলে... কবিতা বুঝতাম না, কিন্তু পড়তাম।

-শুনে খুশি হলাম।

-মাঝে মাঝে বিরক্ত লাগত আধুনিক কবিদের কবিতা পড়তে। এতো বেশি এডাল্ট লিখতেন আপনারা! আমি তো ভাবতাম, আমি কোনোদিন ওই রকম করে লিখতে পারব না। বড় হলেও লিখতে পারব না... হাঃ হাঃ হাঃ...

-হুম... এখন কী ভাবেন?

-এখনকার ভাবনাগুলো অন্যরকম। বিস্তর গভীরতা খোঁজার চেষ্টা অনেক বেশি বিদ্যমান।

-ঠিক, গভীরে যেতেই মজা...

-হুম

-গভীরের স্বাদ কী রকম?

-সেটা আরো বেশি গভীর। গভীরের চেয়ে গভীর। অনেক গভীর! মাঝে মাঝে সীমানা খুঁজে পাওয়া যায় না।

-ভিসা লাগে যেতে? হাঃ হাঃ হাঃ...

-আমার লাগে না। আপনার লাগে?

-আমারও লাগে না। ভিসা তো আমার হাতে নয়!

-কার হাতে?

-আপনার হাতে। হাঃ হাঃ হাঃ...

-হুম... তাই! আমি তো তরঙ্গের মতো। তরঙ্গের কোনো সীমানা নেই। জন্ম হতে না হতেই মৃত্যু। আবার জন্ম, আবার মৃত্যু, আবার জন্ম... খুব মজার, তাই না?

-হুম! এই... এই মেয়ে

-হুম?

-হুম মানে কী? তুমি এতো কথা শিখলে কীভাবে, বল তো? আমি তো তোমার প্রেমে পড়ে যাচ্ছি...

-হাঃ হাঃ হাঃ... আপনি থেকে তুমি...

-কিছু বললে?

-না, কিছু না। আমাকে নিয়ে একটা কাব্য লেখেন।

-লিখব নিশ্চয়ই

-সেদিন পত্রিকায় আপনার একটা ছবি দেখলাম। দারুণ ছবি। অনেকক্ষণ তাকিয়েছিলাম ছবিটার দিকে। ঠিক যেন এক যোদ্ধা। প্রাণবন্ত, উচ্ছ্বল--

-আর?

-মনে হচ্ছিল এইমাত্র যুদ্ধ করে এলেন। হাঃ হাঃ হাঃ...

-হাসিটা অসাধারণ...

-আহাঃ কী কথা! ধন্যবাদ দিতে চাই না। হাঃ হাঃ হাঃ...

-আমি থ্যাঙ্কস পাওয়ার জন্য বলিনি। যা সত্যি তাই বললাম।

-হুম...

-ছবি দেখে আর কী মনে হলো?

-রোদে পোড়া মুখ। কোনো অতৃপ্তি নেই, শুধু পাওয়া আর পাওয়া...। অনাবিল ভালোবাসায় মুগ্ধ এক সৈনিক--

‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে...’

-ওহো! আর বোলো না। আমি পাগল হয়ে যাব। তোমাকে এখন জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে। চল না, একদিন মুখোমুখি আড্ডা দিই! এভাবে অনলাইনে আর ফোনে কথা বলতে ভালো লাগে না...

-আমার ভালো লাগে। হাঃ হাঃ হাঃ...

-তুমি খুব নিষ্ঠুর নারী! রহস্যঘেরা...








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন