মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩

০৯ সুবীর সরকার

ফালাকাটা শহরের বাঘ
সুবীর সরকার




ঘুমের অতলে তলিয়ে যেতে যেতে কিংবা স্বপ্নতাড়িত কোনো এক ঘুমকুহকে ঢুকে যেতে যেতে মাতব্বর তার সমগ্রতায় এক ধরনের শিহরণ টের পায়; তার মনে হয় কোথাও জায়মানতা থাকে না; কেবল নদীর ভিতর জেগে ওঠে অগণন নদী, যাদের আঞ্চলিক প্রবাহের ফাটল ছুঁয়ে বিষণ্ন সব বুদবুদ জেগে ওঠে। মাতব্বর আবার দেখতে পান ফালাকাটা শহরের কবেকার সেই শহর কাঁপানো বাঘটিকে। বাঘ কেবল আর বাঘ থাকে না, তার গায়ের ডোরাকাটা হলুদের উজ্জলতায় বারবার মানুষের তাড়া খাওয়া, জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা বাঘের ভীত সন্ত্রস্ত দিশেহারা ছুটে বেড়ানোটুকু বুঝি মাতব্বরের ঘুমকে হিমশৈলের মতো জাগিয়ে রাখে। অনন্ত ঘুমের কুয়াশাময় আর্তিতে কোচবিহার রাজার শিকারী ভাই, ফালাকাটা শহরের বিপুল জমায়েত, ডোরাকাটা বাঘের দিকে ঘোড়া ছুটিয়ে আসা জার্মান সাহেব; সব যেন তুমুল ভাবে দুলে উঠতে থাকে। মাতব্বর তার ঘুমকে সঞ্চরণশীল মেঘের মতো, বৃষ্টিপতনের মতো স্থিরতা এনে দিতে না পারলেও তার প্রয়াসটুকু জারি থাকে। জোতদারবাড়ির ভগ্ন আগাছা গজানো বর্তমানে এসে নস্টালজিয়ার রেশ ও রেণু সর্বাঙ্গে মাখতে মাখতে মাতব্বরকে ঘুমের পাঁকে পাঁকে তুমুল ডুবেই যেতে হয় পরিত্রাণহীন ভবিতব্যতায়, সুদূরপ্রসারী কোনো গানের মতোন।










কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন