বোবাত্বের জামিন
যেহেতু বাজে না আঙুল - আমি বোবা তাই অথর্ব কোনো
গিটারের নিকট। আকাশ মসলিন বোনা অসমাপ্ত রেখে কে
উঠে গেল সুচ নিয়ে? আর জ্ঞানবুড়ো হাতির কান থেকে
বেরিয়ে পড়ল একঝাঁক অন্ধকার। বলো বাতাস, একেকটি শব্দ
কীভাবে যায়? অপভ্রংশ হতে হতে, পুড়তে পুড়তে...
সুদূরে অপসৃত ট্রেনের হৃদকম্প নিয়ে পালাতে গিয়ে
আমি তো বারংবার ধরা পড়ি নিজেরই কাছে
এখন আমি প্রকৃত অর্থেই বোবা
আমার বোবাত্বের জামিন নিতে কেউ আসেনি এখনো!
আন্ডারগ্রাউন্ড
আমার ঘরে যে ইলেকট্রিক পাখি লোডশেডিং-এ পাখিটার
আহার যায় বন্ধ হয়ে। পাখিটাকে দেখাও যায় না তখন
আমি কী করে তাকে খেতে দিই? উন্মাদ আবহাওয়ায়?
নির্বিকার চেয়ার-টেবিল।
কেবল আমিই জানি মরচে পড়া আঙুল ধূলোর নিচেই জমা আছে
পাখিটা যখন ডেকে ওঠে, জানি তখন সে বলে যায়
এসো না কেউ এসো না এখানে
এখানে শুধু আন্ডারগ্রাউন্ড এক জীবন আছে
সিংহরাশি ও কালোপরী
ব্যাকরণের অনেক দূরত্ব পেরিয়ে তুমি এসো আকাশী কামিজ
তুমি এসো লাল ওড়না…
বৃষ্টি এখানে ছিঁচকাঁদুনে, বাতাস অনির্দিষ্ট, ভুবনচিলগুলো
রানওয়ের বিমানের মতো কেবল ওঠে আর নামে, এই তো এখানের
প্রাকৃতিক খবর
কালোপরী, ভ্রান্ত ঠিকানায় তোমাকে আমি কখনো পৌঁছাতে দেবো না
তোমার চোখেও কি কামিজের নীল আর ওড়নার লাল আগুন?
এখানে স্লোগানে স্লোগানে প্রায়ই সরগরম থাকে প্রজন্মচত্বর
প্রেসক্লাব, কিন্তু সে আগুন আবার মৃতের মতো বরফ হয়ে যেতে
লাগে না সময়। প্রেমের চেয়ে এখন বেশি দরকার সিংহরাশির
আগুন
আগুনের ভেতর দেখা যাক অজস্র মুখ!
সঠিক আগুনের রং চিনে বিপ্লবী হতে সাধ জাগে আজ
প্রতিদিন ডবল-ডেকারে করে যে চলে যায় পলাতক আসামীর মতো
তার পকেট থেকে জ্যান্ত সাপ বের করে এনে
তুমি তাকে এই শহরেই ছেড়ে দিও-
যে নম্বরে তোমার সঙ্গে কথা বলি রোজ,
সে নম্বর আমার মৃত বন্ধুর সীমকার্ডে
আজও রয়ে গেছে -- আমিও হয়তো কিছুটা মৃত;
কালোপরী, এসো জাগাও, বোমার সৌরভে, প্রাণে-ঠোঁটে
বিদ্যুতের ভাষায় কথা বলে যাও
হৃৎপিন্ডটা ধিকিধিকি জ্বলে করে যায় বেঁচে থাকার তরজমা
হৃৎপিন্ডের পাশে বিশাল একটি সূর্য এঁকে দাও, যেন মুক্তি
পাই
চোখের ঘন ঘন পলক পড়া বলে যায় এখনো হইনি অন্ধ
চোখের পাশে এঁকে দিও সবুজ সমুদ্র, যেন মুক্তি পাই
বোবা জন্তুর গোঙানির ভেতর তুমি শব্দবীজ রেখে হেঁটে যেও
সোজা কালোপরী
সোজা পথেই এবার আছাড় খেয়ে হাঁটতে শিখবে দেশ আমার
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন