শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৩

১৪ রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়

রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়

(সবক’টি নির্মিতব্য সাদা কালো ছোট ছবি)




আঁচল

একটা আঁটসাট পুরুষ্টু পিঠ থেকে ঝুলছে এমন এই আঁচলে হলুদের দাগ, ঠোঁটের কোণ, পায়াভারি চাবির গোছা, সুতো ওঠা যতটা আটপৌরে করতে লাগে ততটাই গলবস্ত্র, ঠাকুরঘর, বাসনঘর, রান্নাঘর, কলতলা, কখনো চার আনা আট আনা গিঁটবাঁধা,--

--এই আঁচলেই এখন ষোল আনা ঝুলছে
ঠাকুরঘরে ঘণ্টা, রান্নাঘরে ফোড়ন, কপিকলে শূন্যগর্ভ নেমে যাচ্ছে
খালি কখনো স্থান বা কালবাচক মনে হচ্ছে না
এই উৎক্ষিপ্ত প্রলম্বন
অথবা, দীর্ঘতা এতদূর স্থিতিস্থাপক
যে ক্যামেরা প্যান-অপটিক্যালি অসীম বা অনন্তকে উড্ডীন ধরে ফেলবে...,



দড়ি


করজোড়ে মাথা ঠুকছে। পেন্নাম পেন্নাম, মা তারা! তারা মা!

একটা ছাগ, খেজুর গাছে বাঁধা, দড়িতে জড়িয়ে গিয়েছিল। খেজুর কাঁটায় ফাঁস আটকে বিঘৎ খানেক জিব বেরিয়ে এসেছিল। পেন্নাম পেন্নাম।

আর দৃষ্টিটা ছড়িয়ে পড়েছিল রাতের আকাশে। সেই আকাশে তারা ফুটেছিল।
নিখাগির বুকে একটা নীল আলো এসেছিল। অসীমের কাছাকাছি কোথাও থেকে।
সেদিনের সেই মানতের ছাগটা আজ কাটা পড়ে আকুলি বিকুলি করছে। কাড়া নাকাড়া বাজছে।
পেন্নাম! পেন্নাম!

যার জন্য মানত, সেই ন্যাড়া মাথা, সে একটা ক্লিক ক্যামেরায় ছবি তুলছে।

এই গল্পে স্থিতি বা অস্থিতিস্থাপকতা বলে কিছু নেই।



ব্লেড


গলার কণ্ঠিটা যেখানে উঁচু হয়ে রয়েছে। পাশে একটা মোমবাতি জ্বলছে।
এই আলোতেই শুট হবে। থাক না আন্ডারটোন। এটাই তো শেষ শট।

ফ্ল্যাশব্যাকঃ
১। ডায়াসের ওপর দাঁড়িয়ে একটা ছেলে পুরষ্কার নিচ্ছে
২। একটা আধলা ছুঁড়ে মারলে তরুণ ছেলেটির গাল আড়াআড়ি কেটে যাচ্ছে
৩। নিয়োগপত্রে সই করছে
৪। ইনকিলাব জিন্দাবাদ
৪। পিকেটিং
৫। পুলিশের গাড়ি ভর্তি হচ্ছে
৬। ইনস্যুলিনের শিশিটা হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে

তারপরইঃ
কাঁপা কাঁপা হাতে ব্লেডটা বসে যাবে। কপালের কাটাকুটির ওপরে ক্যামেরা ঝুলে থাকবে। ছিয়ানব্বইটা ফ্রেম।
টপ শটটা জমে গেলে ক্যামেরা ক্রমশ ওপরে উঠবে। ইনফাইনাইট স্পেস।

পৃথিবীর উপরিতলে তখন সরল মোম গলে গলে পড়তে থাকবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন