পোস্টমর্টেম
সোনালি বেগম
ঘাটশিলায় পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গিয়েছে সুবর্ণরেখা নদী। স্থানীয় মানুষজনের বিশ্বাস যে, এই নদীর বালিতে সোনা মেলে। নদীর মাঝখানে বড় বড় বিশালাকার পাথর। আশ্বিনে নদীর দুপার জুড়ে কাশফুলের সমারোহ।
নদীর ধারে আশ্বিনের ঝলমল রোদ্দুরে ভাসছে দুটি নিষ্প্রাণ বিবস্ত্র দেহ। বছর ঊনিশ কুড়ির দুটি সদ্য যুবতী। নদীর উল্টোদিকে ছোটনাগপুর মালভূমি। সবুজের সমারোহে টিলাগুলি জীবন্ত হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। ‘এরা কারা?’ কেউ সন্দেহ ছুঁড়ে দিল। ‘টুরিস্ট’! ‘কি হয়েছিল?’ ‘গতকাল এদের দুজনকে রঙ্কিনী মন্দিরে দেখেছিলাম,’ একজন রুক্ষ এলোমেলো পোশাকের যুবক বলল।
‘তুই চুপ কর,’ একজন জিন্স পরিহিত যুবক, সম্ভবত অটোরিকশাচালক।
ইতিমধ্যে পুলিশ এসে গেছে। সকলেই সন্ত্রস্ত হয়ে সরে যেতে থাকল... কয়েকজন আদিবাসী মহিলা ও পুরুষ ভয়ার্ত হয়ে ছুটে পালাতে গেল, কিন্তু পুলিশ ওদের গ্রেপ্তার করে ভ্যানে তুলে নিল। ‘শোন্, লাশ দুটোকে সাবধানে তোল্, পোস্টমর্টেম-এর জন্য,’ একজন পুলিশের হুকুম।
‘কাজ নেই কম্ম নেই, দু-দুজন সোমত্ত মেয়ে ঘর ছেড়ে বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে,’ অন্য একজন পুলিশের মন্তব্য। ‘দিনকাল খারাপ, নারী স্বাধীনতা! এখন বোঝ ঠ্যালা! এরা ভদ্রঘরের সন্তান! ছ্যা!’
দুপুর গড়িয়ে এলো ক্রমশ । দুর্গাপুজোর পনের দিন বাকি। জাগ্রত রঙ্কিনী দেবীর মন্দিরে বিন্ধ্যপুজা আর আদিবাসীদের ইন্দ মেলা শুরু হয়ে গেল। ধীরে ধীরে সন্ধ্যের গাঢ় অন্ধকারে আদিবাসী যুবক-যুবতীরা মাদলের তালে তালে নাচতে থাকল...
সোনালি বেগম
ঘাটশিলায় পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গিয়েছে সুবর্ণরেখা নদী। স্থানীয় মানুষজনের বিশ্বাস যে, এই নদীর বালিতে সোনা মেলে। নদীর মাঝখানে বড় বড় বিশালাকার পাথর। আশ্বিনে নদীর দুপার জুড়ে কাশফুলের সমারোহ।
নদীর ধারে আশ্বিনের ঝলমল রোদ্দুরে ভাসছে দুটি নিষ্প্রাণ বিবস্ত্র দেহ। বছর ঊনিশ কুড়ির দুটি সদ্য যুবতী। নদীর উল্টোদিকে ছোটনাগপুর মালভূমি। সবুজের সমারোহে টিলাগুলি জীবন্ত হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। ‘এরা কারা?’ কেউ সন্দেহ ছুঁড়ে দিল। ‘টুরিস্ট’! ‘কি হয়েছিল?’ ‘গতকাল এদের দুজনকে রঙ্কিনী মন্দিরে দেখেছিলাম,’ একজন রুক্ষ এলোমেলো পোশাকের যুবক বলল।
‘তুই চুপ কর,’ একজন জিন্স পরিহিত যুবক, সম্ভবত অটোরিকশাচালক।
ইতিমধ্যে পুলিশ এসে গেছে। সকলেই সন্ত্রস্ত হয়ে সরে যেতে থাকল... কয়েকজন আদিবাসী মহিলা ও পুরুষ ভয়ার্ত হয়ে ছুটে পালাতে গেল, কিন্তু পুলিশ ওদের গ্রেপ্তার করে ভ্যানে তুলে নিল। ‘শোন্, লাশ দুটোকে সাবধানে তোল্, পোস্টমর্টেম-এর জন্য,’ একজন পুলিশের হুকুম।
‘কাজ নেই কম্ম নেই, দু-দুজন সোমত্ত মেয়ে ঘর ছেড়ে বনে বাদাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে,’ অন্য একজন পুলিশের মন্তব্য। ‘দিনকাল খারাপ, নারী স্বাধীনতা! এখন বোঝ ঠ্যালা! এরা ভদ্রঘরের সন্তান! ছ্যা!’
দুপুর গড়িয়ে এলো ক্রমশ । দুর্গাপুজোর পনের দিন বাকি। জাগ্রত রঙ্কিনী দেবীর মন্দিরে বিন্ধ্যপুজা আর আদিবাসীদের ইন্দ মেলা শুরু হয়ে গেল। ধীরে ধীরে সন্ধ্যের গাঢ় অন্ধকারে আদিবাসী যুবক-যুবতীরা মাদলের তালে তালে নাচতে থাকল...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন