রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৩

তপনকর ভট্টাচার্য

অন্য কথা
তপনকর ভট্টাচার্য


কী বলবো বলো, যে কথা বলা যাবে না, সেই কথা না বলে, অন্য কথা — অন্য কথা।

সে আমি, হ্যাঁ, সে আমি বলতেই পারি। যেমন, তুমি ফাটাফাটি। তোমার ফিগার, আর কোমর, খুব ইন্টারেস্টিং। ওই জায়গাটা, তুমি তো জানো, কোমর নিয়ে আমার অবসেশন—

যখন কথা বলো, দাঁত ঝকঝক। হাসলে আরো বেশি। চোখ বুজে, নাকে কাঁপা কাঁপা তিরতির, ছোট ছোট দোলা, ছোট গোছা চুল চকিতে সরে যায়। একথাও বলতে পারি। কিন্তু যে কথা বলবো ভাবছি অথবা বলতে চাইছি — তোমাকে আর... ভালোবাসা ক্রমশ... দিন দুঃসহ... আর নয়... সেই কথা বলা যাবে না, তাই অন্য কথা — অথচ তুমিও খুশি, যদি বলে দিই, সে কথাই তুমি শুনতে চাও, কিন্তু আমি বলবো না, তাই অন্য কথা—

শরীর, শুধু শরীর, আমাদের, দুজনের শরীর দুজনার কাছে, যেন আর কিছু নেই। শারীরিক চরম আমরা প্রতিদিন প্রায়। অসফল সঙ্গমের কোনো চিহ্ন আমাদের মধ্যে নেই। অথচ বালি সরে যাচ্ছে, ঢেউ ঢাকা বালি, চোখে না পরা বালি, আস্তে আস্তে—

--আজ শাক ভাজা।

--আজ শুক্তো?

--আজ পাবদা।

--আজ মাংস?

--আজ অম্বল।

--আজ চাটনি?

বলো বলো, এ ছাড়া কী আছে আমাদের? শরীর, সংসার, সঙ্গম, রান্না-খাওয়া ছাড়া! তুমিও চাও কথাগুলো বলতে। বলতে পারো না তাই অন্য কথা —

শীৎকার। কী বিপুল ভঙ্গি! সবটুকু আদায়, দ্বিগুণ ফিরিয়ে দেওয়া, কামড়ে খামচে রক্তাক্ত, আর কথা বললেই অন্য কথা!

এসো, আমরা যা বলতে চাই, যে ভাবে শরীর খুলি, নগ্ন হই, সেইভাবে অন্তত কথা বলি।

--দাঁত মাজা শেষ?

--খবরের কাগজটা দাও।

--মাছ আনবে?

--না, মাংস।

--কাঁচা লঙ্কা, ঢ্যাঁড়স, পটল। আর দই।

--টক?

--না, মিষ্টি।

--অফিস যাবে না?

--না...

--আজ দুপুরে...

--হুম!

--আজ আমাদের...

--হুম!

৩টি মন্তব্য: