কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / নবম সংখ্যা / ১৩৬

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / নবম সংখ্যা / ১৩৬

শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬

রুণা বন্দ্যোপাধ্যায়

সফরান্তরের গল্প

()

ঈষৎ বাঁকা ওই অযৌন ঠোঁট
ফুল থেকে পাপড়ি খসিয়ে
তুলে নিচ্ছে রেণু
আহা রেণু ওড়ার এই দিনে
এমন উজ্জীবন
প্রত্যয়ী বরফও ফিরে দেখে আরবার

হিমাঙ্ক পুষে রাখা ঠোঁট
কত আর রং দিতে পারে বলো
একটা
একটা
করে তাবৎ রঙ্গ পেরিয়ে 
ঊহ্য হলো সাদা ও কালো
প্যালেট দিগন্ত এখন উদাসী ধূসর

নৈঃশব্দ্য ছুঁয়ে যার প্রশান্ত পারাপার
করুণায় কতটুকু আশ্রয় পেতে পারে বলো
স্বীকারে এনেছো শুধু দহনের আলো
অস্বীকারে নিঃসঙ্গ তামস

নেমে দেখো তিরতিরে নদীগর্ভে
রজঃস্বলা নারী
তা দিচ্ছে কুসুম হারানো আলো
আর একটু নেমে দেখো
রেণু ওড়ার এই দিনে
হাসি থেকে
  কান্না থেকে
কীভাবে উড়িয়ে দিচ্ছে পরবাসী চিহ্নসকল

()

বিশাখাবিরলে এখনো দুএকটা দাগ
নড়ে
চড়ে
ঘুণখোর পাঁজরে
আমি যন্ত্র ণা করে যন্ত্রে ফিরি
ঘামনিকোনো ল্যাডার বেয়ে
নেমে যাই
অ... নে... ক... টা
নিচে
করিডোরে চাপ চাপ কালো কালো মাথা
আমার হেলমেট খুলে গড়িয়ে যায়
পাঁজর ছেড়ে মাথাতেও
হানা
দিচ্ছে
কি
আমি হেসে উঠতেই কনসোলে সব আলো লাল
বাযারের একটানা শব্দে
কেঁপে উঠল
জলতল
             তলাতল
আমি হৃদযন্ত্র খুলে রিপ্লেস করে দিই পুরনো ফ্ল্যাশটা


()

যাপনরেখা সমান্তরাল হয়ে এলে
অস্তিত্বে প্রণিত পাখা
অথচ সে নিজেই জানতে পারে না
উপচে ওঠা পালোকিত প্রাণ

উড়ানের কায়াহীন ক্লান্তি
নিরাকারে দ্বন্দ্ব রেখে
আকারে ঝলসে নেয়
ওড়ার বিভ্রমগুলো

পালকে গড়ানো উড়ান প্রণালী
খোদাই করেছে রক্তনদীর জলসিঁড়ি
বহুকাল হল খননের পিতা
হত্যা করেছে পিতামহ

আমি উপকথা থেকে কথা তুলে
নিরাকার থেকে আকার খুলে
গেঁথে রাখছি যাপনান্তর
যদি কোনোদিন দেখা হয়ে যায় পথে


()

ছুটতে ছুটতে ওই দূর
পালাতে পালাতে কখন সুদূর হয়ে এলো
যেন এখনি হারিয়ে যাবে অন্ধকারের প্রান্তরেখা
এখনি টান পড়বে ওই বহির্মুখী স্পাইরালে
যার স্পর্শরেখায় গোপন করেছি
তামসে গড়ানো জল
বিন্দু বিন্দু
লবণাক্ত

অনন্ত এখনো আমার পাশে এসে বসে
ভ্রূমধ্যে অবাক দৃষ্টি
কুলকুণ্ডল থেকে ফোঁটা ফোঁটা শূন্য
উড়ছে তরঙ্গে ব্রহ্ম প্রবাহে
অনন্ত হেসে ওঠে
শূন্যের দেয়া নেয়া দেখে

পুরনো ইস্তাহার এখনো ঝুলে আছে
রমণীয় যাপনের নমনীয় নাভিমূলে
শুধু এক নিমগ্ন নৈঃশব্দ্য
ধীরে নেমে গেছে যোনিসঙ্গমে
শুধু এক উৎফুল্ল আলো
নিজেকে গলিয়ে নিপুণ কাঁকন
বেজ়ে উঠছে দূর ডাকা ওই

সুদূর করিডোরে

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন