কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / নবম সংখ্যা / ১৩৬

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / নবম সংখ্যা / ১৩৬

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩

০৩ ওবায়েদ আকাশ

দংশন

একটু পরেই দংশননীল স্থানগুলোয়
জুড়ে এসে বসবে রাজ্যের প্রতিবাদ

তারা মিছিল করবে, নীলাভ রক্তের মর্মে ঢুকিয়ে দেবে শীতল স্লোগান
চারপাশের জীবনমুমূর্ষূদের হাততালির ভেতর
তৃণাঙ্কুর কঙ্কালসার লাশ হয়ে যাবে আলোর ডালপালা

আমি দংশনকালীন প্রসব বেদনায় তাড়িত জননীর কাছে
বেকুব বনে দাঁড়িয়ে পড়েছি; এ-মতো বিষাক্ত গর্ভপাত নিরোধনে
কতটুকু সাহায্য করতে পারি

তবু ভোরবেলার গোলাপের ঝাড়ে গোলাপ তুলতে গিয়ে
দু’হাত রক্তাক্ত করে মায়ের কাছে ফিরে এসে বলি:
একদিন বৃষ্টির শরীর থেকে গজিয়ে ওঠা ঔষধি গাছে
সমস্ত নীল ধুয়ে মুছে যাবে

ততক্ষণে জাগতিক বিষাদ ভারাতুর সঙ্গীতগুলো
জননীর ছলছল চোখে অনর্গল গীত হতে থাকে


যারা বলছে না

যারা বলছে না, তাদের কাছে আমার সদ্য প্রশিক্ষিত
হাঁটা ও ওড়ার পদ্ধতি জমা রেখে দূরে গিয়ে বসি
অনন্তকাল ধরে নদীর ওপর উড়ে বেড়ানো চিলের
সঙ্গম পদ্ধতি কল্পনা করে জলে নেমে শীতল হতে থাকি

আজ থেকে আমাকে আশ্রয়দাতা ভেবে জলের চঞ্চল প্রাণী
আমাকে কামড়ে-চেটে সোহাগ করে যায়
তারা আমাকে বলে জলের গোপন কথা, চিল-সারসের
অবিশ্বস্ত থাবায় মাছেদের জীবনাশঙ্কার কথা

তাদের উৎসব থেকে নানা প্রকার খাবার-খাদ্য, ফানুস ওড়ানো দেখে
কখন যে রপ্ত হয়ে যায় এই জলে সন্তরণরীতি!
এবার জলের অতলে হাত-পা-কান বন্ধক রেখে
নানা বরণ পাখনা লাগিয়ে একূল থেকে ওকূল সাঁতরে বেড়াতে থাকি


যারা বলছে না, তারা দেখছে
আমার গচ্ছিত হাঁটা ও ওড়ার পদ্ধতি হাতিয়ে নিয়ে তারা
একবার মরু একবার আকাশে
সারি সারি বৃক্ষ রোপণের কথা ভাবছে


শৈশব ও শঠতা



শৈশবে হারানো সুর ডিগবাজিতে বরাবরই প্রথম হয়েছে
চুলের আঙুলে গেঁথে সুউচ্চ শাখা থেকে তুলে নিতো সদ্য পাকা ফল

হারানো কণ্ঠের দিকে নিশ্চুপ তাকিয়ে থেকে
কতবার চোখ দিয়ে অকাতরে রক্ত ঝরিয়েছি
ফলের হলুদ ত্বকে কখনো একাকার হয়ে
তোমাদের আহারে-বিহারে কতকাল ব্যবহৃত হয়ে আসছি

তুমি তার অকাট বিবৃতি দিতে উঠে গেলে সর্বোচ্চ চূড়ায়
শ্রোতৃকূলে তুলে দিলে গালভরা চরম শঠতা

তবু তারা ফিরে এসে তোমার সুকৃতি এঁকে
                                        গাছে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে
চাঁদ এসে চুমু দেয় আর
মধ্যরাত ভারি করে জন্মরোগ, দীর্ঘশ্বাস, প্রসিদ্ধ মিথ্যেরা

এইখানে শৈশব ছিল তালপাতায় বোনা
জিপসিদের আনাগোনা জনে জনে আরও কত গল্প বলে যেত

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন