মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

অজিত বাইরী

 

কবিতার কালিমাটি ১৫০


প্রতিরোধ

 

জাঁতির দাঁতে সুপারির মতো লগ্ন হয়ে আছি।

চাপ পড়লেই টুকরো হয়ে যাব। কিন্তু টুকরো

যাতে না হই, দাঁতে দাঁত চেপে আছি। চোয়ালে

চোয়াল। তুমি যতই শক্ত কর না মুঠি, আমি

প্রতিরোধ গড়ে তুলি ভেতর থেকে। হে, সময়

দু'আধখানা হয়ে ভেঙে যাবার আগে তোমারও

দাঁতের একটা কোণ আমি খসিয়ে নিতে চাই।

 

অবসাদের দেয়াল

 

ক্লান্ত লাগে, খুব ক্লান্ত লাগে;

মনের উপর নামে অবসাদের মেঘ।

বুঝতে পারি, অদ্ভুত আঁধার

নেমে আসছে চারপাশে।

প্রস্তুতি থাকে না, ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল

হয়ে পড়ি;

সেই ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগ থাক বা না-থাক

নিজেকে অপরাধী মনে হয়।

সেদিন সদর রাস্তায় দেখলাম,

কোন কলেজ-ছাত্রের মরদেহ

বহন করে নিয়ে চলেছে তার সহপাঠীরা।

পরেরদিন কোন নাবালিকার ক্ষমাহীন মৃত্যু

গোটা সমাজটাকে নির্বাক করে দেয়।

এসব ঘটনা পরম্পরায় নিজেকে অপরাধী মনে না-হওয়াই অপরাধ।

ক্লান্ত লাগে, খুব ক্লান্ত লাগে;

চারপাশে দেয়াল তোলে তীব্র অবসাদ।

 

দিনাতিপাত

 

আমাদের শোক পালনের দিন খুব কম।

আমাদের স্মৃতিকে ধারণ করার দিনও খুব কম।

আমাদের দিনগুলো গায়ে মাছি বসা

মহিষের মতো অসহিষ্ণু;

খুর ঠোকে আর কান ঝাপটায়।

ধার পড়ে যাওয়া কাস্তের ফলায় ঘাস-কাটা-দিন

গড়িয়ে যায় একের-পর-এক।

দেহাতি রমণীর মাথায় কুচোকাঠের ঝাঁকার মতো রাত নামে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন