![]() |
সমকালীন ছোটগল্প |
রুবাইয়াৎ
কপালে নেই রসকলিটি, তবু গলার কন্ঠীখানি বলে এ বাপু জাত বৈষ্ণব। তাই বলে তাকে আবার বাউল বোষ্টম ভেবে বসো না যেন, শ্রীমতীটিও তার বোষ্টুমী নয় গো। তাহলে জাত চেনা দিল কিসে? হাসিতে গো, হাসিতে। ওই যে ধরতাই দিল ভোম্বলদা, আর পিছলে গেল হাসি। নাকের ভাঁজ পেরিয়ে ঢাউস টেবিলখানায় ডিগবাজি মেরে ছড়িয়ে গেল মেঝেয়, দেওয়ালে, ছাদে।
–ওর গল্প তো আর যে সে গল্প না গো দিদি, এক্কেরে সিনেমা সিরিয়ালের মতো। সে কি আজকের কথা নাকি! বিশবচ্ছর ধরে চিনি। তা এ জায়গা তখন এমন ছিল নাকি, নাকি ওই এমন ছিল? মন্দিরের সিঁড়িতে বসে ফুল বেচত, প্যান্টের ইলাস্টিক লুজ।
-হ্যাঁ গো, সেফটিপিনে আটকাতাম তখন।
বলেই নাক কুঁচকে হাসল মনোরঞ্জন, ঠিক
আট বছরের ছেলেটির মতো।
ভোম্বলদা যেন অশীতিপর বিবেক, রোল বুঝি ফুরিয়েও ফুরোয় না তার।
–ওকে বারবার বলি জানেন, যতই উঁচুতে উঠবি ততই নিচের দিকে তাকাবি, ভুলিস না যেন। ঐটাই তো ভিত রে! ভুলিসনি তো বাবা?
–ভুলি নাই গো, ভুলি নাই।
বৈষ্ণব মনোরঞ্জনের রাধাভাবখানি
স্পষ্ট।
রাধার গৌর অঙ্গের মতো এদেশের মাটি, কৃষ্ণ বিরহে শীর্ণ কিশোরীটি হয়ে উঠেছে যেন মাঠঘাট। তমাল তরুতে কেবলই কৃষ্ণ দরশন। ভাবের ঘরে চুরি করতে করতে একদিন পাকা চোর হয়ে ওঠে সময়, দিনের আয়ু চুরি করে নিয়ে যায় রাত। দেবগিরি পাহাড়ের ঢাল বেয়ে জঙ্গলের গায়ে গায়ে ঘর খোঁজে কালাচ সাপ। চুপিসারে সেঁধিয়ে পড়ে গেরস্তের রান্নাঘরে, গোয়ালে, খাটের নীচে।
শীত বুঝি সেই কালাচ সাপের মতো। খুমকুটের নীল সন্ধ্যায় পিছু নিয়ে চুপিচুপি ধাওয়া করে এসেছে এদ্দুর, কামড় বসালেই চিত্তির। এখন থমকে আছে চৌকাঠে, অফিস বলতে দশ বাই দশের ঘরে ঝোলানো পর্দা, দেওয়ালে সাঁইয়ের ছবি, কাঠের টেবিলে গ্লাসটপ, দেওয়ালে বই, প্রচুর বই আর ধুলোর ওপারে।
মনোরঞ্জন বলছিল তার বইয়ের কথা "the birds of kuldiha"...
দেবগিরি পাহাড়ের ঢালে আদ্যিকালের জঙ্গল। জঙ্গলের গাছেগাছে রাইকিশোরী পাখিগুলির ঘর। গাছ যেন সেই গোঠের রাখাল, মুরলীতে তার রাধানাম বাজে।
–একটা গাছ, একটা নির্দিষ্ট গাছ দেখে বলে দেওয়া যায় এক নির্দিষ্ট স্পেসিসের পাখিগুলি এ জঙ্গলে ঘর বেঁধেছে কিনা। জঙ্গলে যদি সে গাছ মরে হেজে যায়, তবে ওই স্পেসিসও তখন জঙ্গল ছেড়ে ফুড়ুৎ। সে গাছ আবার লাগাও, বড় হলে পাখি আপনি ফিরবে তার ডালে।
–এমন বাঁধন বুঝি!
এ যে পিরিতির আঠা গো! রাইকমলিনী পাখিগুলির সাথে গাছপালাদের আঠায় মোড়া বাঁধনখানি এমন করেই অবাক করে। মনোরঞ্জন হাসে।
–পাখি যে ফিরল, বুঝবে ক্যামনে?
–ডাক শুনে গো, ডাক শুনে।
তা, মনোরঞ্জনের শ্রীমতী কী বলে? শ্রীমতীরও যে একই দশা। এই যে পাতাঝরার মরসুম, ডালপালা যেন খাঁখাঁ, উদোম খোলা ঘরদোর, গাছের সংসার, তখনই পাখিরা বেরিয়ে পড়ে আড়াল ছেড়ে। এ ডাল, সে ডাল ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ।
চুপটি করে বসতে হবে। কান পেতে রও সে পায়ের শব্দে, সে বাঁশির ডাকে উতল হবে বলে। ধরা দেবেই, ধরা সে দেবেই।
শ্রীমতীটিরও সেই রাধাভাব, আকুল
যোগিনীপারা।
মনোরঞ্জনের সাথে জঙ্গলে যায় অনিতা, তার শ্রীমতী। চুপটি করে বসে থাকে, ফিসফিস সরসর নিঝুম চারপাশ। হঠাৎ একটা পাখি শিস দিয়ে ওঠে ঝোপের ভেতর।
"রাতি কৈনু দিবস, দিবস কৈনু
রাতি–
বুঝিতে নারিনু বঁধু তোমার
পিরীতি!"
পিরীতির সাধনখানি চাই।
ধরা সে দেবেই...
বন ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে বিজু পট্টনায়ক পুরস্কার পাওয়া ঘর পালানো মনোরঞ্জন। বসত যেন শিমুল তুলোর ঝাঁক। ফুঁ দিলেই হুসহুস উড়ে যাবে এদিক সেদিক।
পালালো মনোরঞ্জন, মামার দোকানের কাজ ফেলে, মুম্বাই শহরের আলো ফেলে, বিন্দাস বলিউডি চমকের শহর ছেড়ে পালালো ফিরতি পথে। টাকা নেই, টিকিট নেই। কতদূর যাবে সে?
যাবে, ঠিক যতদূর তার উড়াল। ট্রেনের কামরায় গান গেয়ে পয়সা পেলো, খাবার কিনল। নামল পিসির কাছে হাওড়ায়। পিসি ফিরিয়ে দিল ঘরে, কুলডিহার জঙ্গলে দিন আনি দিন খাই সংসারে। মনোরঞ্জন তখন মাধ্যমিক টপকানো, ফার্স্টক্লাস পাওয়া।
পঞ্চলিঙ্গেশ্বর মন্দিরের ধাপে বসল ফুল বেলপাতা নিয়ে। টুকটাক বিক্রি, ট্যুরিস্ট এলে জঙ্গল ঘোরানো। ঘুরতে ঘুরতে পাখি চেনার শুরু, কোন গাছ কোন ঝোপ কোন পাখি।
এ যেন সেই ভরা ভাদরের রাত, কানু অভিসারে যাবে বলে উঠোনে জল ঢেলে পিছল পথে পা টিপেটিপে হাঁটার প্র্যাকটিস। রাধাভাব লও গো, রাধাভাব লও। স্বভাবে বৈষ্ণব হওয়া চাই, তবে তো কানু কুঞ্জে দিবে ধরা। আয়পত্র যা হয় সে দিয়ে নিজের, ভাইদের খাতা বই কেনা। উচ্চমাধ্যমিক সায়েন্স পড়ে ফার্স্টক্লাস। গ্র্যাজুয়েশনে ইকোনমিক্স অনার্স, সেখান থেকে কলকাতা ইউনিভার্সিটির মাস্টার্স। সবকটা ধাপে ফার্স্টক্লাস পাওয়া মনোরঞ্জন, ও হে, মাইক্রো আর ম্যাক্রোইকনমিক্সের পাঠ নেওয়া মনোরঞ্জন "সাফল্য কাকে বলে? আচিভমেন্ট?"
-মেয়ের ট্যুইশন ফিজ দিতে পারা।
বিশেষ করে তাঁকে, যিনি একদিন
পড়িয়েছেন মনোরঞ্জনকে, টিউশন ফিজ ছাড়াই।
রাত তখন অনেক, ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁইছুঁই। ক্লান্ত অফিসঘর, ঝিমিয়ে পড়া ডাইনিং আর তামাম কুলডিহা জঙ্গল শুনছে ধাপভাঙার গল্প। সে এক পেল্লাই বিঘে দশেক জমি। ছড়ানো রিসোর্টের ঘরদোর। নাকের কাছে ঘাপটি মেরে থাকা পাহাড়ের ঢাল। ঢাল ছুঁয়ে, রিসোর্টের গা ছুঁয়ে ধানজমি। ধান পাকলে নামে হাতির দল, শীতের রাতে মাঝেমধ্যেই ঢুকে পড়ে ভালুক। ওদের বুঝিয়ে শুনিয়ে ফেরত পাঠায় মালিক মনোরঞ্জন। মনোরঞ্জন দাস।
লাল ধুলোর ওপর মস্ত কালাচ মাথা নাড়ে, গায়ের হলুদ ডোরায় পিছলে পড়ে আলো। ডাক পেয়ে গেরস্তের ঘর থেকে সাপ ধরে এনেছে মনোরঞ্জন। পাকা গুণীনের মতো বোঝাচ্ছে তার বিষ, বিষের প্রোটিন, প্রোটিনের মতিগতি।
–ভয় করে না? এন্টিভেনাম?
কথায় বলে সাপের ল্যাজে পা। তা, সে
ল্যাজে পা না দিক, হাত দিয়েছে বৈকি। সাপখানা ফোঁস তুললেই আর দেখে কে?
–এন্টিভেনাম? লাগে না গো আমার।
কেমন গুণীন হে তুমি? বিষের ডর নাই?
সাপ, পাখি, হাতিদের সাথে ঘরবসত যার, তার কি ডরালে চলে? এই যে নিডর, নিলাজ রাস্তাখানি সেটিই তো নিরবধি সাধনার ধন।
কলকাতা এক আজব শহর। ক্ষণে ক্ষণে তার ভোল বদল। আবার তাকিয়ে থাকো নির্নিমেষ, দেখবে এক আবহমান কাল যেন থমকে আছে গঙ্গার ঘাটে ঘাটে, অলিগলি রাস্তায়।
"সই, কে বা শুনাইল শ্যামনাম?" ...কে যে শোনায় আর কে যে শোনে সেইটিই তো রহস্য গো। কানের ভিতর দিয়ে কোন নামটি যে মরমে প্রবেশ করবে তার হদিস কেই বা বলতে পারে? আর পারে না বলেই তো হঠাৎ হঠাৎ সময়েরও ভোলবদল হয়, চুপটি করে সামনে এসে দাঁড়ায়। তাকে চিনতে পারে কেবল রসিকজন।
ইকনমিক্সের ছাত্রটি হঠাৎ নাগাল পেয়ে যায় জুলজির ডিপার্টমেন্ট হেড পার্থিব বসুর। স্রোত চারায় শিকড় থেকে শিকড়ে। কলকাতা থেকে কুলডিহার জঙ্গলে যে ফেরে সে পাখিবিদ মনোরঞ্জন, প্রফেশনাল গাইড। শখের চর্চা থেকে ধীরে ধীরে পোকা পাখি সাপ নিয়ে গবেষণা করা ছাত্রছাত্রীদের সিরিয়াস রিসার্চ গাইড। বালাসোর রেঞ্জের কুলডিহা জঙ্গলে দুশ পঁচাত্তর রকমের নতুন পাখির প্রজাতি খুঁজে বার করা মনোরঞ্জন দাস রিসোর্ট চালায়। রিসোর্টের গায়ে গায়ে লাগানো গাছগুলি সাধারণ হয়েও যেন সাধারণ নয়। কোন গাছে কোন পাখি আসবে সে হিসেব জানে মনোরঞ্জন দাস। রিসোর্ট যেন পক্ষীআবাসন, পাখির বসত।
ঘর পালানো মনোরঞ্জন বসত গড়ে রোজ, পাখির জন্য, মানুষের জন্য। শুধু গৃহী মানুষই কি বসত খোঁজে গো? সন্ন্যাসীরও যে ডেরা চাই, নির্জন সাধন না হোক, নির্ঝঞ্ঝাট ভজনটুকুর খোঁজে ডেরা গাড়ে না-গেরস্ত মানুষ। ওই যে সাধু রজনীবাবা, তার গেরুয়া আলখাল্লায় চলকে পড়ল অমন ভোরের আলো, কে জানত সেই আলো ধরতে পারলেই উপচে পড়বে রসভান্ডখানি? আগে থেকে কিছুই জানাজানি হবার জো'টি নেই বাপু। পিঞ্জরে তার অচিন পাখি বাঁধা।
কড়া ঠান্ডায় রজনীবাবার দেওয়া তরলখানি গলায় আরাম দিচ্ছিল বেশ। সাধুর পূর্বাশ্রমের কথাটি বলছিল সাধু নিজেই। বউ, ছেলে, নাতিপুতি আরও যা যা থাকলে সংসারে জোর বাড়ে সে সবই সাধুর আছে। তবে ঠাঁই নাড়া হওয়া কেন গো? মতি গো, মতি। গৃহীলোকে বলবে ভিমরতি।
সুরেন্দ্র দাসকে ঠিক সাকরেদ বলা চলে না, তার মান সাধুর চেয়ে কম কিছু নয়। খাটো ধুতি, টেরিলিনের মোটা আসমানী শার্টে তাকে দেখেছি রিসোর্টের ডাইনিংয়ে, খোলা মাঠে। গাইড সুরেন্দ্রও গল্প হয়ে উঠতে পারে যখন তখন। মাথার মাফলারখানা পোক্ত করে প্যাঁচানো, গায়ে পাঁশুটে আলোয়ান। কেজো মুখ করে সুরেন্দ্র খঞ্জনি বাজিয়ে ঠেকা দেয় সাধুর গাবগুব ঢোলের সাথে।
–কাজ সে আমি অনেক করছি। একসময় রিক্সা চালাইছি। দুধ বিক্রি, সেটাও করিতাম। পিভিসি পাইপ বেচেছি... কী করি নাই!
–তা এখন সেসব করো না আর?
–এখন তো জঙ্গলের গাইড। তবে এমন গ্যারান্টি দিতে পারব নাই যে পাঁচটা হরিণ, তিনটে হাতি, দুটো বুনো শুয়োর দেখাতেই পারবো। আপনার কপালে রইল তো দেখা পাবেন। জঙ্গলের শব্দেই আরাম গো দিদি। কীইই ঝিম ধরায়! একদম নেশা লেগে যাবে।
নেশায় পাগল পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের মাটি, মানুষ, জঙ্গল। সাঁওতাল মানুষ উনুন ঘিরে বসে। কোলে পিঠে তার দেহজ সন্তানরা। এলুমিনিয়ামের ক্যানে ভাতের মদ। নেশা, এই নেশাটিই হল সার কথা। নেশার ঝোঁকেই গৃহী সন্ন্যাসী হয়। বলা নেই, কওয়া নেই একদিন হঠাৎ ঘর ছেড়ে পালায় কিশোর, চেনা পেশা ছেড়ে জঙ্গলের নেশায় চুর হয় মানুষ।
তারপর আর কী? ফুড়ুৎ ফুড়ুৎ পাখিগুলির
মতোই এ ডাল সে ডাল করতে করতে কানু দরশন।
"সখি হে আজ যায়ব মোহি।
ঘর গুরুজন ডর না মানব
বচন চুকব নহি।।"
জীবনের শেষ কথাটিই যে অভিসার গো। লাজ ডর সব ফেলে কৃষ্ণকালার মিলন আকাঙ্ক্ষায় ছুটে চলা। সাধনার ধনগুলিই যে কানুসমান, কলঙ্কের নাই ডর।
সরকার বলল জঙ্গলে ঠাঁই নাই, গাঁঠরিখানি বেঁধে সাধু বেরিয়ে পড়ল আবার ডেরার খোঁজে। সুরেন্দ্র তাকে ভাসিয়ে আনল ভাইপো মনোরঞ্জনের ঠাঁইয়ে।
–অতখানি জায়গা ওকে এমনি দিয়ে দিলে?
রিসোর্টের মুখেই প্রায় বিঘে দুই জায়গায় খড়ের ছাউনি দেওয়া গোল ঘরখানি। তার পাশে ছোট ছোট রান্নাঘর, থাকার ঘর, উঠোনে গাঁদার ফুল। নতুন ডেরা পেয়ে সাধুও খুশিতে ঝলমল। কড়া অন্ধকারে ওপারের রাস্তায় বেনিয়মের মতো আলো ফেলে ছুটে যাচ্ছে গাড়ি, ট্রাক। গাবগুব বাজছে সাধুর ঢোল। মগ্ন হয়ে গান গাইছে রজনীবাবা। সুরেন্দ্র বলল, সাধুর ঘরখানাও মেরামত করিয়ে দিয়েছে মনোরঞ্জন, সঙ্গে এইসব নতুন ঘরদোরও।
"সই, পিরীতি না জানে যারা,
এ তিন ভুবনে জনমে জনমে
কি সুখ জানয়ে তারা?”
কোন পিরিতির টানে এতখানি জমিতে বসত গড়ে দিলে গো? এ হিসেব বোঝা বড় দায়, গড়পড়তা খাতায় কলমে এ হিসেব কষতে গেলে লাভের অঙ্ক শূন্য।
–ও সাধুরে দুষ্ট লোকে ডিস্টার্ব করছিল খুব। আমার কাছে এল, সে আমি বললাম রহ। সেই রইল ঐখানে।
কে যে কারে টানে, কে যে ছুটে আসে কার টানে সে বড় রহস্যকথা। পাখিয়াল মনোরঞ্জন একমনে ঘর বোনে, নিটোল নিবিড়। সে ঘর পাখিদের, সে ঘর পাখির মতো মানুষের। শ্রীমতীটি ঠোঁটে করে খড়কুটো বয়ে আনে, আঁচল দিয়ে আড়াল করে সাঁঝপিদিমের আলো।
বেলা শেষের আলোটিও যে রাইকিশোরী, কৃষ্ণ ভ্রমে জড়িয়ে ধরে চিকন কালা কালো ড্যামের জল। থির বিজুরির মতো গাঢ় আলিঙ্গনে নেমে আসে গভীর কালো জলের বুকে, যেমন জড়ান প্রভু চৈতন্য নীল সাগরের ঢেউ।
"রাধিকার ভাবে প্রভুর সদা অভিমান।
সেই ভাবে আপনাকে হয় রাধাজ্ঞান।।"
রাধাজ্ঞানে রাধভাবেই যে কৃষ্ণ মেলে গো। এ অরণ্য কৃষ্ণের দোসর। পদাবলীর আখরগুলি ছড়িয়ে যাচ্ছে পথে, দেবগিরি পাহাড়ের আনাচে কানাচে, জঙ্গলে। শেষ বিকেলের আলোটির মতোই কানু অভিসারে ছুটে যায় মনোরঞ্জন, সঙ্গী তার শ্রীমতীটি। পাহাড় গড়িয়ে হিমরাত নামছে ঘরে। ঘরের গল্প, গেরস্তের গল্প, জীবনের গল্প বলতে বলতে গান ধরে মনোরঞ্জন দাস, "জিপি জিপি বরষারে..."
বুজে আসে চোখ, মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে
থাকে অনিতা শ্রীমতী।
রুবাইয়াৎ লেখেন ওমর খৈয়াম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন