বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

অভিজিৎ বসু

 

কালিমাটির ঝুরোগল্প ১৩৫


রাত এগারোটা তের মিনিট

নিজেকে অবরুদ্ধ কার্যত বন্দী মনে হচ্ছে। ঘরের ভেতর বন্দী। কন্ঠগুলো খুব মিনমিনে। ভয় শিখতে শিখতে  মৃত্যু এসে গিয়েছে।

মৃত্যু! মৃত্যু!

জোরে জোরে কাঁপছিল বুকের ভেতর। হাসি তামাশা করতে করতে সাপের অঙ্গপ্রতঙ্গ ব্যাগে ভরে রাখা।

হৃৎপিণ্ডের আওয়াজ শুনতে কেমন? হৃৎপিণ্ডের আওয়াজ বলে কথা। একজন ডাক্তার কাছে শুনতে হবে। অথবা কোনো জীববিজ্ঞানী।

এই যে ঘর সারাটা ঘর অন্ধকারে অন্ধকারে পচে গিয়েছে। আরও সামনে। কিন্তু ঘরে তো জায়গা বেশি নেই। ছুঁয়ে ছুঁয়ে এগিয়ে গেলে মনে হয় কে যেন খুব কাছে। শরীরের ঘ্রাণ। এই ঘ্রাণ মনে হয় কত জনমের চেনা।  হঠাৎই এত ঝকঝকে আলো। স্বচ্ছ। চোখে নেশা ধরে যায়।

চোখ দেখে তাকে চেনার চেষ্টা।

সুন্দরী। নারীরা এমনিতেই সুন্দরী। আর প্রতিটি নারী একে অপরের থেকে আলাদা। কুয়াশার মেঘের মতোন।

অচেনা। রাতবিরেতের গল্পের লেন্সে খোঁজে তোমার চোখে সর্বনাশ।

এই শহর, এই ঘর, নরম কমলালেবুর মতোন জীবন। উষ্ণতা, সামান্য ঘুমপারানি গান আর বাতাস। আর তখনই স্থির হয়ে আসে সব কিছু। স্থির সব কিছু।

ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয় সব।

ধন্যবাদ। রক্তবমি করতে করতে শুধু হাসির শব্দ। দুধের ভেতর মুখ দিয়ে উষ্ণতা খোঁজা।

উত্তরটা একদম ফালতু।

ক্লান্ত হয়ে পড়লে আকাশের দিকে মুখ করে সেই নারীর চলা। এ এক দীর্ঘ চলা। আর ব্যথায় ছটফট করতে করতে বলা, তুমি কি আমার মতো!

গাছগুলো বেড়ে উঠবে একদিন। তখনই নীরবতা রক্তপাত বুকের ক্ষতে।

অনেকদিন পর জানালার সামনে। কেমন অচেনা। জানতে পারে না কেউ  রাত এগারোটা তের মিনিটে মারা যাবে কে?

মি, আপনি, সুন্দরী অথবা অন্যকেউ!

ধাপগুলো লাফিয়ে লাফিয়ে হারিয়ে ফেলে কঙ্কাল আর খুলি। জানালায় তখন সুন্দরীর পারসোনাল সিলমোহর।

রাত এগারোটা তের মিনিটে মারা যাবে কে?

চলো এই ঘর, এই শহর, এই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাই। চলো।

রাত এগারোটা তের মিনিটে কে মারা যাবে?

আর প্রতিদিন একজন একজন করে মরে গেলে একটা একটা করে জানালা খুলে যাবে। শীতল হাওয়ায় ভরে যাবে বুক। পিওর অক্সিজেন ফুসফুসের অন্দরমহলে চালান।

সব জানালা খুলে গেলে তখনও পালাতে হবে?

সুন্দরী এবার কিছুতো বলো! কিছু একটা!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন