বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১৪৫


আমি আজ অনন্তের পথে

 

আজ রোদ ওঠেনি

একাকী হেঁটে যাচ্ছি অনন্তের পথে

গতকাল যারা বলেছিল:দেখা হবে,রাস্তায় দেখা হবে!

তারা কেউ রাস্তায় আসেনি

 

আমি শুধু নিজেকেই ভালোবাসতে বাসতে

নিজের সঙ্গেই কথা বলতে বলতে

এগিয়ে চলেছি

 

রাস্তায় অনেক পাখি আর গাছপালা আর নুড়িপাথর

সবাই দেখছে আমাকে

রক্তাক্ত সভ্যতার কোলাহল কানে আসছে

আর চিৎকার করে মরে যাচ্ছে অন্তিম ইচ্ছাগুলি

 

এক ঝলক বাতাস অথবা পোয়াতি মেঘের ছায়া

আমাকে আশ্বাস দিচ্ছে আজ

সূর্য ফিরলে আমার দৈব ভিক্ষার সম্মোহন তীব্র হবে

আমি শুধু শূন্যতা চেয়ে নেব অনন্তের সকালের কাছে।

 

হাতে আর নকশা নেই

 

আহা চিতল মাছ!

সন্ধ্যার জলে ফিরছে ঘাই মেরে

আমরা নির্জন নৌকায় বয়ে চলেছি ক্লান্তির ভার

 

সংকেতের আলোয় সেজে উঠছে সভ্যতা আবার

আমরা শুধু বিশ্রামের টিকিট কিনতে চাই

খুঁজে খুঁজে দেখি কোন্ পাড়ায় বিশ্রামের ঘর

 

হেমন্তকাল লটকে আছে তাপসীর বাগানে

মাধবীরা ফুটবে কখন বাতাসই তা জানে

 কৃপা নেই; সংরাগের নীলকরতলে নক্ষত্র জেগেছে

 

 স্বপ্নের শিহরণ লেগে কাত হচ্ছি বারে বারে

 হাতে আর নকশা নেই পথ চিনবার

 আঁধার ঘন হয়ে আসছে আবেগের জলে

 

 বিচ্ছিন্নতা

 

প্রসন্নতা আজও আসবে না!

মরচেধরা বিবেকেরা চাবুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে

সমুদ্র-ফেনার মতো জমছে হতাশা

 

এই সেই নৌকাখানি আমার, আজ কোথাও ভাসাব না

 

 তীরে এসে জুটেছে সম্পর্কিত বিশ্বাসের ছায়া

 আমার ভঙ্গুর দিন দৈব-নিশিতে ডুবে যায়।

 

শাশ্বতকথা

 

মৃদু স্বপ্নে আছি

মৃদু ভোর হলে জেগে উঠব

মানুষ চিরদিন অসভ্য থেকে গেল

সভ্যতা দখল করল রাজনৈতিক জন্তুরা

 

পর্দার আড়ালে আছি

ব্যাভিচার ব্যাভিচারিনী নিয়ে সংসার

সাধ্যমতন ওরা সবাই ভালো মানুষ

অন্ধকার পেলে মাঝে মাঝে নগ্ন হয়

 

বিষ ও অমৃতের দোকানে গিয়ে বসি

দোকান চালায় মধু আর নিম

দেখতে সুন্দর বেশ নারী ও পুরুষ

যার যা সাধ্যমতো কেনে — কান্না ও হাসিটুকু ফ্রি

 

রাতের চাঁদের কণা বুকে এসে নামে

আমরা সবাই চাঁদ খুঁজি শরীরের গানে

যদিও পাহাড় অরণ্য হ্রদ মরুর সঞ্চার

দেহ মনে রিপু খেলে অসম্ভব প্রলয় প্রহর

 

এ জন্ম মোচন হয়

 

এ জন্ম মোচন করতে এসে

শুধু অসন্তোষ বারুদে পুড়ি

কে এত পোড়ায় আমাকে?

জীবন যদিও দাতব্য চিকিৎসালয়

মন সেখানে চিরদিন রোগী

 

কত ভালো ভাগ্য দেখি এপাশে ওপাশে

অভিনয় সেরে বাড়ি ফেরে

আমি চাঁদ কুড়িয়ে স্বপ্নের ঘরে

গোলাপি হাতের ছবি আঁকি

 

এ জন্ম মোচন হয় ধুলোর পরাগ মেখে

এ জন্ম রোজ পার হয় কান্নায় আকাঙ্ক্ষার শরবত গুলে

 

পূর্ণ কেমন রোজ ভাবি

কতটুকু উজ্জ্বল তার পা, ঠোঁট নাক চোখ

কেমন নূপুর বাজে, দোলে নাকছাবি!

 

 

 

 

 

 


৫টি মন্তব্য: