প্রতিবেশী সাহিত্য
কবি হাং কাং-এর কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি
পরিচিতিঃ হান কাং ২৭ নভেম্বর ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। শুরুতে তিনি ক্রিয়েটিভ
রাইটিং শেখাতেন সিওল ইন্সটিটিউট অফ আর্টসে। কিছু লেখালেখিও করতেন। কিন্তু
"দ্য ভেজিটেরিয়ান" নামক উপন্যাস লিখে তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন এবং ১৯১৬ সালে বুকার এওয়ার্ড পান। এরপর ২০২৪
সালের সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার তাঁর ঝুলিতে এসেছে। তিনি প্রথম সাউথ কোরিয়ান লেখিকা যিনি এই
সম্মান অর্জন করেন। নোবেল কমিটি তাঁর লেখাকে পোয়েটিক প্রোজ বলে উল্লেখ করেছেন।
এ থিংক কলড হার্ট (হৃদয়ের কড়চা)
একটা মুছে ফেলা শব্দকে পুনরুদ্ধার
করতে চাইছি... ভালভাবে বুঝতে চাইছি!
একটা হাল্কা থেকে যাওয়া রেখার অংশ,
যেটা ডানে বাঁয়ে ঝুঁকে আছে... বাকি জায়গা
মুছে যাবার আগে থেকেই খালি, সেখানেই...
কাঁধ বাঁকা করে, কোমর ঝুঁকিয়ে
হাঁটু আর গোড়ালি একসাথে ক'রে ঢুকতে চাইছি...
যখন হৃদয় অবসাদগ্রস্ত হ'তে হ'তে
আর কিছু করতে পারে না মুছে ফেলা ছাড়া!
হাল্কা অথচ ধারালো ব্লেড যেমন আমার ঠোঁটকে
ছোট করে দেয়....! আরও অন্ধকার একটা জায়গা
আমি চাই, আমার জিহবা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে!
Wheelchair dance (হুইলচেয়ারও নাচতে পারে)
কান্না ধরে রাখা এখন একটা অভ্যাসে পরিণত
হয়েছে, কিন্তু এটা আমাকে গ্রাস করে না!
রাতের দু:স্বপ্নও অভ্যাসে পরিণত হয়েছে!
এমনকি নিদ্রাহীন রাত যখন আমার শরীরের
রক্তপ্রবাহে আগুন লাগিয়ে দেয় তখনও...
আমাকে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত করতে পারে না।
দেখ! আমি নৃত্যরত একটা জলন্ত হুইলচেয়ারে।
দেখ! ওহ! কাঁধ নাচাচ্ছি কত গভীরভাবে!
আমি কোনো যাদু জানি না, কোনো গোপন
প্রক্রিয়াও জানা নেই। শুধু এটাই জানি
কোনো কিছুই আমাকে সম্পূর্ণভাবে
বিধ্বস্ত করতে পারবে না।
কোনো নরক, কোনো অভিশাপ, কোনো তুষার ঝঞ্জা
অথবা পাথরের মতো কঠিন ছুড়ির ফলা
কোনোকিছুই আমার শেষকে শেষ করতে পারবে না।
দেখ আমি গাইছি... পুরো হুইলচেয়ার গভীর শ্বাস
নিচ্ছে....
হেলেদুলে নেচে চলেছে!
The song heard at dawn (প্রত্যুষের সংগীত)
বসন্তের আলো আর অন্ধকার ছড়ানো
বিচ্ছিন্নতায় একটা অর্ধমৃত মন
স্তিমিত আলোতে প্রতিফলিত হয়।
ঠোঁট চেপে ধরি...
বসন্ত তো বসন্তই হয়,
শ্বাস প্রশ্বাসও চলতেই থাকে।
আত্মাও তো' আত্মারই স্বরূপ,
আমি ঠোঁট চেপে ধরি!
এটা বিস্তার কতটা হবে...
কতদূর এই অন্ধকার ছড়াবে!
প্রতীক্ষায় থাকতে হবে...
একবার এ ফাটল বন্ধ হয়ে গেলে,
ঠোঁট খুলতে হবে... যখন জিহবা নরম হয়ে উঠবে
আমার ঠোঁট কথা বলবে...
কিন্তু এখন নয়... এখন কখনই নয়!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন