শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ধীমান ব্রক্ষ্মচারী

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৮


শ্রাবণস্তব্ধতা আর নীরবতা নিয়ে

 

(১)

 

পশ্চিম পারে তখন সারি সারি বক মেলে দিয়েছে ওদের ডানা ঘরে ফেরার আশায়,

কালো নিস্তব্ধতায় যে সন্ধের আকাশ দেখে ভয় করত, তখন জানতাম না আমরা

মানুষ পেয়েছি অমরত্ব। দূরের নারকেল গাছ, মাথা তুলে আছে বছরের পর বছর

 ধরে, ঝর জল বৃষ্টি নিয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে সামনের দিকে, মানুষের খোঁজে…

 

(২)

 

ঠিক এভাবেই শান্ত নদী কথা বলে। পারে লেগে থাকা নৌকা থাকে মৌন।

আমরা শহুরে হুজুক দিয়ে বিচলিত করে ফেলি অকারণে। কে জানে এই জল

লেগে থাকা মাটি, আলো কমে আসা দিনের কত মাধুর্য। কত বড় নদী এখানে মাথা

নত করে ফেলে ভালোবেসে। কত বোধ এখানে নতুন করে উপলব্ধি করতে পারে

তাদের নির্জনতা। ওই সন্ধ্যার নৌকা। পাশেই এসে মিশেছে সুবর্ণরেখা। নিস্তেজ আর

নিস্তরঙ্গ হয়ে আমাদের শিখিয়ে দেয় নিরহংকারের মাহাত্ম্য। অন্ধকার মাটি আলো

পেলে কথা বলে, জলের পারে রেখে দেয় কত ভালোবাসার রেখা। আমরা নুড়ি

কুড়োতে গিয়ে খুঁজে পাই পুরোনো শোকগাঁথা।

 

(৩)

 

ফেলে এসেছি রাস্তার বাঁক, এখন আর নিয়ম করে পেছনের দিকে ফিরে যাচ্ছি না

কোলাহল ছেড়ে, শুধু কিছু ব্যর্থতা দিয়ে চাপা দেওয়া আস্ফালন নিয়ে যাচ্ছি জীবনের তাড়নায়

কে বলবে এখানে কফিনবন্দি হয়ে থাকে মৃত মানুষের লাশ...

 

প্রতিষ্ঠান বিরোধী

 

আমাদের বাড়ির উঠোনে ভোরে যেত নানা রঙের আবিরে

সকাল থেকে রাত আমরা শৈশবের উন্মাদনা ফেলে দিতাম

স্মৃতির উঠোনে, সেই ছোট্টবেলার দেখা গ্রাম কত পাল্টে গেছে

এখন রঙের ভিড় নেই, আনন্দ নেই, উল্লাস নেই

এক রঙের আবির সারা বাংলার আকাশে বাতাসে উড়ে উড়ে বেড়ায়

দিকে দিকে শাসকের ঘাঁটি

 

হে প্রেম

 

হে প্রেম অভিমান ভেঙে এসো

হে প্রেম নিঃশব্দে এসো

হে প্রেম আস্ফালন ছেড়ে এসো আলিঙ্গনে

হে প্রেম একবার ক্রুশ বিদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকো আমার প্রতিস্পর্ধী

চেতনার সম্মুখে

এসো বিষাদ, এসো নৈপুণ্যতা, এসো সংগ্রামে

এসো প্রেম আমার দিনের আলোয়, রাতের অন্ধকারে

এসো প্রেম মৌনতা জুড়ে আমার ললাট ছুঁয়ে

এসো অদৃশ্য, এসো বায়ু, এসো স্ফুলিঙ্গ উড়িয়ে অন্ধ কৌশলে

এসো প্রেম, এসো নিঃশব্দে, এসো ক্লান্তি সরিয়ে

এসো এই জ্বলন্ত যৌবনের স্পর্ধায়, এসো হে অনিবার্য

এসো প্রেম এসো

 

 

 

 

 

 

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন