অপ্রতিরোধ্য
অগ্নিপাথর: শুলামিথ ফায়ারস্টোন
নারীবাদী তাত্ত্বিক ও লেখক শুলামিথ ফায়ারস্টোন যখন ১৯৭০ সালে তাঁর নারীবাদী ইশতেহার দ্য ডায়ালেক্টিক অফ সেক্স: দ্য কেস ফর ফেমিনিস্ট রেভল্যুশন প্রকাশ করেন, বইটি প্রকাশনা জগতে তীব্র আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছিল। আজ অর্দ্ধ-শতাব্দী পর, কৃত্রিম জরায়ু তৈরির জন্য তাঁর আহ্বান, প্রায়ই ঠাট্টা বা উপহাসের সাথে হলেও স্মরণ করা হতো বা হয়।
তবে আজ যখন নারীর গর্ভপাতের অধিকার এবং পুনরুৎপাদন প্রযুক্তি আবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে, তখন নারীর পুনরুৎপাদনমূলক শ্রম শোষণ বিষয়ে তাঁর যুক্তি খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে।
কানাডীয় বংশোদ্ভুত ফায়ারস্টোন ছিলেন
চারুকলার এক শিক্ষার্থী এবং শিকাগো ও নিউইয়র্কে সত্তরের দশকের নারীমুক্তি আন্দোলনে
তিনি হয়ে ওঠেন প্রধান প্রবক্তাদের একজন। দ্বিতীয়-তরঙ্গ বা সেকেন্ড ওয়েভ
নারীবাদের অন্যতম পুরোধা শুলামিথ উনিশ শতকের শেষ পর্যায়ে সূচিত নারীবাদী আন্দোলনের
যে পুনর্জাগরণ ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে দেখা দিচ্ছিল, তারই সম্মুখসারির যোদ্ধাদের একজন
অংশ হিসেবে তিনি বিখ্যাত হন। তাঁর বইয়ের প্রচুর বিক্রি হতো এবং মূলধারার ভাষ্যকার
ও অন্যান্য নারীবাদীদের কাছ থেকেও তিনি প্রশংসা ও নিন্দা- দু’টোই প্রচুর পরিমাণে
পেয়েছেন।
শুলামিথকে নিয়ে বিতর্কের বড় কারণ ছিল যে তিনি গর্ভাবস্থাকে বর্বরতার সূচক হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন এবং নারীর গর্ভধারণের ভূমিকাকেই নারী শোষণের মূল উৎস হিসেবে সনাক্ত করেছিলেন। এবং লৈঙ্গিক এই বৈষম্যের সমস্যা নিরসনে যে কাল্পনিক ভবিষ্যতের স্বপ্ন-চিত্র তিনি এঁকেছিলেন, সেখানে জৈবিক পুনরুৎপাদন প্রক্রিয়াকে তিনি এক্টোজেনেসিস বা কৃত্রিম গর্ভে ভ্রুণের বেড়ে ওঠার ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিস্থাপিত করতে চেয়েছেন- এর উদ্দেশ্য ছিল নারীকে প্রজননের অত্যাচার থেকে মুক্ত করা।
১৯৭০ সালে ফায়ারস্টোনের এসব প্রস্তাবনা কল্পবিজ্ঞানের বিষয় বলে উড়িয়ে দেয়াটা সহজ ছিল। কিন্ত ২০১৭ সালে বিজ্ঞানীরা একটি বায়োব্যাগ তৈরিতে সক্ষম হন এবং এই বায়োব্যাগের ভেতর একটি ভেড়ার ভ্রুণ কয়েক সপ্তাহ রাখা হয়েছিল। মানবভ্রুণ নিয়ে এমন যে কোন সম্ভাব্য গবেষণা বা পরীক্ষা-নিরীক্ষার নৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব গণনা করাটা শুরু হতে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, কৃত্রিম গর্ভ কিন্ত গর্ভপাত বিতর্কের শর্তাবলী আমূল পরিবর্তনে সক্ষম হবে।
ফায়ারস্টোন প্রজনন প্রযুক্তির নতুন নানা আবিষ্কারকে নারীর প্রজনন বা পুনরুৎপাদন সংক্রান্ত পছন্দ-অপছন্দ এবং স্বাধিকারকে বাড়ানোর সুযোগ হিসেবে দেখেছেন। তবে একইসাথে এই সম্ভাবনাও সমান হারে থেকে যাচ্ছে যেখানে এসব অত্যাধুনিক, নতুন প্রজনন প্রযুক্তি গর্ভবতী নারীদের দেহের উপর নিয়ন্ত্রণ বা আধিপত্যের নতুন সব প্রকরণকে বৈধ করতে ব্যবহার করা হবে, যেমন গর্ভপাত-বিরোধীরা এখন যুক্তি দিচ্ছেন যে ভ্রুণ যদি কৃত্রিম গর্ভাধারে রাখা যায়, তবে গর্ভপাত করার আর দরকার নেই।
নিপীড়ন এবং প্রযুক্তি
ফায়ারস্টোন মনে করতেন যে নারীর প্রতি সমাজে বিদম্যান নির্যাতন বা নিপীড়নের ঐতিহাসিক উৎসের শেকড় রয়েছে কার্যকরী জন্ম-নিরোধক বিপুল হারে সহজলভ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত উর্বরাশক্তি সম্পন্ন মেয়েদের অনিয়ন্ত্রিত হারে গর্ভবতী হয়ে পড়ায়। সন্তান ধারণের উপযোগী বয়সের অধিকাংশ নারীকেই যে গর্ভধারণ বা গর্ভাবস্থা, সন্তানের জন্মদান এবং ছোট শিশু সন্তানকে বড় করার ধারাবাহিক চক্রে আবদ্ধ থাকতে হয়েছে বা হতো, এটাই নিশ্চিত করতো যে নারীকে তার জীবনের মৌল চাহিদা তথা খাদ্য-বস্ত্র-আশ্রয়ের মত মৌল চাওয়াগুলোর জন্য পুরুষের উপর নির্ভরশীল হতে হবে এবং সামাজিক আরো নানা কাজ বা সক্রিয়তা থেকে নির্বাসিত বা বিচ্ছিন্ন হতে হবে। মানবজাতির ভেতর প্রথম শ্রেণি বিভাজনের এভাবেই সূচনা হয়েছিল- পুরুষ উৎপাদক ও নারী পুনরুৎপাদক হয়ে ওঠার মাধ্যমে।
ফায়ারস্টোনের বক্তব্যের মৌল প্রতিপাদ্য ছিল যে এসব কিছুই বদলে দেওয়া বা পরিবর্তন করা সম্ভব। প্রজনন প্রযুক্তির নানা অগ্রগতি যেমন নির্ভরযোগ্য জন্ম-নিরোধ, গর্ভপাতের নিরাপদ নানা প্রক্রিয়ার আবিষ্কারের পাশাপাশি উদীয়মান আইভিএফ প্রযুক্তি নারীকে তাঁর প্রজনন সক্ষমতা বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ অর্জনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। প্রজনন প্রযুক্তির অত্যাধুনিক এসব কৌশলের ফলে নারী তার নিজের ইচ্ছা এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী মা হবে কি হবে না সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বা পছন্দ-অপছন্দ করার ক্ষমতা অর্জন করতে পারছিল।
তবে ১৯৭০-এর দশকের সমস্যা ছিল যে নারীর
প্রজননক্ষমতা বিষয়ে স্বাধিকারের প্রতিশ্রুতি আনতে পারতো যে প্রজনন প্রযুক্তি, সেই প্রযুক্তি তখনো
পর্যন্ত পিতৃতান্ত্রিক ও রক্ষণশীল সব শক্তির নিয়ন্ত্রণে ছিল যারা নারীকে গর্ভপাতের
অধিকার ত’ দেয়ইনি অথবা শুধুমাত্র বিবাহিত নারীদেরই জন্ম-নিরোধক ব্যবহারের অনুমতি
দিয়েছিল।
নারীর প্রতি চাপানো প্রকৃতির অদ্ভুত বৈষম্যের শোধ নিতেই যেন তাই ফায়ারস্টোন রাজনৈতিক তাত্ত্বিক কার্ল মার্ক্সের কথা থেকে ধার করে সব নারীকে সাময়িক ভাবে ’মানবীয় উর্বরতার নিয়ন্ত্রণ হাতে নিতে’ আহ্বান জানান- নারীকে তার নিজের জন্য প্রজনন প্রযুক্তিকে লাগসই করে তোলার ডাক দেন তিনি, ঠিক যেমন কার্ল মার্ক্স সর্বহারা বা প্রলেতারিয়েতকে উৎপাদনের হাতিয়ার দখলের ডাক দিয়েছিলেন। এই আহ্বান জানানোর মাধ্যমেই শুলামিথ বলতে চেয়েছেন যে গর্ভপাত সহ আইভিএফ প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণ মেয়েদের হাতেই থাকা উচিত এবং পুরুষ-নিয়ন্ত্রিত রাজনীতি ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর মেয়েদের নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়।
নারীকে যদি তার সনাতনী পুনরুৎপাদন বা প্রজনন দায়িত্ব বা ভূমিকা থেকে মুক্ত করা যায় বা যেতো, তবে এক নতুন ধাঁচের সন্তান লালন-পালন প্রক্রিয়ার জন্ম হতে পারতো। আধুনিক দম্পতি-কেন্দ্রিক বা শুধুই পিতা-মাতা-সন্তানকে নিয়ে গড়ে ওঠা পরিবারকে শুলামিথ পুরুষালী ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে দেখেছেন। নারী তার চিরাচরিত প্রজনন ভূমিকা থেকে মুক্তি পেলে দম্পতি-কেন্দ্রিক পরিবার ব্যবস্থা নির্মূল হয়ে এক বিকেন্দ্রীকরণ হওয়া শিশু লালন-পালন করার অবকাঠামোয় সন্তানেরা কিছু প্রাপ্ত-বয়ষ্কের হাতে মানুষ হতে পারতো- এমন বাড়িগুলোকে ‘পরিবার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন শুলামিথ। সন্তানকে মানুষ করার দায় ভাগ করে নেওয়াটা নারীকে তার আগের পেশা বা সত্ত্বা ত্যাগ না করেই মা হবার সক্ষমতা যোগাবে। শিশুরা বেশ কিছু প্রাপ্ত-বয়ষ্কের হাতে লালিত-পালিত হবার সম্পর্ক থেকে অনেক লাভবান হবে, পাশাপাশি জৈবিকভাবে পিতা-মাতা হতে অক্ষম মানুষেরাও পালক পিতা-মাতা হবার স্বাদ পাবে।
আজকের দিনে ফায়ারস্টোনের পুনর্পঠন:
দ্বিতীয় তরঙ্গের পর থেকে নারীবাদী তত্ত্বের বিবর্তন ফায়ারস্টোনের কাজে গুরুতর নানা ভুল সনাক্ত করেছে। এর ভেতর একটি হলো কালো বা আফ্রিকীয় বংশোদ্ভূ‚ত মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতার ঐতিহাসিক অপব্যবহার প্রশ্নে শুলামিথের আদৌ দৃকপাত না করা এবং দেহ নিয়ে এক অসম্ভব ভয় বা ভীতিবোধ যা তাকে দিয়ে শুধুই গর্ভধারণের দৈহিক সঙ্কট বা সমস্যা বিষয়ে একমুখী ভাবে আলোকপাত করিয়েছে। সন্তানের জন্মদানকে তিনি ’কুমড়োর মত কিছু একটা মলত্যাগ করা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
তবে আজকের দিনে ফায়ারস্টোনের ইশতেহার তার যাবতীয় সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও হালের নারীবাদীদের পড়ার তালিকায় ফিরে ফিরে আসছে। এটা অংশত: তাঁর কাজ ‘প্রজনন বিচার আন্দোলন’-এর নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপরায়ণ বলে, যা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের শেষ করে দেবার অধিকারের পক্ষে আওয়াজ তোলে এবং অংশত: শিশু লালন-পালনের জন্য সেসব শর্তাবলীর কথা তোলে যা শিশু এবং তার প্রতিপালকবৃন্দ- উভয়পক্ষকেই বিকশিত হবার সুযোগ দেয়।
হালে ফায়ারস্টোন ‘জেনোফেমিনিস্ট’ বা প্রযুক্তির মাধ্যমে লৈঙ্গিক অসমতা দূর করার দাবি তোলা নারীবাদীদের দ্বারা উদ্ধৃত হচ্ছেন, যারা প্রগতিশীল নানা লক্ষ্যে প্রযুক্তি ‘হ্যাক’ করা বা ছিনিয়ে নেবার পক্ষে কথা বলেন। এবং একইসাথে জৈবিক পরিবারের বাইরে যেয়ে বা উর্দ্ধে উঠে যারা আত্মীয়তা এবং শিশুর লালন-পালনের বিষয়টি ভাবছেন তাঁরাও ফায়ারস্টোনকে দিয়ে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। এঁদের ভেতর আছেন ক্যুইর তাত্ত্বিক এবং ’পরিপূর্ণ বিকল্প মাতৃত্ব’ ত্তত্বের প্রচারকরাও। সোফি লুইসের কথা এপ্রসঙ্গে বলা যেতে পারে।
১৯৭০ সালে ‘দ্য ডায়ালেক্টিক অফ সেক্স’ প্রকাশের অল্প কিছুদিন পরেই ফায়ারস্টোন নারীবাদী আন্দোলন এবং জন-দৃষ্টির সামনে থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। নারীবাদী আন্দোলনের পরিবর্তে একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে নিজের কর্মজীবনের প্রতি তিনি মনোযোগী হন এবং একইসাথে বারবার ফিরে আসা মানসিক অসুস্থতার সাথেও তাঁর লড়াই চলে যার জন্য মাঝে মাঝেই তাঁকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। ২০১২ সালে নিউ ইয়র্কে তাঁর মৃত্যু হয়।
কৃত্রিম গর্ভ নির্মাণের জন্য ফায়ারস্টোনের ডাকের জন্য যদিও শুলামিথ স্মরিত হন, তবে তিনি অস্বীকার করেননি যে কিছু মানুষ ‘সেকেলে’ বা জৈবিকভাবেও প্রজনন করতে চাইতে পারে। তাঁর কাছে সবচেয়ে যেটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটি হলো ‘সন্তান হবে কি হবে না অথবা হলেও কৃত্রিম ভাবে তাদের পাওয়া’ যেন ‘সনাতনী’ পদ্ধতিতে গর্ভ-ধারণের মতই বৈধ হয়।
যে কারণে শুলামিথের বইয়ের কাছে আজো আমাদের ফিরে আসতে হয় সেটা হলো গর্ভধারণের সক্ষমতার কারণে নারীর প্রতি সঙ্ঘটিত বহু বঞ্চনা ও অসাম্য যা আজো সমাজে বিদ্যমান এবং এই বিষয়টির প্রতিকারে সমাজকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।
১৯৪৫ সালের ৭ই জানুয়ারি কানাডার অটোয়ায় এক রক্ষণশীল ইহুদি পরিবারে শুলামিথ বাথ শুমুয়েল বেন আরি ফেউয়েরস্টেইন নামে তাঁর জন্ম। সত্তরের দশকের শুরুতেই নারীবাদী আন্দোলন ও বাম রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে তিনি চলে যান নিউইয়র্কের ইস্ট ভিলেজে যেখানে তিনি চিত্রকলায় মনোনিবেশ করেন। আশির দশকে বারবার মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন তিনি এবং ১৯৮৮ সালে দারিদ্র্য, মানসিক অসুস্থতা এবং মানসিক হাসপাতাল নিয়ে তাঁর ছোট গল্প সঙ্কলন ‘বায়ুশূন্য পরিসর’ ছাড়া মাঝখানের দীর্ঘ সময়ে তিনি আর কোন বই প্রকাশ করেননি।
২০১২ সালের ১৮ই আগস্ট তাঁর নিউইয়র্কের এ্যাপার্টমেন্টে ৬৭ বছরের শুলামিথকে একাকী, মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে পাওয়া যায়। র্যাডিক্যাল নারীবাদী ধ্যান-ধারণা ও ধর্ম বিরোধী, সংশয়ী বা নাস্তিক্যমূলক চিন্তামূলক ভাবনার জন্য শুলামিথ বহু আগেই তাঁর রক্ষণশীল ইহুদি পিতা-মাতা এবং ভাই-বোনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। ’গর্ভধারণ’কে বর্বরতা মনে করতেন বলে কোন বর বা প্রণয়ী ছিল না তাঁর এবং সমকামীও তিনি ছিলেন না। তবে ‘র্যাডিক্যাল ফেমিনিস্ট’ বা ’বৈপ্লবিক নারীবাদী’দের যে গোষ্ঠি নিজের হাতে গড়ে তুলেছিলেন শুলামিথ, সেই গোষ্ঠিই অন্তর্দ্বন্দে ও কলহে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং বিশেষত: গোষ্ঠির ভেতর যে নারীরা তাদের লেখনী শক্তির কারণে মিডিয়ার কাছে বেশি আদৃত হয়ে উঠেছিলেন (শুলামিথ নিজেই যেমন), তাঁরা গোষ্ঠির ভেতরের অ-লেখক নারীদের দ্বারা মুখে মুখে চরিত্র হনন সহ নানাবিধ ব্যক্তি আক্রমণে এত বিপন্ন হয়ে পড়েন যে সংবেদনশীল শুলামিথ পরে এই গোষ্ঠি ও নারী আন্দোলন ছেড়ে পুনরায় চিত্রকলায় মনোনিবেশ করেন, নিজেকে গুটিয়ে নেন যাবতীয় সামাজিক বৃত্ত থেকে। যে নারীবাদী আন্দোলনের জন্য তাঁর এত কিছু করা, সেই আন্দোলনেরই বহু ‘নারী সহযোদ্ধা’র হাতে ব্যক্তি আক্রমণ ও চরিত্র হননের শিকার শুলামিথ পরবর্তী জীবনে স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হন। তাই বলে নিজের ভাবনা ও আদর্শে জলাঞ্জলি দিয়ে তাড়াতাড়ি ‘ঘর-বর’ জুটিয়ে নিয়ে, বাইরে নারীবাদী আন্দোলন করার দ্বি-চারিতাও জীবন থাকতে করেননি; যেহেতু ‘পারিবারিক কাঠামোকে তিনি সর্বপ্রকার মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শোষণে’র উৎস বলে মনে করতেন।
১. জো আদেতুনজি, সম্পাদক- কনভার্সেশন
ইউকে। ১২ই আগস্ট ২০১৯
২. https://jwa.org/encyclopedia/article/firestone-shulamith
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন