সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪

সুতপা মুখোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৫


তোমার অবেলার আলোছায়া খেলা

 

তুমি খুব স্বচ্ছন্দে ফুরিয়ে যেতে চেয়েছ,

কিছু মায়াময় দীর্ঘ গলিপথ এখনও রয়ে গেছে।

আগুনের মতো জ্বলে জ্বলে ফুরিয়ে যাওয়া

তোমার অবেলার আলোছায়া খেলা, দৃশ্যপট

পালটে দিতে চাও। মোহ নেই কোথাও।

কখনও গর্ভের আঁধারের মতো চাঁদ ঢেকে রাখছে

পলাতক দিন। তোমার নিঃসীম ধূসর রঙয়ের মতো

পরিযায়ী শীত। অসমাপ্ত বেদনাগুলি ফুলের পাপড়ির রঙে

মিশিয়ে দাও তুমি। তাই আলোকবর্ষ থেকে আরও দূর

চলাচল হয়তো তোমার প্রতিটি বেঁচে থাকায় আন্দোলিত হয়।

তোমার স্বচ্ছন্দ ফুরিয়ে যাওয়া, গলিপথ পার হতে হতে হয়ে ওঠে

আগুনের মতো নিবিড়। একাকী।

 

অপরাধী করে তোলো

 

অপরাধী অপরাধী মানুষের মন

তুমি অনুক্ষণ ভেঙে দাও আলো আলো খেলা

অপরাধী করে তোলো মূহূর্তে আমাকে   

তোমার সৈকত নেই, তাই ঢেউয়েরা ভাঙবার আগে

ফুরিয়ে যায় অনায়াসে। তুমি অপরাধী করে তোলো।

এখানে মাল্যদান শেষ হলে পড়ে থাকে একা মাঠ

ধানের শীষের মতো নিভৃত কিছুটা। তোমার সময়সারণি

বেয়ে উত্তুরে হাওয়ার পথ ধরে সাইবেরিয়ার রাজহাঁস।

আঁধার খুঁজতে খুঁজতে আলোর প্রতিস্পর্ধায় ঢুকে যাই,

তখনই দর্পণে বিচ্ছুরিত তোমার মুখ, গভীর অসুখ এক

মাথার ভিতরে ঘাই মারে। সেখানে ঝরে পড়ে

অশোকের ফুল। তোমার মুষ্টিভিক্ষার কাছে আঁধার

খুঁজেছি এক মুঠো। তবু পা রেখেছি আলোর খেলায়।

অপরাধী করে তোলো আমাকে তখন

অপরাধী অপরাধী মানুষের মন। এই তবে সত্যি হয়ে থাক।

 

একটি পারুল তবু

 

যাপনের সত্তা জুড়ে তিক্ত বিষাদ

তোমাকে মুগ্ধ করে বিচ্ছিন্ন দ্বীপভূমি

অখণ্ড আলো তুমি চাও না। এলোমেলো ভেসে যায়

যেসব মানুষেরা তাদের জীবন কখনই কি নদীর মতন বহমান!

সেখানে অঙ্গারে এসে বসে নি কোনো মথ। আগুনের উর্ধ্বমুখীনতায়

ডানা মেলে দেয়নি কোনো নিভৃত স্বর্ণচাঁপা।

একটি পারুল তবু ফুটেছিল গাছে।

তোমার জলজ দিন বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো,

তোমার তটরেখায় আঁধার আঁধার এক বেলা

গভীর বিষাদে এসে বসে বীণাপাণি

নিরক্ত করবীর লালা জেগে উঠবে আবার।

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন