সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪

গৌরাঙ্গ মোহান্ত

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৫


মেঘের ফিলিগ্রি

 

আমার স্নায়বীয় মানচিত্রে উজ্জ্বল হয়ে আছে মেঘের ফিলিগ্রি ডিজাইন। প্রকৃতপক্ষে মেঘের ভেতর দিয়ে যখন ছুটে চলি, নতুন ভাস্কর্য নির্মিত হতে থাকে। কখনো প্রবহমান বাতাস অঘন রঙের অসংখ্য বিন্দুকে তাড়িয়ে বেড়ায়। কখনো সৌরমণ্ডলীয় দৈত্য সিগ্রেট খেয়ে ক্রমাগত ধোঁয়া ছড়াতে থাকে। যাকে মেঘ বলে জানি তা দূরেই দৃশ্যমান। দূরের দৃশ্যে জেগে থাকে জলপুষ্প--তার ত্রিভূজভূমির ভেতর তরঙ্গধ্বনি। বাঁশির সকরুণ রাধা নাম মেঘের দ্রুতির ভেতর আকাশে ছড়ায় নীলের গাঢ়তা। আমি আকাশের ভেতর দেখি নতুন আকাশ।

 

জলসত্তা

 

সাগরসৈকত থেকে দুটি দ্বীপের দিকে চেয়ে থাকি। একটি দ্বীপে জনবসতি নেই, ভলকেইনোর ভয়ে ঘাসপাতারা ধারণ করতে পারে নি রঙের গাঢ়তা। আলোর ভেতর তারা খুঁজে পেয়েছে নগ্নতা ও নির্জনতার নিষাদ। এ নিষাদ দূর দ্বীপের আকাশে শাগালের বেলাকে ভাসিয়ে রাখে, প্রোমেনাড কিংবা পার্কপথে যে আকাঙ্ক্ষা অর্কিডকে স্পর্শ করেছিলো তার ফ্রিকোয়েন্সি উন্মোচন করে। দ্বীপের মৃণালচেতনা রচনা করে জলাধার; তার ওপরে নির্মিত ব্রিজ পেরিয়ে আমি একটি বাড়ি খুঁজি, আমার নিশ্বাসের দ্রুতির কাছে জলসত্তা ঝুঁকে প্রশ্ন করেছিলো , 'তুমি কি হাঁপিয়ে গেছো'?

 

কাঙ্ক্ষা ও শ্রান্তির দ্বৈরথ

 

কোথায় আজ যেতে চাও? জুহু সৈকতে চাদর বিছিয়ে যারা বসে আছে তারা কিছুক্ষণ পরে বাড়ি ফিরে যাবে। তোমাকে ফিরে যেতে হবে এমারলড হোটেলে। নির্জন কক্ষে তুমি স্বচ্ছন্দতা খুঁজে পাবে না, যাত্রার ক্লান্তি তোমার গহনজল শুষে নিয়েছে বলে তোমার অস্বস্তি প্রবল হবে, সবুজ পাথরে অগ্নিতাপ সহজে সঞ্চালিত হবে না বলে দ্রুত লিফট ধরে তুমি নিচে নেমে আসবে। পৃথ্বী ক্যাফের ঝুলন্ত বাতি তোমার মনোলগের ঔজ্জ্বল্য বাড়াবে। ব্যক্তিগত থিয়েটার থেকে বেরিয়ে দুয়েকটি বইয়ের গন্ধ শুঁকতে চাইবে। ক্রসওয়ার্ড বুকস্টোরে তোমার পছন্দের বই পাবে কি? বইয়ের স্তূপের ভেতর কবিতা এখন সুকন্যার অগ্নিদগ্ধ ডালিয়া--অঙ্গার-পথে তার নির্বাণ যাত্রা। সুকন্যা মোহান্তির Cacophony and the Silence তোমার সেরিব্রামে ছড়িয়ে দেবে কাঙ্ক্ষা ও শ্রান্তির দ্বৈরথ।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন