মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩

দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৩


ঘুড়ি

 

অন্ধকার বসে আছে পেছন ফিরে

মাছের দীর্ঘশ্বাস নিয়ে রোগা নদীটি

পাথরগুলিকে অতীত শোনায়

পাথরগুলো থর থর করে কাঁপে

আর ক্রমশ সম্পর্ক থেকে দূর

সেতু একা হয়ে পড়ে

 

মর্জিনা এসব কথা জানে

তার শরীর খারাপ হলে

সে শুধু রক্ত দেখে

রোগা শরীর থেকে বেরিয়ে যায়

 

একটা গোলপানা চাঁদ

কচুরিপানার জলায় হেমন্তের শিশিরে

সেরে নেয় কড়য়া চৌথ

আর সমস্ত ঝিঁঝি সমবেত গানের

আসর জমিয়ে দেয়

 

সর জমে গেলে ক্ষীর

দুঃখ থেকে মিষ্টি আনন্দে

একটা রাত্রি শেষ সুতো ছেড়ে দেয়

মর্জিনা তালাকের আগে

শীৎকার শোনে সঙ্গমের

 

মাছের চোখে

 

ভয়

 

এখন কবিতারা কুকুরছানায়

ঋভুর পিছন পিছন বাবা

গরম পোশাক আর বিস্কুট যোগানে

রাত্রি আর দিনের মাঝখানে

বসে যাচ্ছে স্নেহ ও শৈশব

ভরে যাচ্ছে অপূর্ণের আধার

উপচে উঠলেই একটা ভয়

দানা বাঁধে হারাবার

অসুখওয়ালা হতে চাইছি না

 

কল্পকাহিনীগুলি

 

(১)

 

পুকুরের জলে মুখ দেখছে মর্জিনা আর চাঁদ

বাবুদের বাড়ির বহুতলে এক ডিম আলো

জানালার গ্রীল নিয়ে সাঁতার দিচ্ছে

ঘাটে ঘুমিয়ে আছে কুকুর ও বক

শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে

মায়াজলের পিছনে উপচে পড়ছে মাছ- লাফানো গান

 

(২)

 

ফসলের কাটা দেহ নিয়ে পড়ে মাঠ

দেখছে অনুর্বর মালতী

বিষণ্ন অতিথি বসে চোখের ঘরে

বাইরে ফাগুনের হাতছানি

আগুন বেয়ে পড়ে যাচ্ছে ফেনা ও ভাত

হলুদ পাতা উড়ে যাচ্ছে বিপুল

কারণ জানা নেই

কেন অবেলায় গান গাইছে বউ কথা কও

 

অসহায়

 

দুঃখে ভিজে যাচ্ছে আমার নির্জন

কুয়াশার ওপারে হারিয়ে যাচ্ছে মা

কিছুই করতে পারছি না

 

স্টোভের উপর আগুন ঢেলে

চলে গিয়েছে কেউ

অগোছালো চাদরে আদর

লুকিয়ে নেই আর

যোগাযোগ ভেঙে গেলে

কিছু করার থাকে না

 

পুড়ে যেতে হয় একা একা

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন