কবিতার কালিমাটি ১৩৩ |
বিষাদের নদী
নদীর ওপারে দাঁড়িয়ে বিরহিনী রাই
মালা থেকে খসে পড়ে ফুল
ভরা নদী। ডুবে যাচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত আর্তনাদ।
তবু বিরহ ফিরে আসে। পোড়ে বুক
অনন্ত কথার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকে বিমর্ষ রাই।
সন্ধ্যা নামে দিনান্তের কথাঘরে
রাতের পথিক উনোনের আঁচে বিষাদের জীবন সাজায়।
প্রত্যাশার দিনগুলো ফিরে আসে না আর
দুচোখের তারায় ভাসে বিষণ্ণ নদী
আসে না বসন্ত
আসে না বউ কথা কও
নীরব কথাগুলো বুকের ভেতর কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।
ঘামে ভেজে রোদ
শুকিয়ে ওঠে ত্রিকাল। মাটির বিগ্রহ। জন্মপাত্র।
পোড়াখই।
কখনো মানুষ
আজও খটখটে সকাল
রোচনামচা জীবন মাখে খেয়ালি রঙ
আমিও সাজাই জীবন
কখনো বেদনার পাহাড় বুকে বয়ে নিয়ে বেড়াই।
ইচ্ছেগুলো মৃত নদী
তবু পেরিয়ে যাই শীতের শহর
পড়ে থাকে কচি ভ্রূণ
কন্যা ভ্রূণ
যুগে যুগে মৃত্যু মেখে ছটপট করে ডাস্টবিনের ভেতর।
মানুষ চিরকাল নির্দয়
জলাশয়ে চিতল। শুষে খায় ভ্রূণের রক্ত ও হৃদয়।
কারা আসে
কারা কাঁদে দিনরাত। ভ্রূক্ষেপ নেই কারো
তবু এক শক্ত শিরদাঁড় মানুষ পকেটে তুলে রাখে ভ্রূণ
কিংবদন্তি। ইতিহাস।
বাহবা নেই শংসা নেই। তবু নিঃস্বার্থে কাজ করে ক'টা
মানুষ।
আর্যপুরুষ
জল থেকে তুলে আনি জলজ সংসার
জলে জলছবি। মৌরলা মাছ
সারারাত বৃষ্টি। মাছেদের শীৎকার
অতল মন
আগুন পাখি হয়ে খোঁজে মেঘবালিকা
কখনো বেপরোয়া জীবন গড়ে নৈ:শব্দের কথাঘরে
ইতিহাস খাবি খায়
সারারাত রোদন ভরা বসন্তের কোলাহল বুকের ভেতর
মরতে চাই না
তবু মৃত্যু ফিরে আসে বারবার। হাতছানি দেয়
তবু পরোয়া নেই আমার
আমি কখনো স্বপ্ন হই
আমি কখনো হয়ে উঠি কিংবদন্তির আর্যপুরুষ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন