কবিতার কালিমাটি ১৩২ |
না বলা কথা
সমুদ্রের মাঝবক্ষে লুকিয়ে আছে মন্থন,
উজানের পথে এসে ঢেউয়ের চূর্ণ-বিচূর্ণতা
দাবি করে ঝিনুকের দুর্বলতা।
ঝড়ো হাওয়ায় কেতাদুরস্ত কায়দা
আলিঙ্গন করে নেয় একাকিত্বকে,
বিবাগী মনেও কখনো কখনো বৈঠক জমে;
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সহজ শব্দ
পান্ডুলিপি ছুঁয়ে যায় একান্তে।
ইউক্লিড ও জ্যামিতিক বাহার জীবন জুড়ে,
তবু অনুভব করি ভিজে চোখে চিত্রগল্প
কত কথাই বলা হয় না।
ঘাসফড়িংএর জীবন বদলে উজ্জীবিত হতে হতে
জানালার সারশিগুলো খুলে দিই,
নিষ্পাপ ভোরের গন্ধে ঘুম ভাঙে আবার।
টাইমলাইন
একটা টাইম লাইন পড়ে আছে অক্ষর বিন্যাসের জন্য
অবাধ্য
জটিল অংকগুলো হিসাবের হেরফেরে
যত্রতত্র
নিঃস্বার অস্তিত্ব জানানো ব্যস্ত,
কাঁঠাল
গাছে বাবুই পাখির ঘর আর দেখা যায় না
শিশির
ঘাসে লেগে থাকে না স্নিগ্ধতা,
একটা
কলম হাতে আমি প্রতিবাদমুখী হই-
নুড়ি
পাথরের জন্ম উৎশৃঙ্খলা তার বর্ণপ্রপাত,
আমি
চেয়ে দেখি রাতের প্রান্তে স্মৃতিলোলুপ চাঁদ,
হৃদয়
নির্বাসনে গেছে অনেকদিন আগেই
বিস্মিত
স্মরণে শব্দরা আজ বড় অস্থির
প্রেম
বিলোতে গিয়ে কলসির কানায়
ঘা
খাওয়া অনেকটা অভ্যাসের মতো।
অক্ষর
চরিত্রের চিহ্নের আয়ু আমাতে সাবলীল
এখনো
নিশ্চিন্ত ঘুমের আশায় তাই
জেগে
থাকে মিথস্ক্রিয়ার আলিঙ্গন,
বাষ্প
সরিয়ে সকাল থেকে
সামনে
আসতেই হয় অতঃপর।
অভ্যন্তরীণ
বিনিদ্র রজনী খোঁজে অমাবস্যার রাত
আত্মহননের বৈরাগী দর্শনে মজেছে মন,
ব্রিটিশনার অন্তরালে আস্তে আস্তে
বিগত দিনের পূর্বভাস জেগে ওঠে
আমি কাঁটাতারের বিদ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা লিখি
বিপদ আমায় ছুঁতে পারে না,
তবু অবশেষ বাকি থাকে;
জল তরঙ্গে খেয়ালে মৈথিলীর আগে সুর বাজে-
আমি জেগে থাকি বালিশের খোলের
মত অভিন্যস্ত হয়ে,
পাশের হাইড্রেনের ময়লা তোলার মতো
অনিশ্চিতের ভাবনায় জীবন মৃত্যুর
দূরত্বকে লাগাম দিয়ে আমি থেকে যাই শেষ পর্যন্ত।
অনিশ্চিত সম্ভাবনা
নীরব সৌজন্যে ফিরে আসে অনিশ্চিত সম্ভাবনা,
বক্তব্যে বিবর্ণ বিকালের পড়ন্ত সূর্য
অহংকারী সরল শুধু সময়ের অপেক্ষা
ছাইএর
মত গুঁড়িয়ে যাওয়া
অনুভূতি ছড়িয়ে যায় চারিদিক
তবু প্রশ্নের ডাক পিছু ছাড়ে না কিছুতেই,
বিশ্বাসে নক্ষত্র নাভি মূল থেকে
ছড়িয়ে পড়বে কম্পন একদিন
ইতস্তত দৃষ্টিতে অবাক চিহ্নের মতো
সেদিন সময় রুদ্ধ হবে।
খেয়ালি মনের স্বাধীনতায় জন্ম হবে
মানবীয় সংকেতের,
অপরিসীম নৃশংস দূষণ শেষে
নীল
রঙে মাতবে আবার সবুজ।
অস্তিত্ব ক্ষয়
মসৃণ দিনের মতো ফোঁটায় ফোঁটায় গড়িয়ে পড়ে জল
ফলাফল বিহীন কত বাতাসের অস্তিত্ব অধরা থেকে যায়
অপেক্ষায় একটা তীব্র দৃষ্টির মুহূর্তে
অবাক জলপানে ব্যস্ত.
ছেলেবেলার ভালোলাগা রূপকথার কাহিনীরা এখন
স্বভাব মন্বন্তরের এক একটি দৃশ্যপট,
দপ্তরি লাইন বেয়ে খুঁজে আশ্রয়
নির্জন আঁচলের মুখ ঢেকে রাখার দিন শেষ ,
প্রসেস ফুডে মন বেশি টানে মূল্যবোধের অঙ্গীকার
অন্তর-তেজে শুকাতে থাকে,
পড়ে থাকে বিদ্রোহের অভিলিপ্সা,
মাটি উর্বর হয়েছে আরো
তবু ফলনের দিনলিপি অনিশ্চয় পূর্ণ।
পেসমেকার ধিকি ধিকি সবচেয়ে এগিয়ে চলে
এক পা এক পা করে,
দিনের শেষে অস্তিত্বের ক্ষয়ের থেকে
বড় কিছু হয়তো হয় না আর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন