কবিতার কালিমাটি ১৩২ |
বিগ ব্যাং
তারপর সর্বতোভাবে মঞ্জুর হল প্রস্তাব, ‘সহ্য প্রতিযোগিতা’।
গাছ - ঝড়ঝাপটা, শিকড় কামড়ে থাকা, কার্বন ডাই অক্সাইড,
ছায়ায় বিশ্রাম... বিনীত জানালেন
পাখি - ডানার ক্লান্তি, খাদ্যাভাব, টাওয়ারের রে...
পাখিশ্মশান পরিকল্পনার কথা বলে
একে একে সামিল বিভিন্ন ‘কমিটি’, ‘আন্দোলন’, ‘তৈল
মর্দন পুরস্কার পাওয়ার ধান্দা’
মানুষ - এই যে সেই আদিম থেকে তোমাদের জন্য ভেবে
যাচ্ছি, কত আবিষ্কার, তাছাড়া আমরা চাইছি আর ভালোবেসেছি বলেই তো তোরা আছিস, নাকি?
এরচে' বড় সহ্য আর কি হতে পারে?
রেফারি! রেফারি? রেফারিইইইইইই
মাটিকে রেফারি করা হয়েছে। কিন্তু তাকে খুঁজেই পাওয়া
যাচ্ছে না এই ‘সহ্য প্রতিযোগিতা’য়।
গোপনে, আকাশের কাছে রেফারি,
"দ্যাখো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না, তাছাড়া
সবাই অবাক হলে আকাশ থেকে পড়ে, আমি তো আমার থেকে আরো কোনো নীচে পড়ে যেতেও পারছি না,
কী করি?"
আকাশ - "শোনো মাটি হে মৃত্তিকা এভাবে রিঅ্যাক্ট
করো না, আমারও ভাল্লাগছে না কিছুই,
আচ্ছা, একটু আদর করলে হয় না? সেই যে মাঝেমধ্যে
আমরা করে থাকি গো আর আর পৃথিবী জুড়ে সব অসহ্য ডিলিট হতে থাকে?
করবে মাটি ও মা করবে আদর? আবার সময় ঘনিয়ে এসেছে..."
মাটি ঠোঁট এগোয় আকাশের দিকে...
মৃদু কাঁপন, পৃথিবীর চোখ গোল হতে হতে পারে রাস্তা
নদী নালায়...
আকাশ প্রণাম করতে থাকে মাটির সেই সব সেই চিরকালের
রস...
সহ্যের বানান ঠিক কি গো?
আত্ম
এক দূর আসে
কীভাবে এলো ভাবতে ভাবতে, হাঁপায়
চাষী বউয়ের বাঁকা স্তন থেকে গড়িয়ে পড়া ঘামে
নাচে শহর
যুদ্ধ করে কুঞ্জ মেঘ আর ধানঝাড়া মাটি
সে প্রাচীন সালিশি সভা দিগন্ত খুলে রয়েছে আজও
চলে যাচ্ছে দূর
কতক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায়
এই রেশ
উত্তেজনা হাহাকার
অসুস্থ মানুষ খুঁজছে তোমাকে
হাঁ এর পৃথিবী একবার অন্তত না বলে যাও
তুমি ফিরবে বলে দরজায় সমুদ্র বসে আছে
পাহাড় নিজেকে কেটে কেটে সিঁড়ি টাঙিয়ে রেখেছে
ছাদে
কোথায় থাকে এত সহ্য এমন মগ্ন কতদূর আত্মজীবন
তিনভাগ
তার আগেই বর্ষা দেখে ফেলেছি, কাল
গাছে গাছে ডানা ভাঁজ করা পাখি
মাটি খোদাই করে লাল পিঁপড়ে হেঁটে যাচ্ছে, হেঁটে
ফিরবে বলে নদী ঘাটে অপেক্ষা করছে পরিযায়ী
নদী কই, শুকনো পাঁজর পড়ে রয়েছে
শিরা উপশিরায় রং করছে কিছু আকাশছুট বাচ্চারা
নৌকা আলকাতরা মেখে সেই কবে থেকে প্রস্তুত
সোহাগ করছে পোয়াতি মহিলারা নদী হও নদী হও
শাঁখ বাজছে, উলুধ্বনি চারদিকে
সে আসতে পারছে না
সে আসতে পারছে না
পাহাড়ের ভালো থেকে যতটুকু জল... খেয়ে নিয়েছে
পানীয় কারখানা
কিছুটা জমিয়ে রেখেছে আবহাওয়াবিদ
বালি তুলে তুলে অসুস্থ নদী
মিলন হবে কত দিনে জানে না ভবঘুরে
এই সব জোয়ার ভাটা থেকে সরে গেছে চাঁদ
এই সব গেরিলা থেকে নির্জন হয়েছে তর্জনী
সব হাওয়া এখন আর দোষের নয়
সব হাওয়া এখন আর দোষের নয়!
সংস্কার হবে বলে এক ভোট থেকে আরেক পৃথিবী ঘূর্ণন
ঘূর্ণন
পরমান্ন
শুকোয়...
খাবার হাত এঁটো হয় না কতদিন
আমাদের সব জল মঙ্গল গ্রহে ডুবে গেছে
কাদামাটি নিজেই পিঠ দিয়ে ঠেলে ঠেলে পরিষ্কার করছে
মরা ডালপালা
খড়কুটো বলে আর কিছু নেই
শ্রবণ আর শ্রাবণ থেকে বহুদূর নির্জনতা
এই ধাঁধা...
একদিন বাঁশি থেকে বন্দুক হয়ে ওঠে
ঋতু বন্ধ হয় ঋতু বন্ধ হয় ঋতু বন্ধ হয়
কোল্ডস্টোর থেকে ফিরে আসে মুন্ডু কাটা
গুপ্তচর জন্মায় ফুসফুসে
রক্ত অসুখ আমার কান্না অসুখ আমাদের
পৃথিবীর তিনভাগ ভরে উঠবে নিশ্চিত
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন