সমকালীন ছোটগল্প |
সেই পুকুরটা
একটাই ওভার আছে - বাকী ১৫ রান। এই উইকেটের পর একটাই উইকেট বেঙ্গল টাইগ্রেসের হাতে। স্পিনার সুমনা, ওর ব্যাটে কোন মতেই নির্ভর করা যায় না। সোজা উইকেটে বল ফেললেই আউট। পর পর দুবার ফাইনালে উঠে হেরেছে ওরা, এবার ইডেনে - জিততেই হবে। খেলা শুরু হবার আগে মেয়েরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই শপথই নিয়েছে। হায়দ্রাবাদ রয়্যালস্-এর সেরা বোলার সরলার হাতে বল - সরলা রাজু। ৯০ মাইল সর্বনেশে গতি, হাতে অনবদ্য সুইং। ফিল্ডারদের চারপাশে ছড়িয়ে দিয়েছে, উইকেট হোক না হোক - একটা রানও যেন না হয়।
অধিনায়িকা পালী এদিকের উইকেটে
- দীর্ঘাঙ্গী, ফর্সা আর সটান ভঙ্গিমায় বেপরোয়া। ২৮ বলে ৫২ করেছে - এখন সবটুকু মনযোগ
দিয়ে ব্যাট উঁচু করে চারপাশের ফিল্ড সেটিংটা দেখে নিয়ে তৈরি হল বোলারের মুখোমুখি। প্রথম
দুটো বলেই দুটো চার, তৃতীয়টা অবিশ্বাস্য টাইমিংএ মিড উইকেটের ওপর দিয়ে উডে গেল স্টেডিয়ামে।
ইডেন ফেটে পড়ছে এখন - আর দুটো মাত্র রান চাই। বিধ্বংসী বোলার রাজু জমি ছাড়তে রাজী
নয় আর পালীও এতদূরে এসে আরও একবার হারতে তৈরি নয়। অব্যক্ত আশঙ্কা আর উত্তেজনায় গ্যালারি
বেসামাল।
চতুর্থ বল, সরলার লম্বা দৌডের সঙ্গে পায়ের তালে তালে উত্তেজিত দর্শকদের ‘পালী পালী’ চিৎকারটা ধাপে ধাপে ঊর্ধ্বমুখী। অপ্রত্যাশিত সুইং, ব্যাটের কোণা বাঁচিয়ে লাল গোলাটা বেরিয়ে গেল। পালী কি একটু চিন্তিত? পঞ্চম বলটা অসম্ভব ভাল লেংথে। আবার উঠেও পড়েছে বুক বরাবর। নীরবে ৯২ মাইলের হিংস্র ছোবলটাকে মাথা হেলিয়ে ছেড়েই দিতে হল। হেলমেটের ছায়ায় পালীর অভিব্যক্তি বোঝা যাচ্ছে না। একটা মাত্র বল বাকী, দু রান। চিন্তিত পালী ক্রিজ ছেডে এগিয়ে তিতলীকে কিছু বলে এলো। হাতের গ্লাভস্, হেলমেট, প্যাডের বাঁধুনী ঠিক করতে একটু সময় নিল সে - সরলার আগুনে মনোযোগে যদি একটু চিড় ধরানো যায়। ইডেন নি:শ্বাস নিতে ভুলে গেছে, নিশ্চুপ। সরলা রাজু অধৈর্য হয়ে বল এ হাত ও হাত করছে। দূরদর্শনে ক্লোজ্ আপ দেখাচ্ছে - মুখে তার স্পষ্ট বিরক্তির ঝাঁঝ।
দৌড় শুরু করেছে সরলা, বুটের কাঁটাগুলো নিষ্ঠুর আক্রোশে মাটি কামড়াচ্ছে। শেষ বল, শর্টপিচ - উদ্ধতবেগে হেলমেটের দুফুট ওপর দিয়ে উড়ে গেল - ওয়াইড্। কীপার লাফিয়ে উঠে বলটা আয়ত্বে আনার আগেই পালী ছুটেছে স্ট্র্যটেজি মতই, কিন্তু তিতলী তখনও ক্রিজে দাঁডিয়ে ইতঃস্তত করছে। পালী স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে চিৎকার করল ‘রান - তিতলী রান’! কীপার কোনমতে টাল সামলে নিয়ে বলটা অবধারিত ছুঁড়েছে নিজের উইকেটে, কিন্তু ততক্ষণে দেরী করে ফেলেছে তিতলী, দোটানায় পড়ে গতি আনতে পারল না সে। মাঝপথেই লাল বলটাকে উইকেট ভাঙ্গতে দেখল। হতাশ আমি - পালী, ব্যাটটা মাটিতে আছাড় দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে ফোঁপানো ছাড়া কিছুই করতে পারলাম না।
গ্যালারি এখন নিস্তব্ধ শ্মশানপুরী,
একলক্ষ হৃদপিন্ড বরফ শীতল। কাকপাখীরাও কি চিৎকার করতে ভুলে গেল? কলকাতার সব যানবাহনে
রাতারাতি শব্দনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বসানো হয়ে গেল না কি?
কর্তাদের বা টিমের কেউই তেত্রিশ বলে আমার ৬৬ রান নিয়ে কোন উৎসাহ দেখাল না, বাসে হোটেলে ফেরার পথে সবাই যেন অচেনা, জানলার বাইরে চিরচেনা ক্যাসুরিনা সরণীর গাছপালার দেখছে, অন্যরা মোবাইলের আলিঙ্গনে।
পরের দিন হোটেলের ঘরে বিছানায় চায়ের ট্রেতে কাগজে বড় বড় অক্ষরের কালো কালি উপছে পড়ল আমার কলঙ্কের কালিমাতে - “অধিনায়িকা পালী কি সেটিং করেই ম্যাচটা হারালেন? অকারণে তাড়াহুড়ো করে নিজেকে বাঁচিয়ে তিতলিকে বিসর্জন, দরকার ছিল কি? একটা উইকেট তো ছিলই, তাছাড়া ওয়াইডের দৌলতে একটা বল তো বাড়তি পাওয়াই যেত, তবে কেন পার্টনারকে দৌড় করালেন উনি? সেটিংএর টাকাটা পাবার কি এতই তাড়া ছিল?” চোখের ভেতরে গনগনে আগুন, তার ওপর দিয়েই কাগজে সারি সারি কালো পিঁপড়ের মিছিল।
পরের দু’তিন দিন ধরে অবিরাম বিষাক্ত
ছোবল, সব ক’টা কাগজেই পাল্লা দিয়ে অজস্র নিন্দার সমারোহ, ধিক্কার।
ঠিক দশদিনের মাথায় বাবা ডিসিশনটা নিয়ে নিলেন। পরিবারের সম্মান নিয়ে কোন আপস নয়, এই আবহাওয়ায় আমাদের দুজনকেই বড় করেছেন। বাবার পারিবারিক মূল্যবোধে হাতুড়ির ঘা পড়েছে আবার, তাই বালীগঞ্জের সুখের ফ্ল্যাট ছেড়ে আধা শহর ইসলামপুর। সেখানে অনেক জায়গা জমি নিয়ে বাবার পৈতৃক ভিন। আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, পেঁপে, নারকেল আর বট, জামরুলের আদরে ছায়াশীতল পল্লীশ্রী। নির্দোষ হয়েও বাবা পাকেচক্রে জড়িয়ে পড়েছিলেন অফিসের বাজেটের ব্যাপারে। আটমাসে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে সময়ের দু বছর আগেই সি এম ডি’র পদে ইস্তফা দিয়ে মাথা উঁচু করে বেরিয়ে এসেছিলেন - অনেক অনুরোধেও বাবা ফিরে যাননি। ততদিন দিদিকে নাচে গানে আর আমাকে খেলাধূলোর জগতে মোটামুটি উঁচু জায়গায় তুলে দিয়েছিলেন বাবা।
ইসলামপুরে এসে দিদি আর সুবীরদার সম্পর্কটা কাছাকাছি হতে হতে গভীর অন্তরঙ্গতায় পৌঁছেছিল। অমায়িক, স্মার্ট সুপুরুষ, তবলা বাজান অসম্ভব ভালো - ঐ গানের মহড়াতেই আলাপ। যাওয়া আসা বাড়তির দিকেই। বাবাও তেমন কোন বাধা দেননি, ভালই লেগেছিল সুবীরদাকে। ওরা একসঙ্গে জোড়া বেঁধে আসরে যায় আসে, আর একমাসের মধ্যেই সুবীরদা আমাদের ফ্যামিলি ফ্রেন্ড হয়ে গেল। ততদিনে মঞ্চে দুজনের যুগলবন্দীর প্রশংসা ঊর্ধমুখী।
হঠাৎ কিছুদিন ধরেই সুবীরদাকে বেসামাল, রুক্ষ দেখছিলাম। আজকাল দিদিকেও কেমন যেন অচেনা লাগছে। ওর রাতের ঘুম ছন্নছাড়া উড়ো মেঘ।
সন্ধ্যে ডানা মেলে হাল্কা আমেজে নামছে, লাল সূর্য ডুবতে ডুবতে পাহাড়ের মাথায় শেষ নিঃশ্বাস নিচ্ছে। বিকেলে চুল আঁচড়াচ্ছি, দেখলাম দিদি ঝড়ের মত বাড়িতে ঢুকল। অবিন্যস্ত দিদি - কপালে, হাতে, কনুইয়ে রক্তের ছোপ। মোছার চেষ্টা হয়েছে, এলানো আদুরে খোঁপাটা এখন খোলা কোঁকড়া চুলে এবড়ো খেবড়ো ঢল। নীচে তরতরিয়ে নেমে এলাম।
বাবা নিজের পিস্তল, ছুরি, কুকরি সব নিয়ে বসেছিলেন, ঝকঝকেই থাকে এগুলো। বাবার সব সখের জিনিষ, খুব আদরের। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে লাইসেন্স পাওয়া।
“কি হয়েছে রে মামণি - এসব হল কি
করে?”
“কিছু না বাবা , গাড়িতে উঠতে গিয়ে
পা পিছলে এই বিপত্তি!”
“ব্যথা করছে?” এক চোখ বুঁজে ছুরিটা
ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়ন্ত সূর্যের রিফ্লেকশনে ঠিক কতটা চকচক করছে দেখতে দেখতে বললেন, “পালী
মা, যা তো, ডেটল দিয়ে একটু পরিষ্কার করে দে। রাস্তাঘাটের যা ছিরি - জলাতঙ্ক না হয়ে
যা!”
আমার কিন্তু বুঝতে দেরী হয়নি, চোয়ালটা
শক্ত হয়ে উঠছিল দিদির অজান্তে। ওর হাতে চাপটা সত্যিই খুব বেশী হয়ে গিয়েছিল, “উঃ” বলে
ছাড়িয়ে নিল দিদি।
এটাই মনে হয়েছিল আমার - সুবীরদা
সত্যিই মেরেছে ওকে, মাটিতে ফেলে চুলের গোড়া ধরে হাত পা চালিয়েছে। ওর ঐ বারে অনেক টাকা
দেনা হয়ে গেছে, গাড়ির ইনস্টলমেন্ট দেবার টাকাও নেই। দিদিকে ঐ বার-টাতে বলিউড টিউনে তিনটে গানের সঙ্গে মাতালদের
সামনে কুৎসিত ভঙ্গিতে নাচতে বলেছিল। জোর করছিল, যে ট্র্যান্সপারেন্ট লেহেঙ্গা আর চিলতে
চোলিটা এনেছি্ল, সেটাই পরতে হবে। পেছনের দিকটাতে কাপড়ই নেই, বদলে অনেক রেশমি সূতো,
ঝালর, চুমকী লাগানো। আমি রাজী হলে একলাখ টাকা দেবে আর পুরো দেনাও মাফ হয়ে যাবে। কিন্তু
তিনমাসের কন্ট্রাক্ট সাইন করতে হবে।
“বুঝতে পারছিস তো? আমি আউট রাইট
রিজেক্ট করেছি কন্ট্র্যাক্ট, তারই চিহ্ন এসব। বলেছে আজ বাবার কাছে এসে টাকাটা চাইবে,
না দিলে আমাদের কিছু বানানো ছবি মিডিয়াতে ভাইরাল হবে।
আমার কপালের রগদুটো দাপাচ্ছে, মাথার ভেতরে সর্বগ্রাসী আগুন।
নীচে সুবীরদার নেশাগ্রস্ত জড়ানো গলা শোনা যাচ্ছে। হাওয়ায় ভর করে তরতরিয়ে নেমে এলাম। এ কি - বাবা সুবীরদার গলা ধরে ওকে দেওয়ালে ঠেসে, পিস্তলের নলটা সরাসরি ওর পেটে চেপে ধরেছে। সিল্কের বাহারী পাঞ্জাবীর ভাঁজ দেখে বুঝে গেছি ঐ চাপটা কতটা রাগের উত্তাপ।
“মেশোমশাই - ভাল করে শুনুন, ঐ ক্লাবের
মালিক সুশান্ত বলেছে রাত দশটার মধ্যে একলাখ না পেলে আমাকে আজই খুন করবে, বুঝেছেন? যদি
আপনার মেয়ের সম্মান বাঁচাতে চান, তবে টাকাটা ঝেড়ে দিন - সব দিক রক্ষা…”
বাবার অস্পষ্ট কথা শোনা গেল না,
তবে কথার মাঝেই সুবীরদার চাপা গোঙানিতে পালী বুঝতেই পারলাম পিস্তলের চাপটা আরও বাড়িয়েছে বাবা। ছুটে গিয়ে বাবাকে
জোর করে টেনে ছাড়িয়ে আনলাম, বাবাকে আড়াল করেই ফিসফিসিয়ে বললাম,
“সুবীরদা - তুমি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে
যাও, পুকুরটার ধারে দাঁড়াও। আমি এটিএম থেকে টাকাটা তুলে তোমাকে দিচ্ছি। অনেকগুলো টাকা
তো, একটু দেরী হবে কিন্তু!”
ঐ যন্ত্রণার মধ্যেও সুবীরদা মুখে
দুর্বোধ্য হাসি ফুটিয়ে বললো, “যাচ্ছি যাচ্ছি, পালী আমার নেশার শালী - এই না হলে আধি
ঘরওয়ালী?” টলতে টলতে দড়াম করে দরজাটা বন্ধ করে রাস্তায় নামল। বাবা তখন রিভলভারটা হাতে
নিয়েই দুহাত কপালে দিয়ে মেজেতে বসে।
শান্তভাবে বাবার হাত থেকে রিভলভারটা
নিয়ে জায়গায় রেখে ধারালো ঝকঝকে ছুরিটা তুলে নিলাম - প্যাঁচানো আঁচল দিয়ে আড়াল করে।
রাগ, ঘৃণা, প্রতিহিংসা ছাপিয়ে বাবার শেখানো পরিবারের মূল্যবোধটাই মাথায় অপমানের তুবড়ি
জ্বালাচ্ছে।
বেরিয়ে পড়লাম নতুন টেসলা গাড়ি নিয়ে - সাতমিনিট লাগল। রাস্তার ধারে পুকুরের ভাঙ্গা পাড়েই একটা মূর্তির সিলহিউট আবছা আলোয় টলমল করছে বেসামাল। উপুড় করা বোতলটা মুখ থেকে নামিয়ে পায়ের নীচে পুকুরে ছুঁড়ে ফেলল। ও নিজেও পুকুরে পড়ে যাবে না তো? আমাকে এবার গাড়িটা পার্ক করতে হবে। রাগ অপমান আর ঘেন্নার বিষ আমাকে পেঁচিয়ে ধরে কুরে রক্ত ঝরাচ্ছে।
হেডলাইট নেভানো, প্রায় নিঃশব্দে গড়াচ্ছে নতুন গাড়ি টেসলা। ইলেক্ট্রিক চালিত - বাড়তি আওয়াজ নেই। করোনা মাস্কে মুখ ঢাকা থাকলেও হাতের ঝকঝকে কুকরিটা হাতে দেখে দশফুট দূর থেকে বাবাকে চিনতে ভুল হল না। এগিয়ে আসছেন মূর্তিটার দিকেই। অন্ধকারে চোখদুটোয় চিতাবাঘের হিংস্রতা।
চলন্ত গাড়ির স্টিয়ারিং একটু ঘোরাতে পারতাম, শেষমুহূর্তে হয়তো ব্রেকটা ফুটবোর্ডে ঠেসে গাড়ি ডেডস্টপ্ করারও সুযোগ ছিল। কিছুই করলাম না আমি। সামনের ডান চাকাটা বিপজ্জনক ভাবে পুকুরের পাড়ে এসে গেছে। হঠাৎ ঝটকায় বাঁদিকে ঘোরালাম স্টিয়ারিং, শান দেওয়া ছুরিটা ড্যাশবোর্ডের ওপর থেকে আমার পায়ের কাছে পড়ে গেল।
বাবা দরজা খুলেই আমাকে সরিয়ে চালকের
আসনে বসলেন। সোজা ‘সানসেট বার এন্ড রেস্টুরেন্টে’ গেলাম আমরা। বাবা শান্ত নিরুত্তাপ
গলায় বললেন, “গাড়ি কিন্তু তুই চালাসনি পালী, আমি চালিয়েছি, তুই সারা সন্ধ্যে বাড়িতেই
ছিলি, মনে থাকে যেন!”
বার কাউন্টারের পেছনে হাল্কা বেগুনী
আলোছায়ায় সুশান্তর সঙ্গে বাবার কিছু কথা হল। টেবিলে আমার সামনে অ্যাশট্রের পাশেই তখন
একটা ঠান্ডা শ্যান্ডি অবিরাম ফেনা তুলে চলেছে। কথা শেষ করে বাবা এসে কাঁধে হাল্কা চাপড়
দিয়ে বললেন - “চল মা, বাড়ি চল”!
দুদিন পরে একটা দেহ উপুড় হয়ে পুকুরে ভাসছে দেখা গেল। খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের দল এলো, সুবীরদার প্রাণহীন দেহটা তুলল - সারা শরীরে কিন্তু কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। অনেককেই নিয়মমাফিক জিজ্ঞাসাবাদ করলো তারা, সেদিন যারা বারে ছিল তাদেরও। সুশান্তর শাসানি অনেকেই শুনেছিল, তারা সেটা পুলিশকে জানাতে ভোলেনি। প্রশ্নের উত্তরে সবাই এটাও বলেছিল যে, সুশান্ত সেদিন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত রেস্টুরেন্ট ছেড়ে কোথাও বেরোয়নি। বাবাও পুলিশকে একই কথা বললেন। কারো কাছ থেকে কোন সূত্র পাওয়া গেল না।
একমাসের চেষ্টার পর পুলিশ এটাকে
নিছক ‘নেশার ধাক্কায় পুকুরে পড়ে গিয়ে মৃত্যু’ লিখে ফাইল বন্ধ করে দিল ।
সেদিনই সন্ধ্যেবেলায় বাবা আমাদের
সঙ্গে চায়ের টেবিলে বসে বললেন, “পালী, তুই-ই আমাদের পরিবারের মূল্যবোধ আর সম্মান বাঁচাতে
পারবি, বেঁচে থাক্ মা, দীর্ঘজীবি হ’!”
আজও যাওয়া আসার পথে ঐ পুকুরটার দিকে বরাবর আমার চোখদুটো ছুটে যায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন