সোমবার, ১৯ জুন, ২০২৩

শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১২৯


পয়লা মে

 

একলা মে একলা চলে নিম সজিনা পাতের পাশে

রক্তবর্ণ গোলাপ মোহে বিপ্লবী পথ আলোক দেখায়

সোনার রোদ নিভছে তবু গরম হাওয়া উপন্যাসে

চুক্তি জীবন লড়াই করে দিনবদলেও প্রথম হয়!

 

বিরুদ্ধমন হাঁটছে একা দুপুর রোদে ফোসকা পড়ে

ক্লান্ত মনের রাত্রি ফুরোয় ডাক দিয়েছে পয়লা মে

শ্রমজীবী এক কব্জি বেয়ে ক্ষতের বুকে রক্ত ঝরে

ধানের রসে তৃণের ক্ষুধা আগুনঝরা নাবিক সে!

 

সব ইতিহাস লেখা থাকে রক্ত ঘামের চক্রবালে

বিদ্ধ তিরে দীর্ঘশ্বাসে জ্বলছে তাদের মনের চিতা

উদ্বোধনে অস্ত গোনে জলের ছায়া চোখের কোলে

তপ্ত আঁচে কেমন বাঁচে ধরিত্রীর এক বৃদ্ধ পিতা!

 

অবক্ষয়ী যাপন বোনা রিরংসার মতই কঠিন

রক্ত ছেঁকে অসন্তোষেও জীবন গাঁথে জীবন লোভে

চিবুক পোড়ে ত্রস্ত নীড়ে পালটায় না তবুও দিন

উপশম তবু অধরাই থাকে মূর্খের বোনা যত বিক্ষোভে

 

একলা চাঁদের কমা বাড়া অনেক মৃত আঁধার পরে

ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব দ্বিধা বুকপকেটে জমিয়ে সে

শ্রমের শিরায় ব্যথার ফসল তাদের সকল আড়ম্বরে

অনির্বাণ আলোক জ্বালায় একলা হয়েও পয়লা মে!

 

উত্তর দক্ষিণ

 

উত্তরের উল্টোদিক দক্ষিণ

ঠিক পথ নয়

অক্ষরেখার চাপে নীরব বৃষ্টিপাত

ছায়া ও সূর্যের দোলায় দিগন্ত এঁকে দেয়!

তুমি কী সেই পথে যাবে!

যে পথে আগুন স্পর্শ করা হাত

আঁতিপাঁতি খুঁজে ফেরা মরু ফল্গুধারা

মিশে যায় দেবতার পায়ে, সন্ধ্যার আজান

যুদ্ধবিরতি লিখে রাখা আঙিনায়, পথ শান্ত হয়

অভিযান উথলে পড়ে৷ উত্তর দক্ষিণ এপিঠ ওপিঠ

আমি দ্বিধাহীন নির্বাক পোড়া ছাই পৃথিবীর শীত!

 

আচ্ছন্নতা

 

আটপৌরে জীবনে সন্ধ্যের পর ধুলো জমতে থাকে

অন্ধকার বুকিং করে রাখে পরগামী যাত্রাপথ

রোমান অক্ষরে বেনামি অভিজ্ঞতাদের দিনলিপি

সমুদ্রের পার বরাবর শরীর বিছিয়ে শুয়ে থাকে!

 

অদৃশ্য এক ইঙ্গিত

সম্ভাবনা লিখে রাখে আগামির তটে

ক্ষয়ে যায় জীবন, প্রতিদিন

অশান্ত ঊর্মি প্রতিটি রক্তক্ষরণে,

কবিতার পঙক্তিমালা উড়ে যায় সেই চিমনি বেয়ে

 

ঊর্ধ্বে ওই শূন্যতার দিকে

যেটা কিনা আমার, তোমারও শেষ ঠিকানা।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন