বুধবার, ১৭ মে, ২০২৩

শ্রাবণী সিংহ

 

কবিতার কালিমাটি ১২৮


সেলাই

 

ছেঁড়া সব সেলাইয়ের যোগ্য হয় না

ছেঁড়া বোতাম, বুকপকেট তাপ্পি মারা পাগলের জামা

এটুকুই তার দারুণ প্রাপ্তি

কিছুটা সস্তার জামা,গায়ে  সেলাই' শব্দটা আগেই জুড়ে রেখেছে

সুঁই-সুতো আর কতটুকুই বা জুড়বে তার?

 

কত জন্মদিন

সাল পয়লা

ছেঁড়া অংশ লুকিয়ে কেটেছে নতুনের মত

 

কেঁদে ফেলে হাত....

 

স্পর্শের সমগ্র

 

পাহাড়চ্যুত শিলাখন্ডটি স্পর্শ করে না সমুদ্রজল

আর বাতাসকে চুপি চুপি বলে তার দূরে থাকার কৌশল

স্পর্শের সমগ্র নিয়ে এক জাদুঘর খোলা প্রকৃতিতে

শতভঙ্গিতে নিজেকে সাজায়, জীবজগতকেও...

একটা অবহেলিত হাওড়ও নিজেকে সাজায় বিস্মিত পদ্মে!

যেখানে স্পর্শের বাইরে ছুটে যাওয়া অহেতু পর্যটনে

কেবলমাত্র চোখের মরুর বন্দিশ ভাঙতে, ভাঙতে

 

সময়টা বিকেল

 

(১)

 

ধীরে ধীরে নৌকা ও কাঠ... জলে 

ভেসে যাওয়া উজানের ফুল

হাঁড়িতে ভাসিয়ে দেওয়া কন্যাসন্তান, কত স্নেহের নুন

নদীজলে!

 

ভাঁটির কুয়াশায় মিলিয়ে যায় সব।

গৃহস্থের বেপাত্তা হাঁস ফেরে না, হারানো মেষ

তন্নতন্ন করে খুঁজেও…

আয় তু তু’ ডাকের

বিকেল সময়টা

থমকে থাকে বিষাদে!

 

(২)

 

আলো ম্লান, গল্প ম্লান

গোধূলির ভীড়ে... আলোছাটা সূর্যাস্ত

প্রতিদিন ঝড়ের শৈলীতে ভারি তান্ডব নিয়ে আসে,

যাবতীয় অজ্ঞাতবাস উড়িয়ে ফেলেই শান্তি

আমিও ঝুড়ি ভরতে থাকি আহত ফুলে,

 

ছোট-বড় বিস্তর শিল

আঘাতের মত

মধ্যমেয়াদি

 

তর্জমা

 

স্নানে শুচি হবার পর

বেকসুর সন্ধ্যাগুলো শুধুমাত্র নিজস্ব অন্ধকারের নীচে

বাগান কাঠের  চেয়ারে ছড়িয়ে বসা

কিছুটা সুদূর নিয়ে, কিছুটা পরাভবও

দিনের সমস্ত হার মজ্জাহাড় থেকে বেরিয়ে

আকাশগঙ্গায় প্রবাহিত হলে নতুন পদবী গায়ে

মাখি

এই সময়টা অবকাশনামার মত রয়ে যায়

এই সময়টা আমি ঝরাপাতার ভঙ্গিতে

তোমার দিকে ঝরে পড়ি

তুমি কুড়িয়ে নাও নয়তো ফেলে রাখো আমাকে একা একা

চাপ চাপ অন্ধকার

পাথরে লেগে

তর্জমা হতে থাকি বারংবার

 

 


1 টি মন্তব্য: