কালিমাটির ঝুরোগল্প ১১৬ |
কথায় কথকতা
-হ্যালো। কমলাবৌদি?
-হ্যাঁ। কে
বলছেন?
–আরে আমি নীলা
বলছি। কেমন আছো তোমরা?
-ভালো। চমৎকার!
-খুব তো ঘুরছো!
-কোথায় আর গেলাম!
দু বছর ধরে ঘ্যানঘ্যান করে তবে এবার রাজস্থান।
-কেমন লাগলো?
ক’দিনের ট্যুর ছিল?
-যাতায়াত নিয়ে
আঠারো দিন।
-বাব্বা! সে
তো অনেক দিনের ব্যাপার গো!
-এই ক’দিন না
হলে রাজস্থান হয় না রে।
-সব ঘুরেছো?
-সব কি আর হয়।
ঐ ফেমাস জায়গাগুলো ঘুরে নিলাম। তবে মরুভূমির মধ্যে দু রাত্রি যে কি থ্রিলিং, তোকে বোঝাতে
পারবো না।
-ছবিসব দেখবো
কিন্তু। হোয়াটস্ আপে পাঠিয়ে দিও।
-বেশ, দেবো।
তোদের খবর বল্?
- আমাদের আর
খবর! ঐ গয়ংগচ্ছ।
-অমিত কি বাজারে?
-বাজারে! ঐ
যে ভোসভোস করে ঘুমোচ্ছে।
-ছেলে?
-ওকে তো ড্রয়িংস্কুলে
পৌঁছে দিয়ে এসেই তোমাকে ফোন করছি।
-বেশ করেছিস।
আর সব খবর?
-নাঃ। তেমন
কিছু নেই। এবার যা ঠান্ডা পড়েছে না! মনে হচ্ছে, আর কখনো গ্রীষ্ম আসবে না।
_ তা একটু পড়েছে।
ভালোই তো লাগছে। লেখালিখি হচ্ছে তো?
-ওই টুকটাক।
তবে ছড়া-ই বেশি আসছে এখন।
- ভালো তো।
ছড়া-য় বেশ তাহলে এখন ছড়িয়ে আছিস বল্?
-তা আছি। কিন্তু
গল্প লিখতে না পারলে কী যেন করিনি, কী যেন হয়নি, মনে হয়।
-তাই!
-হ্যাঁ। আচ্ছা
বৌদি, আমার ঐ গল্পটার কি হ’ল?
-কোনটা?
-ওই যে তুমি
বললে, বেশ নতুন রকম হয়েছে। যেটা স্বপ্ন-এর বিশেষ সংখ্যার জন্য পাঠিয়েছিলাম! বেরিয়েছে
নতুন সংখ্যাটা?
-সে তো কবেই
বেরিয়েছে!
-সে কি! জানি
না তো!
-ওদের একটা
ফোন করলেই পারতিস।
-হ্যাঁ, তা
হয়তো পারতাম। কিন্তু ওরাও তো জানাতে পারতো।
-কেন!
-বাঃ! সংখ্যাটা
বেরলো, একটা খবর দেবে না!
-সবাইকে জনে
জনে জানাবে! তা হলে তো পত্রিকাই উঠে যাবে। ফেসবুকে তো দিয়েছিল!
-খেয়াল করিনি।
কিন্তু পাঠালো না তো!
- কেন পাঠাবে!
তুই কী এমন হরিদাস!
-আরে হরিদাস
না হলেও হরিদাসী তো বটে!
- তা হলেও ওরা
পারবে না। তোর পত্রিকার ওই সংখ্যাটা পেতে যদি ইচ্ছা থাকে, ওদের কাছে গিয়ে নিয়ে আয়।
তোর বাড়ির কাছেই তো!
-আমি যাব কেন!
আমি জানবও না, যাবোও না। ঐ পত্রিকায় লিখবও না আর।
-তা হলে গোমড়া
মুখে বসে থাক আর অমিতের সঙ্গে চুটিয়ে ঝগড়া কর। লিখবি না তো লিখবি না। কার কি এসে যাবে।
যা একটু নাম-টাম হয়েছিল, দু দিনেই লোকে ভুলে মেরে দেবে। মিটে গেল।
- না মিটবে
না। আমি থাকব। নাই বা লিখলাম গল্প। এবার আমি উপন্যাস লিখব। প্রদীপ, প্রকাশ খুব বলছে।
দেখবে, এই বঙ্গের চিন্তাভাবনাই পালটে দেব। বুঝেছ কিছু?
আর উত্তরের
অপেক্ষা না করে নীলা ঠপাস করে রিসিভারটা নামিয়ে রাখলো।
বাইরেও তখন
উত্তরের হি হি বাতাস।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন