রবিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২২

পৃথা কুণ্ডু

 

শতবর্ষ পেরিয়ে চিদানন্দ দাশগুপ্ত

   


                

সময়টা চল্লিশের দশক কফি হাউসের আড্ডায়সিনেমানিয়ে জোরদার আলোচনা আড্ডার সদস্যরা প্রায় সমবয়সী একজন হাজারিবাগের সেন্ট কলম্বিয়া কলেজে অধ্যাপনা ছেড়ে এসেছেন কলকাতায়, যোগ দিয়েছেন ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিউট- বাকিদের মধ্যে একজন বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত, আর একজন কমার্শিয়াল আর্ট নিয়ে কাজ করেন, কেউ বা করেন স্ক্রিপ্ট লেখালেখি। ইতালির চলচ্চিত্রে ‘নিও রিয়ালিসজম’-এর ধারা মনে দাগ কেটেছে তাঁদের — দেখা হয়ে গেছে ‘বাইসাইকল থিভস’ ছবিটি। মাথায় চেপেছে, আরও ভালো ভালো বিদেশি ছবি দেখতে হবে, দেখাতে হবে বাঙালি নাগরিক মধ্যবিত্ত সমাজকে। বাংলা ছবিতে তখনও দেবকীকুমার বসু, প্রমথেশ বড়ুয়া, দুর্গাদাস, কানন দেবী — এঁদের রাজত্ব চলছে, বেশ কিছু জনপ্রিয় সামাজিক-সাহিত্যনির্ভর বা ভক্তিমূলক ছবিও তৈরি হয়েছে, কিন্তু আন্তর্জাতিক মানের ভাবনাচিন্তা বা কাজ তখনও অধরা। কয়েক বছর ধরেই এই তরুণ চলচ্চিত্রপ্রেমী তিন-চারজনের মাথায় দানা বাঁধছিল, একটা ফিল্ম সোসাইটি গড়ে তোলার কথা। হাজারিবাগের মাস্টারি ছেড়ে এসেছিলেন যে যুবক, তাঁর বাড়ির একটি ঘরেই শুরু হল চলচ্চিত্র সংসদের কাজ — ১৯৪৭ সালের ৫ অক্টোবর সোসাইটিকে একটু ভদ্রস্থ অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য এক সরকারি অফিসে ছোটাছুটি করার করুণ অভিজ্ঞতা শোনালেন তিনি কয়েক বছর পরে  উচ্চপদস্থ, শিক্ষিত যে অফিসারের কাছে তিনি গিয়েছিলেন সাহায্যের আশায়, তিনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারলেন না যে ফিল্ম জিনিসটার সঙ্গে  সাহিত্য বা সংস্কৃতির কোন সম্পর্ক  আছে। ওটা তো নিষ্কর্মাদের সস্তা বিনোদনের উপকরণ মাত্র! এই অভিজ্ঞতার কথা লিখছেন যিনি, তাঁর নাম চিদানন্দ দাশগুপ্ত — ভারতে চলচ্চিত্র-সংস্কৃতি চর্চার অন্যতম পুরোধাফিল্ম সোসাইটি  গড়ার কাজে তাঁর সঙ্গীরা ছিলেন সত্যজিৎ রায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, রাধাপ্রসাদ গুপ্ত প্রমুখ

প্রথমে মাত্র ২৫ জন সদস্য জোগাড় করে এই চলচ্চিত্র সংসদের কাজ শুরু হয়এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন বিনা চাঁদার সদস্য অনেকটা ‘ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো’-র মতই অবস্থা ছিল প্রতিষ্ঠাতা-সদস্যদের নিজেদের পকেট থেকে  খরচ করে ছবির প্রিন্ট আনা, চলচ্চিত্র-বিষয়ক বইপত্র জোগাড় করা এসবই চলল পূর্ণ উদ্যমে। এই সংসদেরই এক সভায় আলাপ হল হরিসাধন দাশগুপ্তের সঙ্গে। আস্তে আস্তে সদস্য সংখ্যা বাড়ল, বালিগঞ্জ এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নেওয়া হল। একদিন সভার মাঝপথে আপত্তি জানালেন বাড়ির মালিক, তাঁর বাড়িতে এসব কাণ্ডকারখানা চলবে না। এভাবেই অনেক বাধা বিপত্তির মধ্য দিয়ে এগিয়েছে কলকাতার ফিল্ম সোসাইটি আন্দোলন


হাজারিবাগের বিশিষ্ট সমাজসেবী ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক মন্মথ দাশগুপ্ত আর শান্তিলতা দেবীর বড় ছেলে চিদানন্দ দাশগুপ্তের জন্ম ১৯২১-এর ২০ নভেম্বর, শিলং-এ। পেশাগত জীবনে শিক্ষকতা আর লেখালেখি ছাড়াও একসময় কাজ করেছেন বিজ্ঞাপন জগতে। ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইন্সটিটিউটে কাজ করার সূত্রে ভারতবিখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে আসার সুযোগও পেয়েছিলেন। পরে কলকাতার সিটি কলেজেও অধ্যাপনা করেছেন। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁর ধ্যানজ্ঞান ছিল চলচ্চিত্র নিয়ে চর্চা ও মননশীল রচনা। বন্ধু সত্যজিৎ রায়, বংশী চন্দ্রগুপ্ত, হরিসাধন দাশগুপ্ত চলে গেলেন সরাসরি চলচ্চিত্র নির্মাণের দুনিয়ায়, কিন্তু চলচ্চিত্র নিয়ে লেখালেখি, চলচ্চিত্র সমালোচনার ভাষা গড়ে দেওয়ার যে কাজ, বিশেষ করে বাংলায় — খ্যাতির আলো থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেও চিদানন্দ সেই কাজ জারি রেখেছেন, একেবারে শেষ বয়সে চরম অসুস্থতার আগে পর্যন্ত। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি প্রতিষ্ঠায় যেমন তিনি সামনের সারিতে ছিলেন, তেমনি আবার পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে ওঠা চলচ্চিত্র সংসদগুলিকে একটি সর্বভারতীয় ছাতার তলায় নিয়ে আসার কাজেও অগ্রণী ভূমিকা ছিল তাঁর। এই উদ্যোগে সামিল হয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়, বিজয়া মুলে, রবার্ট হকিন্স, আম্মু স্বামীনাথন-এর মত আরও কিছু বিশিষ্টজন। ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ ইন ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কলকাতায় চল্লিশের দশকে গড়ে ওঠা চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন এক সর্বভারতীয় রূপ নেয় এর প্রথম কর্মনির্বাহী কমিটিতে সভাপতি ছিলেন সত্যজিৎ রায়, যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন বিজয়া মুলে এবং চিদানন্দ দাশগুপ্ত

 

চলচ্চিত্র নির্মাণেও তিনি হাত দিয়েছিলেন। তথ্যচিত্র ‘পোরট্রেট অব আ সিটি’—শহর কলকাতার জীবন নিয়ে তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বিরজু মহারাজ এবং আনন্দ কুমারস্বামীকে নিয়ে জীবনীমূলক তথ্যচিত্র দুটিও উল্লেখের দাবি রাখে। ‘বিলাত ফেরত’, ‘আমোদিনী’-র মত কাহিনিচিত্রও পরিচালনা করেছেন। তবে চলচ্চিত্র-বিষয়ক লেখক হিসেবেই তাঁর পরিচিতি সবচেয়ে বেশি; প্রয়াণের পর মৃণাল সেন তাঁকে ‘অসামান্য এক লেখক’ বলেই শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন। কন্যা অপর্ণা সেনের কথায়, তাঁর চলচ্চিত্র পরিচালক হয়ে ওঠা বাবারই জন্য।

 

চলচ্চিত্রের বিশ্লেষণাত্মক সমালোচনা ছাড়াও ভারতীয় ও বিশ্ব চলচ্চিত্রের নন্দনতত্ত্বসহ আরো নানা দিক নিয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখে গেছেন চিদানন্দ, যা  নিঃসন্দেহে চলচ্চিত্র-পাঠের ক্ষেত্রে অমূল্য সম্পদ। ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটির কাজ শুরু হবার কয়েক বছরের মধ্যেই কমলকুমার মজুমদার, চিদানন্দ দাশগুপ্ত, সুভাষ সেন,  রাধাপ্রসাদ গুপ্ত, নরেশ গুহ এবং সত্যজিৎ রায় মিলে ‘চলচ্চিত্র’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেন। ১৯৫০ সালে যাত্রা শুরু করা এই সাময়িকীতে ভারতীয় তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের নানা দিক নিয়ে উঁচুমানের লেখা বের হত, যা বাঙলায় চলচ্চিত্র সাহিত্যের একটি বিশিষ্ট ধারা নির্মাণে পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নেয়। এই চলচ্চিত্র পত্রিকার প্রথম পর্যায়ে তাঁর দুটি লেখার কথা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতেই হয়, একটি জাঁ রেনোয়া-র ছবি নিয়ে, অন্যটি ‘নিবারণবাবুর  সমস্যা’নিবারণবাবু নামে এক কাল্পনিক বাঙালি পরিচালক-চরিত্রের দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি তুলে ধরেছেন পঞ্চাশের দশকে বাংলা ছবির নির্মাণ ও প্রযোজনায় অর্থের অভাব, পরিকাঠামোগত সমস্যা ইত্যাদির বাস্তব চিত্র। নিয়মিত লিখতেন ‘চতুরঙ্গ’, ‘পরিচয়’ প্রভৃতি পত্রিকাতেও। ‘টকিং অ্যাবাউট ফিল্মস’ (১৯৮১), ‘সিইং ইজ বিলিভিং’ (১৯৮৫) এবং বাংলায় ‘বই নয়, ছবি’ (১৯৯১) গ্রন্থ তিনটিতে  চলচ্চিত্র নিয়ে তাঁর মননশীল ভাবনার প্রকাশ ঘটেছে বিচিত্র ধারায় সুভো ঠাকুরের সম্পাদনায় প্রকাশিত কলাবিষয়ক পত্রিকা ‘সুন্দরম’-এ বেরিয়েছিল তাঁর বেশ কিছু বাংলায় লেখা শিল্প-সংস্কৃতি-চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রবন্ধ। নিজের লেখা দিয়ে উৎসাহিত করেছেন তরুণ প্রজন্মের চলচ্চিত্র-উৎসাহীদেরওরানা সরকারের সম্পাদনায় ষাট ও সত্তরের দশকে প্রকাশিত ‘আঙ্গিক’(পরে যার নাম হয় আন্তর্জাতিক আঙ্গিক)  পত্রিকাতেও লিখেছিলেন একাধিক মূল্যবান প্রবন্ধ। আর ‘সিনেমা অব সত্যজিৎ রে’ (১৯৮০) বইটি এক কথায় সত্যজিতের ছবির সামাজিক আবেদন ও নন্দনতাত্ত্বিক দিক নিয়ে লেখা অন্যতম সেরা কাজমারি সিটন ও এন্ড্রু রবিনসন  নামের দুই ব্রিটিশ সমালোচক ছাড়া, দেশীয় চিত্রসমালোচকদের মধ্যে চিদানন্দ দাশগুপ্তই বোধহয় সত্যজিতের ছবি নিয়ে এমন বিস্তৃত ও নানামাত্রিক আলোচনায় হাত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সিনেমাজগতের বিখ্যাত পত্রিকা ‘সাইট অ্যান্ড সাউন্ড’-এ দীর্ঘকাল ধরে প্রকাশিত তাঁর চলচ্চিত্রবিষয়ক লেখাগুলোও এখন আর্কাইভাল  সম্পদের মর্যাদা পেয়েছে।

 

চলচ্চিত্র-সংস্কৃতি এবং তার সামাজিক দায় এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল চিদানন্দের কাছে যে, প্রয়োজনে ঘনিষ্ঠ বন্ধু সত্যজিতের বিরুদ্ধ সমালোচনা করতেও ছাড়েননি তিনি ১৯৬৬ সালে ‘সাইট অ্যান্ড সাউণ্ড’-এ প্রকাশিত ‘রে অ্যান্ড টেগোর’ নিবন্ধে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, বাঙালির জীবনে সাম্প্রতিক সংকট, যন্ত্রণার প্রতিফলন সত্যজিতের ছবিতে নেই, তিনি উনিশ শতকের সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলেই নিজের কাজ সীমাবদ্ধ রেখেছেন তখনও পর্যন্ত। এই ধরনের সমালোচনা ভালোভাবে নিতে পারেননি সত্যজিৎ। অন্য একটি প্রবন্ধে চিদানন্দ লিখেছেন, “সত্যজিৎ রায়ের প্রতিভা সারা ভারতের মধ্যবিত্ত মহলে স্বীকৃত হলে কী হবে, তাঁর প্রভাব সেই অনুপাতে নগণ্য। সনাতনী ভারতীয় রীতিতে তাঁকে বেদিতে বসিয়ে নিরানন্দ দূরত্বে রেখে চলচ্চিত্র মহল শ্রদ্ধা জানাল। তাজমহল আর বেনারসের কাপড়ের মতো কলকাতার সত্যজিৎ রায় ভারতের গৌরব হয়ে রইলেন, আর হিন্দি ছবির অচলায়তনও সগৌরবে বিরাজমান রইল।”  অন্যান্য লেখায় তিনিই আবার সত্যজিৎ সম্পর্কে যথেষ্ট ইতিবাচক মতামত রেখেছেন। ‘সমালোচনার দায় ও দায়িত্ব’ নামে অন্য একটি লেখায় তিনি বলেছিলেন, “দুঃখের বিষয় এখনও আমাদের চলচ্চিত্র সমালোচনা সাহিত্য হয় বক্তব্যধর্মী সাহিত্যঘেঁষা পাণ্ডিত্যের আধার, নয় জজিয়তি রায়-প্রবণ, অথবা প্রচার বা অপপ্রচারের হাতিয়ার। চলচ্চিত্রের স্বধর্মে আমাদের শিল্পকর্ম যতটা প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে, আমাদের সমালোচনা ততটা নয়। ফলে শিল্পী ও সমালোচকের সম্পর্ক হয় উত্তমর্ণ-অধমর্ণের, নয় অহি-নকুলের।” সততার সঙ্গে সাংস্কৃতিক বিষয়ের নির্মোহ সমালোচনা মানে কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ বা বিরোধিতা নয় এই সুস্থ রুচির বাহক ছিল তাঁর রচনা, মনন ও ব্যক্তিত্ব।


চলচ্চিত্র-সংক্রান্ত লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক কাজে জড়িয়ে ছিলেন তিনি। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে প্রকাশিত বিরাট ‘ভারতকোষ’ গ্রন্থে চলচ্চিত্র-বিষয়ক টীকা-নির্মাণে তিনি ছিলেন অন্যতম সহায়ক। সাহিত্য-অনুবাদক হিসেবেও তাঁর অবদান উল্লেখের দাবি রাখে। রবীন্দ্র শতবর্ষে তাঁকে দিয়ে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটি কবিতা অনুবাদ করিয়েছিলেন ‘চতুরঙ্গ’ পত্রিকার সম্পাদক হুমায়ুন কবির। জীবনানন্দ দাশ আর মানিক বন্দ্যপাধ্যায়ের লেখা অনুবাদেও তিনি নিজস্বতার ছাপ রেখেছেন। বিশ্বাস করতেন অনুবাদক-সাহিত্যিকের স্বাধীনতায়; তাঁর জীবনানন্দ-অনু্বাদে বুদ্ধদেব বসু তাঁকে না জানিয়ে কলম চালিয়েছিলেন বলে তাঁর সঙ্গে তর্ক করতেও দ্বিধা করেননি চিদানন্দ। জীবনানন্দের পরিবারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বিবাহসূত্রে; স্ত্রী সুপ্রিয়া দেবী ছিলেন জীবনানন্দের দাদা ব্রহ্মানন্দের মেয়ে।

 

চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় নিবেদিতপ্রাণ এই মানুষটি জীবৎকালে ‘ওসিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’(২০০৪)-এ ‘লাইফটাইম অ্যাচিভমেণ্ট অ্যাওয়ার্ড’ ছাড়া তেমন কোন বড় সম্মান পাননি। গত বছর প্রায় নীরবেই পেরিয়ে গেল তাঁর শতবর্ষ। কন্যা অপর্ণা সেনের উদ্যোগে দু-একটি স্মরণ অনুষ্ঠান আর কয়েকজন চলচ্চিত্র-বোদ্ধা ছোটখাটো গণ্ডির মধ্যে সীমিত আলোচনাসভা আয়োজিত হয়েছিল এই মাত্র। এক সময় ‘ফিলিম’ জিনিসটা কী, জীবন আর সমাজের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক, কথাই তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন সাধারণ নাগরিক সমাজকে। আজ দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলচ্চিত্র একটি পাঠ্য বিষয়, তাঁর লেখা নিয়ে চলচ্চিত্রের কিছু নিবিষ্ট পাঠক চর্চা করে থাকেন, পরবর্তীকালের নামী চলচ্চিত্র সমালোচকদের মধ্যে অনেকেই তাঁর লেখা পড়ে, তাঁর আলোচনাপদ্ধতির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন নানাভাবে। সোমেশ্বর ভৌমিক, শুভ্রা গুপ্তা প্রমুখ বিশিষ্ট সমালোচক উত্তরপ্রজন্মের দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁকে ভারতীয় চলচ্চিত্র সমালোচনার অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে মেনে নেন -- হয়ত এটুকুই তাঁর অমূল্য কাজের স্বীকৃতি!


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন