প্রতিবেশী সাহিত্য
রাইনার মারিয়া রিলকে-র কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি :
রাইনার মারিয়া রিলকে একজন অস্ট্রিয়ান কবি। জন্ম : ৪ ডিসেম্বর
১৮৭৫ – মৃত্যু : ১৯ ডিসেম্বর ১৯২৬। তিনি জার্মান ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য বিখ্যাত। কবিতার সাথে সাথে তিনি
ছন্দময় গদ্যও লিখেছেন। সমালোচকরা তাঁর লেখাকে মিস্টিকাল বলে অভিহিত করেছেন। ব্লাড ক্যান্সার
তাঁর জীবন কেড়ে নেয়। তাঁর কবিতার বিষণ্ণতা, রহস্যময়তা ও গভীরতা মনকে বিশেষভাবে স্পর্শ
করে।
Loneliness (নিঃসঙ্গতা)
বিচ্ছিন্ন ও একাকী বৃষ্টি ফোঁটাগুলো
সমুদ্রের সমতল থেকে প্রায়শই
গোধূলির আলোক বেলায়, একান্তে
চড়াই উত্তোলিত হ'তে হ'তে
ওদের পুরনো বাসভূমি স্বর্গে পৌঁছে যায়।
যখনই ওরা স্বর্গ ছেড়ে আসে
নগরে নগরে বৃষ্টির অলৌকিক ফোঁটা ফেলে!
এক নাগাড়ে খানিকক্ষণ বৃষ্টির নূপুর বাজে
যখন শূন্য সড়ক ঊষালগ্নের পথ চেয়ে থাকে।
এবং তখন দুটো শরীর...
যারা কিছুই পায়নি, নিরাশায়, হতাশায়
পথ চলে... যখন একের অপরের প্রতি
বিরক্তিতে মন ভরে থাকে অথচ
এক বিছানায় শুতে হয়!
তখনই, ঠিক তখনই
নদী নিঃসঙ্গ বোধ করে!
Put out my eyes (আমার প্রতিধ্বনি)
আমার চোখ বের করে নাও
তবুও তোমাকে দেখতে পাবো।
আমার কান বন্ধ করে দাও
তবুও তোমার কথা শুনতে পাবো।
পা ছাড়াও তোমার কাছে পৌঁছাবো
জিভ ছাড়াও কথা বলবো...
টেলিপ্যাথিতে! মনের শক্তিতে
যুক্ত হবো তোমার সাথে।
ভেঙ্গে দাও আমার হাত তবু্ও
তোমাকে আলিঙ্গন করবো হৃদয় দিয়ে
আবদ্ধ করে রাখো যদি হৃদয়
মস্তিষ্ক সত্য প্রতিধ্বনিত করবে!
মস্তিষ্কে যদি আগুন লাগাও তবুও
আমার রক্তবাহী শিরা উপশিরায়
তোমাকে বহন করে চলবো!
A walk (পথচলা যাত্রী)
আমার চোখে এখন সূর্যালোকিত
পর্বতশৃঙ্গ। শুরু করা রাস্তা থেকে
আরও বহুদূর যেতে হবে
আমরা অধিকৃত হয়ে যাই সেখানেই,
যা অধিকার করা যায় না।
এর ভেতর এক অদ্ভুত জ্যোতি রয়েছে
যা অনুভবে থাকে!
পৌঁছতে না পারলেও আমাদের
পরিবর্তিত করে এক অন্য জগতে
যা চিন্তায় কদাচিৎ আসে!
আমরা ইতিমধ্যেই সেখানে আছি
এক অতর্কিত চিন্তার ঢেউ
আমাদের নিজস্বতাকে উত্তর দিয়ে যায়।
শুধুমাত্র স্নিগ্ধ বাতাস
অনুভব করে মুখমণ্ডল!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন