ধারাবাহিক উপন্যাস
হে নেপথ্যচারিণী
(৪)
ভ্রান্তিদর্শন
অত্রিকে
আমরা নিয়ে এলাম আমাদের ঘরে। সমস্ত রাস্তায় তার চোখের পাতা কাঁপছিল তিরতির করে। এমন
নিশ্চুপ নিদ্রাচারণের কথা এর আগে কখনও চাক্ষুষ করিনি। কেবল গল্প উপন্যাসে পড়েছিলাম।
ঘরে ঢুকে রিক্লাইনিং চেয়ারের ওপর শুয়ে আশুদা
ঘরের সমস্ত আলো নিভিয়ে কেবল রঙগোলকের আলোটি জ্বালিয়ে ধীরে ধীরে ডিমারের সাহায্যে তার তীব্রতা
কমিয়ে আনল। তারপর অত্রি ভ্রুমধ্যস্থল তর্জনী দিয়ে স্পর্শ করে অত্রিকে ঘুম পাড়িয়ে দিল।
গভীর
রাতে নিস্তব্ধে একা একটি অসহায় যুবক তার স্বপ্নসায়রে হেঁটে চলেছে। মাঝেমাঝে তার চোখের
কোণায় এক নীলাভ আভা ফুটে উঠছে। তার ভিতরের যন্ত্রণা ফুটে উঠছে ঠোঁটের অস্পষ্ট আচরণে।
সেই অস্পষ্ট শব্দ, বাক্যবন্ধ, মণিরত্নর মতো নিজের নোটখাতায় তুলে নিচ্ছিল আশুদা। আমি
নীরবে সেই প্রক্রিয়া অনুশীলন করে চলেছি। অত্রি বলছিল, "তির। রাজার পিঠে তির!"
তার পরেই সে ছটফট করতে শুরু করল। "আমাকে ছেড়ে দাও। আমাকে ছেড়ে দাও বলছি।"
ভাঙাভাঙা ভেসে আসছিল শব্দ। "মোম। মোমের হাতি। হাতির শিকল।" আশুদা গম্ভীর
ভৌতিক গলায় মাঝেমাঝে হিপনোটিক সাজেশন ছুঁড়ে দিচ্ছিল।
-কোথায়
আছো তুমি অত্রি?
-গাছ।
গাছের সারি। অন্ধকার গুহাপথ। তার ওইপাড়ে ও দাঁড়িয়ে।
-কে
ও? দেখো অত্রি।
-ঝরণা।
জল নেমে আসছে। ধাপে ধাপে।
-কোথায়
অত্রি?
-ওর
চুলের ভিতরে।
-কে
ও?
-বুঝতে
পাচ্ছি না। ওর মুখ দেখতে পাচ্ছি না। শুধু বুঝতে পাচ্ছি ও আমার জন্যই অপেক্ষা করছে।
আর...
-আর?
-আর
ও নগ্ন। সম্পূর্ণ নগ্ন। এখুনি স্নান সেরেছে।
-কে
ও? দেখতে চেষ্টা করো অত্রি।
-মুখ
অন্ধকারে ঢাকা। গরাদের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে।
-গরাদ?
-ঘন্টা
বাজছে। দুপুরের খাবার দেবে এইবার। ও কোথায় গেল?
-কে?
-ওকে
দেখতে পাচ্ছি। পাঁচশো চুয়াত্তর নম্বর সেল।
-মুখ
দেখতে পাচ্ছো ওর?
-নাহ।
অন্ধকারে ঢাকা।
বলতে
বলতেই বিড়বিড় করতে করতে অত্রি এইবার গভীর ঘুমের ভিতরে তলিয়ে গেল। আশুদা আর ওকে বিরক্ত
করল না। কালার স্ফিয়ারের ভেতরের আলোটা পুরোপুরি নিভিয়ে বারান্দায় এসে গম্ভীর হয়ে বসে
পড়ল। আমি হতভম্ব হয়ে তাকে অনুসরণ করলাম।
-কী
বুঝলে আশুদা?
-অনেকগুলো
ক্লু দিয়েছে অত্রি। এখন দেখতে হবে আমরা সেগুলো ক্র্যাক করতে পারি কিনা।
-কে
হতে পারে মেয়েটা?
আশুদা
জনহীন রাস্তার শূন্যতা নিজের চোখের তারায় নামিয়ে আনল যেন। তারপর আপনমনে গোবিন্দদাসের
বৈষ্ণব পদাবলির পদ বলতে শুরু করল।
"মাধব
কি কহব দৈব বিপাক। / পথ আগমণ কথা কত না কহিব হে। / যদি হয় মুখ লাখে লাখ। ধ্রু।"
-এ
তো অভিসারের পদ। ধানশী।
-ঠিক।
শুয়ে পড়। আমাদের অত্রির শৈশব কৈশোরের উপর হোমওয়ার্ক করতে হবে। দরকার হলে ওর চালতাবাগানের
বাড়িতেও যেতে হবে একবার। কাল সকালে উঠে অত্রি আজ রাতের কথা কিছুই মনে থাকার কথা নয়।
তুইও কোনও লিড দিবি না। কীভাবে এখানে এল ও, জিজ্ঞাসা করলে বলিস গতকাল ও হাসপাতাল থেকে সরাসরিই তোর কাছে চলে এসেছিল।
দরশনের
আশ মিটল কৈ! অত্রি যেন সেই মুরলিধ্বনির মূর্চ্ছনা এনে দিল। অথচ সেই স্বর অনুসরণ করে
বনমধ্য অনেক খুঁজেও বংশীধারিণী কুহুযামিনীকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না আমি। পন্থক দুখ তৃণহুঁ
করি না গণলুঁ...
পরদিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বসবার ঘরে কাঁচের টেবিলে বসে অত্রি আর আশুদা দাবা খেলছে। অত্রির
চোখে মুখে আগের দিনের যন্ত্রণা তন্দ্রাচ্ছন্নতার বিন্দুমাত্র প্রভাব নেই। তবে কী বিস্মৃতি?
গতকাল রাতে হিপনোসিস কী তবে তার মনের অতল জল থেকে তুলে আনা মণিমানিক্য? আমাকে দেখে
আশুদা বলল।
-আসুন
আসুন অর্কবাবু। সুপ্রভাত।
-তোমরা
উঠে পড়েছ সকাল সকাল আর আমাকে ডাকলে না?
-ডাকবার
ফুসরত পেলে তবে না? আমি সারারাত ম্যাক্সওয়েল ডিস্ক নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে চালাতে
দেখলাম কখন ভোর হয়ে গেছে। তোর এই কনিষ্ঠ সহকর্মীটি বেমালুম ভুলেই গেছে যে সে গতকাল
আমাদের সাথেই এখানে ছিল।
আশুদার
কথায় ইঙ্গিত ছিল। সেটুকু ধরে ফেলা কঠিন হল না। গতকালের ঘটনার কথা অত্রিকে বলা যাবে
না। তাই নীরবে মেনে নিলাম। এবার অত্রি বলল-
-স্যার।
আমার ফোনটাতে গতকাল চার্জ দিতে ভুলে গেছি। বাড়িতে সুচন্দ্রা একা আছে। কী করছে একলা
কে জানে। সকালে ফোন অন করে ওকে ফোন করতে গিয়ে 'স্যুইচ অফ' পেলাম। একবার আপনার ফোনে
দেখবেন কোনও মিসড কল বা মেসেজ পাঠিয়েছে কিনা?
অত্রির
কথায় সম্বিত ফিরে পেলাম। সত্যিই তো। একথাটা ভাবা উচিত ছিল আমার। ফোন অন করে দেখলাম
সত্যিই মাঝরাতে একটা পঁয়ত্রিশে দুটো মিসড কল। তারপর একটা ছোট্ট মেসেজ।' দাদা। খুব বিপদ।
অত্রিকে খুঁজে পাচ্ছি না। প্লিজ হেল্প'। পাল্টা ফোন করে যথারীতি স্যুইচ অফ পাওয়া গেল
ফোন। তাহলে? আশুদা এইসব দেখে সামান্য গুছিয়ে নিয়ে বলল, "আমাদের কাল সন্ধ্যাবেলাতেই
বলে দেওয়া উচিত ছিল মেয়েটাকে। না হলে খামোখা এই অশান্তি ঘটত না। চল। গাড়ি বের কর।"
এফ
ফাইভ চতুর্থ খোপে অত্রির মন্ত্রী অরক্ষিত রয়ে গেল। বিপরীতে আশুদার গজ অত্রির কেল্লা
ভেদ করবার সুকৌশলে স্তব্ধ রইল। একদিকে নিখুঁত অ্যালেখাইন সংরক্ষণ আর অন্যদিকে তেজস্ক্রিয়
সিসিলিয় আক্রমণ। এই রণমুহূর্তকে স্তব্ধ রেখে আমরা সকলে উঠে পড়লাম।
চালতাবাগানের
পড়ন্ত বনেদি এক সুপ্রাচীন বাড়ির সামনে আমাদের নিয়ে এল অত্রি। থামের উপর প্রাচীন শ্বেতপাথরে
লেখা 'ডঃ এস আর পালচৌধুরী'। গভরমেন্ট অব ইণ্ডিয়া। কলকাতার বুকে এত প্রাচীন স্থাপত্য
আধুনিকতার জোয়ারে আজকাল বড় একটা দেখা যায় না। বাড়ির একপাশে দাওয়ায় কম্বল মুড়ি দিকে
একটি ভবঘুরে ঘুমিয়ে আছে। আমরা সদর দরজার দিকে এগিয়ে বেল দিতে গিয়ে আবিষ্কার করলাম দরজাটি
খোলা। তবে কি কোনও বিপদ ঘটে গেল? তড়িঘড়ি ভিতরে ঢুকে পড়লাম আমরা। চৌকাঠ পেরিয়ে ছোট একটা
সিঁড়িঘর। তার একপাশে কাঠের সিঁড়ি উঠে যাচ্ছে উপরে দোতলায়। সিঁড়িঘরের অপরদিকের কাঠের
দরজাটি খোলা। সেখানে দেখা যাচ্ছে লোহার সরু সরু স্তম্ভে ঘেরা এক ভিতরদালান। তার চারপাশে
অনেকগুলো ঘর। সবকটি দরজাই বন্ধ।
-ওপরে
চলুন।
বলেই
অত্রি তড়িঘড়ি সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে গেল। পিছন পিছন আমরাও চললাম। দোতলায় অপেক্ষাকৃত হাওয়া-বাতাস
অনেক বেশি। ঠিক যেমন আমার সাদার্ন অ্যাভিন্যিউর
বাড়িতে দাবার বোর্ডে সময় স্তব্ধ হয়ে আছে, অত্রির এই বাড়িতে ঢুকলে মনে হবে ঠিক সেই ভাবেই
যেন কলকাতা কোনও সত্তর আশি দশকে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। বেশ উৎকণ্ঠা নিয়ে দোতলায় উঠেই বিস্ময়ে
স্তব্ধ হয়ে গেলাম আমি। সিঁড়িঘরের বিপরীতে দোতলার ভিতর দালানের বামপাশের বড় ঘরটি বোধহয়
অত্রিদের লিংরুম। সেখানে কালো কাপড় পরে চোখ বন্ধ করে একটি আসনের উপর বসে আছে সুচন্দ্রা।
ঘর ধোঁয়ায় ভর্তি। বিপরীতে পিছন থেকে দেখেও মানুষটিকে চিনতে ভুল হল না আমার! মনসুর গাজি।
এই দুজনের ঠিক মধ্যিখানে একটি সাদা পুতুল মাটির উপর উলম্ব দাঁড়িয়ে আছে। এই পুতুলটিকে
আমি দেখেছি আগেই। আমার কলেজের বসার ঘরে। ওর নাম রেশমি।
-সুচন্দ্রা?
চোখ খোলো। ফোন স্যুইচ অফ রেখেছ কেন? কে আপনি?
অত্রির
চিৎকারে এবার সুচন্দ্রা চোখ খোলে। তার চোখদুটো ঘন লাল জবাফুলের মতো লাল। সে প্রথমে
এক অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে রইল অত্রির দিকে। তার চেতনা হারিয়ে আসনের উপরেই অজ্ঞান হয়ে
'ধপ' করে পড়ে গেল। মনসুর তার পুতুলটা হাতে নিয়ে এইবার আমাদের দিকে ঘুরে হাসতে লাগল।
-এই
তো। আপনি চলে এসেছেন।
-আপনি
এখানে কী করছেন? কে ডাকল আপনাকে? বলুন। না হলে পুলিশ ডাকব।
মনসুর
পান চেবাতে চেবাতে বলল, "তা ডাকুন জি। লেকিন লাভ হবে না। আপনার বিবি আমাকে এখানে
ডেকে পাঠিয়েছে। আমার কাছে সবুত আছে।"
বলেই
মনসুর উঠে পড়ল। আমি উত্তেজনা ঢেকে রাখতে পারলাম না আর।
-কী
করেছেন ওকে?
মনসুর
রহস্যময় হেসে বলল, "ডাক্তারবাবু। আপনার বিজ্ঞানের লোক। বিজ্ঞানের সঙ্গে কী আমাদের
জিনপরি লড়তে পারে? তবে এটুকু বলছি। আমি উনাকে কিছুই করিনি। জল ছিটান। হোঁস চলে আসবে।"
বলেই
মনসুর বেরিয়ে গেল ঘর থেকে। যাবার আগে সে একবার আশুদাকেও দেখতে ভুলল না। একঝলক দৃষ্টিবিনিময়
করেই যেন উবে গেল সে। সুচন্দ্রার ওপর ততক্ষণে জলের ছিটে দিয়েছে অত্রি। ধীরে ধীরে চোখ
মেলছিল সুচন্দ্রা। আমি আর আশুদা নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম সেখানে। অত্রি বারবার
তার স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল। সুচন্দ্রা যেন বিড়বিড় করে বলছিল কিছু।
-তুমি
এসেছো? কোথায় চলে গিয়েছিলে?
অত্রি
প্রশ্নর উত্তর খোঁজে। কিছুক্ষণের এই দোলাচল সাক্ষী রেখে আমি আর আশুদা ভিতরমহলের খোলা
দালানে চলে এলাম। এখান থেকে কলকাতার বুকে একচিলতে আকাশ সরাসরি দেখা যায়। এখনও সেখানে
প্রোমোটার ভাগ বসাতে পারেনি।
-লোকটাকে
দেখলে আশুদা? এই লোকটাই।
-দেখলাম।
লোকটা আমাকে কিছু একটা বলতে চায়। মনে হল।
-তাহলে?
-খনন
করতে হবে। ব্যবচ্ছেদ। মনের ব্যবচ্ছেদ। এখন এই দুই নাবালক নাবালিকাকে নিয়ে বড় চিন্তা
হচ্ছে রে। প্রথমে যত সরল ভেবেছিলাম এই রহস্য এখন দেখছি অতটা সরল নয় এই অভিনিবেশ।
বেশ
খানিকক্ষণ এইভাবেই কেটে গেল। আমি আর আশুদা দুজনেই এই নবদম্পতির কথা ভেবে নিজেদের দৈনিক
শ্যিডিউল পাল্টে ফেললাম। আমি ফোনে কলেজকে জানালাম আমার সম্ভাব্য অনুপস্থিতির কথা। সাময়িক
সমস্যা হবে। কিন্তু সামলে নেবে বিভাগের অন্যান্যরা। এক পারিবারিক বন্ধনে যেন জড়িয়ে
গিয়েছি অত্রি আর সুচন্দ্রার সঙ্গে। এতটুকু বন্ধন আমার উত্তরবঙ্গর বাবা মা ভাইয়ের সঙ্গেও যেন আর নেই। আশুদাও ব্যস্ত ছিল
ফোনে। আমি দূর থেকেও বুঝতে পারছিলাম ফোনের ওপারে কে আছে। সর্বানন্দ ঝা। এখন সে জাঁদরেল
সিবিআই অফিসার। কোথায় আছে এখন কে জানে? শেষ দেখা হয়েছিল ওড়িশা থেকে ফেরার পথে। ঝা-জির
নতুন গাড়ি চেপে ফিরেছিলাম আমরা। আমাদের ফোনালাপ
সারবার পর হঠাৎ আবিষ্কার করলাম। মেঘ কেটে গেছে। সুচন্দ্রা আর অত্রি যেন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
সুচন্দ্রা বলল-
-আপনাদের
অনেক কষ্ট দিলাম। তবে এসেই যখন পড়েছেন আজ আমাদের এখানে খেয়ে বিশ্রাম করে যান। অত্রিও
ছুটি নিচ্ছে। আমার স্কুল থেকে একটা জয়েনিং লেটার এসেছে। আজ যাব না। কাল যাব। আপনাদের
অনেক কথা বলার আছে আমাদের দুজনেরই।
মেঘ
কেটে গেলে আকাশ পরিষ্কার হলে মাটির বুকের ভিতর আগলে রাখা জল কখন বাড়ির উঠোন ভিজিয়ে
দিয়ে যায় জানাই যায় না। আশুদা শুধু বলল-
-বেশ।
তবে তার আগে একবার ঘন্টা খানেক আমরা জরুরি কাজ সেরে আসছি। ফিরে এসে তোমাদের সব কথা
শুনব।
-কী
খাবেন বলুন দাদা? অত্রিকে বলছি। ইলিশে আপত্তি নেই তো? সামনেই মানিকতলা বাজার।
আমরা
সম্মতি জানিয়ে বেরিয়ে এলাম। খুব আকস্মিকভাবে বদলে যাওয়া মুহূর্তগুলো আমাকে যেন বারবার ধন্দে ফেলে দিচ্ছিল।
ঘন্টাখানেক কী জরুরি কাজের দোহাই দিয়ে আশুদা বের হল কে জানে। গাড়িতে স্টার্ট দিতেই
আশুদা বলল-
-লালবাজার
চল।
-ঝা-জি
কী বলল?
-ও
কলকাতা আসছে সামনের সপ্তাহে। ফোনে হেডকোয়ার্টারকে বলে দিয়েছে। কাজ হয়ে যাবে।
-কী
কাজ? মনসুর গাজি?
-না।
আমাদের এই নেপথ্যচারিণী অন্বেষণে মনসুর শুধুই একটা ক্রিপ্টোবিম। ছোট আলো যে অন্যান্য
আলোর বিভায় মিশে রয়েছে।
-তাহলে?
-ষোলো
বছর আগে কলকাতার শম্ভুবাবু লেনে বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের অধ্যাপক অলোককৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের
স্ত্রী শকুন্তলা মুখোপাধ্যায়ের গণধর্ষণ ও খুনের কেসফাইলটা একবার দেখতে হবে আমাদের।
এই সুচন্দ্রা যদি সেই অলোককৃষ্ণর কন্যা হয়ে থাকে, তাহলে ব্যাপারটা খুব ডেলিকেট। অন্যভাবে
ডিল করতে হবে।
-বুঝলাম।
-কী
বুঝলি?
-এটাই
যে তুমি মোটামুটি নিশ্চিত এই সুচন্দ্রাই সেই অষ্টমবর্ষীয়া বালিকাটি, যার সামনে ওই বেদনাদায়ক ঘটনাটি ঘটেছিল। এখন তুমি অত্রি
আর ওর কথোপকথনের আগে হোমওয়ার্ক সেরে রাখবে।
-হোমওয়ার্ক
নয় অর্ক। ওটা স্কুলের বাচ্চারা করে। আমরা যেটা করতে চলেছি, তার নাম 'ডিসেকশন'। এখন
চল।
(ক্রমশ)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন