কবিতার কালিমাটি ১১৭ |
বোশেখি
(১)
আজ বৈশাখপাতায়
এক প্রকান্ড নীল তিমি। শিলাবৃষ্টির হাল্কা মীড়
ওর নাক হয়ে
কুয়াশার ফোয়ারা। তুমি ভেবেছ জুলফির ধার দিয়ে
মুক্তোদানা
ঘাম গড়িয়ে পড়বে, আমি তখন পাহাড় ছুঁয়ে কুয়াশা ছুঁয়ে
তিমি ছুঁয়ে
সকালে আড়মোড়ায় দেখছি বৈশাখ কখন আমার বাগানে
রবিস্বপ্নের
ফরেস্টার হয়ে গেছে।
(২)
তোমার ডাকবাংলো
আজো যেন পান্ডুলিপি হয়ে পড়ে আছে। আমি
রোজ ধূলো ঝেড়ে
লালচে পাতায় জুবুথুবু, ভাবি ওকে ফায়ারপ্লেসের
পাশে একটু শুকিয়ে
নিই। কেউ ডাকে না, তবু কবে ডাকবে আশায়
আবার এক বৈশাখ।
যে বলে চিলাপাতা, যে বলে সূর্য ডুবলে রাস্তা
হারিয়ে যায়,
তাদের সবার ওপর আজ মাঝরাতের নিসর্গঢাকা ঝড়ে
আমার কাচমাখা
দুয়ার ভাঙছে। বাজের নিচে ডাকবাংলোর জলছাপ,
আর দিনের নামে
আশৈশব বড় হয়ে ওঠা একটা সংখ্যা – পঁচিশ।
(৩)
রাস্তার ওপাড়
দিয়ে তোমায় হাঁটতে দেখেছি। কেউ ডেকেছিল,
সাড়া দাওনি।
আনমনা নও, সংশয়ের পাতাগুলো একে একে
পকেটে কুড়িয়ে
রেখেছ, তবু এপ্রিলপাতায় আজো ঠাকুরের গন্ধ।
জানি চাঁদ হয়ে
পাহাড়ের দিকেও তুমিহীন আবর্জনা জমে গেছে
শুধু তীক্ষ্ণ
চিৎকার, রাতচেরা শাটার, পোড়া নানুর উন্নাও বগটুই
অথবা মর্টার
রক্তমাখা হেলেনা রাশিয়া-ইউক্রেন আর লম্বা লাইন।
কে হাজিরা নেয়?
লাইনে কজন কৃষক, শিক্ষক, শ্রমিক আর লাশ?
তবু প্রতি পঁচিশের
ধূপধুনো। তুমি না শুনেই নিষেধের চুপস্রোতে।
ডাকছি। এ ডাক।
আসবে না জেনেও। শুনবে না জেনেও। জানি,
সবার ড্রয়িংরুমে
এখন তুমি শুধু খাঁচাবন্দী জংবন্দী ছবি ঠাকুর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন