প্রতিবেশী সাহিত্য
রঞ্জিত বার্মা’র কবিতা
(অনুবাদ : মিতা দাশ)
কবি
পরিচিতিঃ কবি রঞ্জিত বার্মা ২১ আগস্ট ১৯৫৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন বিহারের
পাটনায়। কবি, এক্টিভিস্ট এবং সম্পাদক। তাঁর রচনার মধ্যে ‘পীছে ন ছোড়তে নিশান’, ‘এক
চুপ কে সাথ’, ‘বলাৎকার ওর কানুন’, ‘কানুন’ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
হত্যাকারী হাসছিলো
একটি জীবিত মানুষ পথহারা
একটি জীবিত শহরের খোঁজে
খুঁজতে খুঁজতে হয়ে যায় মৃত
টেলিভিশানে একটি মৃত চিৎকার করে প্রশ্ন করছে
যার জবাব ও চিৎকার করে দিচ্ছে
আরেক মৃত মানুষ টেলিভিশানে
মৃত স্বপ্ন নিয়ে
কোটি কোটি মানুষ বেরিয়ে পড়েছে
ওরা যে জায়গা থেকে আসছে
সেই জায়গাটা আগেই মৃত ছিল
আর ওরা এখন যেখানে যাচ্ছে ওটা
মৃতদের বস্তি বলে অনেক দিন আগে
ঘোষণা করা হয়েছে
গণতন্ত্র আগেই মৃত হয়েছে
সংসদও মৃত
আদালতও মৃত
তর্কও মৃত
বিচার যাও হত
সংবিধানের নামে
মৃত বইয়ের সূচিপত্রের
সবচেয়ে উপরে থাকতো
মরে যাওয়া লোকেরা দেখেছে
লোকেদের মৃত্যু
প্ল্যাটফর্মে
রাস্তায়
প্রস্রাবঘরে
আর ওদের এইভাবে মৃত্যতে
ওরা গাল-মন্দও করেছে
হত্যাকারী হাসছিলো
জীবন মৃত্যু থেকেও
বেশি কালো হয়ে উঠেছিল।
নারী
(১)
নারীরা গান গাইলো
আর কুয়ো থেকে জল ভরে আনলো
ক্ষেত থেকে কেটে আনলো ফসল
মেরামন্ত করে ফেলল সব বাড়ির সব পুরনো কাপড়-চোপড়
নারীরা গান গাইলো
আর রঙিয়ে তুললো সব উৎসব
ফুলের মত হালকা করে তুললো বাড়ি
সাজিয়ে দিলো বরকে চন্দন ও কাজল দিয়ে
নারীরা গাইবে যখন বর ফিরে যাবে
নিজের বৌকে নিয়ে
যখন ঋতু বদলাবে
নতুন নতুন ফুলের দিনগুলিতে
যখন হঠাৎ উদাস হয়ে উঠবে মন
কোন বিকেলে
নারীরা গান গেয়ে একদিন
পার করে নেবে চুপচাপ
গর্ভধারণের সেই ন’মাস
পার হবে বরফের মত সাদা রাত গরমের মাসের মত
নারীরা বের করে নিয়ে যেতে পারে
পৃথিবীকে
সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার, নির্বিঘ্নে
শেষক্ষণেও।
(২)
নারীরা
নূনের মত মিশে যায়
আমাদের জীবনে
ওরা ভরে যায় আমাদের উদ্দেশ্যে
লোহা কুচি (গুড়ো ) হয়ে
অগাধ সমুদ্রে ওঠে আসে
কোনো বড় পাথরের মত
আমাদের আরামের জন্য জায়গা ও করে দেয়
ওরা কখনো পাল্টে ভাবেও না
নিজেদের নামহীন রয়ে যাওয়া
জীবনের কথা।
(৩)
নারীরা দাঁড়াচ্ছে
চিৎকার করে পর্দা সরিয়ে
বাইরে বেরিয়েছে
তর্কে মেতেছে
আগামী দিনে নিজের ভূমিকার জন্যে
আমার ও চিত্রকর বন্ধু
তুমি যখন নারীর ছবি আঁকবে
নারীর মুখের টান টান রগগুলি
নিশ্চয়ই ফুটিয়ে তুলবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন