শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

প্রতিমা নাগ

 

কবিতার কালিমাটি ১১৭


চারাগাছ

 

অপুষ্ট শিকড় নিয়ে আর কত বড়ো হতে পারো?

পথ নয় বিপথেও, সঠিক পথের সন্ধানে আজও পথ চলো

মাথার ওপর সূর্য, সে তো নয় স্নেহময়

বাতাসেরা সময় অসময় চোখ রাঙায়

সমূলে নষ্ট করবার হুমকিতে ভীত ক্ষুদ্র প্রাণ

রুক্ষ এ ধরিত্রীতে তবু অক্লান্ত অদম্য জীজীবিষা নিয়ে

তুমি আজও বেঁচে আছো

বুকে নিয়ে আত্ম-অভিমান।

তোমাকে আশীষ জানিয়েছে

বহুদূর থেকে নীল নক্ষত্রেরা

তোমাকে সিঞ্চিত করবার আশ্বাস দিয়েছে

নীর সম্পৃক্ত বাদলেরা

হে ক্ষুদ্র প্রাণ

তোমার জন্য, শুধু তোমার জন্য

ঈশ্বরের দরবারে প্রার্থনা জানিয়েছে

অগ্নিদগ্ধ বিলুপ্ত প্রায় অরণ্যেরা।

 

আবহমান

 

ক্লান্ত সমুদ্রেরা খোঁজে অতলান্তিক অন্ধকারে বিশ্রাম-বৈভব

বিভঙ্গ স্বপ্নেরা হা-হুতাশের ডানায় খোঁজে সম্পূর্ণ অবয়ব

অনায়াসে রঞ্জিত হতে সূর্য-তাপ খোঁজে পলাশের বন

আলোকবর্ষেরা আলোকবর্ষ পেরিয়ে আজও পথ চলে অকারণ

এতসব আবহমানতার গতিপথে

বুকের গভীরে আগুন নিয়ে

আমি আজও খেলি খেলনা-বাটি, রান্নাঘর।

 

সুখের চাহিদা

 

ক্রমাগত উষ্ণ হয়ে ওঠা বর্ধিষ্ণু দিনে

এক চিলতে ছাতিম-ছায়ায়

একটু জিরাণ

ঠিক এই রকমটাই মনে হলো

তোমার ঠোঁটের কোণ থেকে ছুঁড়ে ফেলা লক্ষ্যহীন হাসিতে

লক্ষ্যহীন কিন্তু লক্ষ্যভেদ করে গেলো

কেন এমন করে উপড়ে নিলো

আমার দুমড়ানো হৃদয়?

আমি তো মানুষ

আর কতবার এভাবে রক্তাক্ত হতে পারি?

আর কত রক্তক্ষরণ চাও তুমি সুখ?


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন