কবিতার কালিমাটি ১১৬ |
দ্বিতীয় দংশন
অনেক দিন আগের
একটা
পোস্টকার্ডের
ভিতর দিয়ে দেখা যায় একটা পুকুর।
তুমি স্নান
করছ। আমি পাপ খুলে লুকিয়ে দেখছি
তোমার শরীর।
তোমার গীতবিতান। পাশ দিয়ে
জঙ্গলে সরসর
করে প্রহর মুখে গোখরো চলে যায়।
তোমারই মতো
সে অহংকারী ও বিষধর – আমাকে না
ছুঁয়ে চলে গেল
দ্বিতীয় দংশনের দিকে। কিন্তু হায়
আমি তো দংশিত
হতে চেয়েছিলাম। আমাকে তুমি দাও
ছোবল খোলা শরীর,
খোলা রসগোল্লার হাঁড়ি। খরস্রোতা
কৌশিকী চক্রব্রতী
দেশিকানের সুর দিয়ে তৈরি করো
এই রাত্রির
অমীমাংসিত শরীরকে, উট যেভাবে করুণ
সুর বোঝে মরুভূমিতে
ঠিক সেইরকম...
করবী গাছের সৌন্দর্য
করবী গাছ আমি
দেখিনি। দেখিতে চাই নিরন্তর।
গিটারবাদক ছেলেটি
দেখেছে করবী গাছের সৌন্দর্য।
আমি দেখি নাই।
আমার না দেখার কষ্টকেই রোজ
বাজায় ওই তরুণ
গিটারবাদক ও তাতে করবীর
সৌন্দর্য আরো
বাড়ে শনিবার অবধি।
করবী গাছের
হাওয়া যতদূর যায় ততদূর আমাদের
মনোমালিন্য,
ততদূর আমাদের হৃদয়ের সংসার।
সংসারের নিত্য
নাচ ও গানের সঙ্গে যে দীর্ঘশ্বাস তাও
আসলে করবী গাছের
অবিরাম সৌন্দর্য...
আতঙ্ক
খবরের কাগজের
প্রথম পৃষ্ঠায় দিল্লির রাস্তায়
একটি গোল দাগের
ভিতর গৃহহীনকে কেউ
ভাত খেতে দিয়েছে,
সঙ্গে একটা কলা, মানে
একটা ফল।
ভাইরাসের দিনে
যেন দেবতাকে ফল দিয়ে কেউ
সন্তুষ্ট করেছে,
ওই গৃহহীন একজন দেবতা
দুইজন দশজন
দেবতা দিল্লির রাস্তায় জ্বলে ওঠে।
এই ছবি আমার
ভিতর ভয় ও ভক্তির
উদ্রেক ঘটায়।
ভিতরের ঘর থেকে ডাক আসে ‘খেতে এসো!’
আমি দিল্লির
রাস্তার ওই গৃহহীন দেবতাকে
সঙ্গে করে খেতে
যাই, বলি –
‘রুটি ও বাটিচচ্চরি
খাবে তো?’ – গৃহহীন দেবতা
এবারে আই পি
এল হবে কিনা আমায় জিগ্যেস করে।
আমি ‘জানি না’
উত্তর দিই। আমি ‘নট ইন্টারেস্টেড’
বলি তাকে –
মানে ওই গৃহহীন গৃহীত দেবতাকে।
আমরা দু’জনেই
রুটি ছিঁড়ি, ভাইরাস ছিঁড়ি,
দু’এক গাছি
বালও ছিঁড়ে ছুঁড়ে মারি
এই পৃথিবীব্যাপী
আতঙ্কের দিকে।
আমাদের অন্তরের
সব গোল গোল দাগ মুছে যায়।
আই পি এল চালু
হয়। গৃহহীন দেবতা গৃহস্থালি খুঁজে পেয়ে
কোনো এক দলের
সমর্থকও হয়ে যায় এবং সমর্থনের নিয়ম
মেনে সে ‘আউট
আউট’ বলে দিশাহীন চিৎকারও
করে ওঠে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন