প্রতিবেশী
সাহিত্য
বিট
জেনারেশনের মহিলা কবি ডেনিসে লেভেরটভ-এর কবিতা ( ১৯২৩ - ১৯৯৭ )
(অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী)
প্রেমের কবিতা
হতে পারে আমি একটা অসুস্হ
অংশ
একটা অসুস্হ জিনিসের
হয়তো কোনোকিছু
আমাকে ধরে ফেলেছে
নিশ্চয়ই কিছু একটা আছে
আমাদের মাঝে
আমি তো তোমাকে
দেখতেই পাই না
কিন্তু তোমার হাত দুটো
দুটো জানোয়ার যা ঠেলে
দেয়
কুয়াশা একপাশে আর আমাকে
ছোঁয়।
বিবাহ সম্পর্কে
আমাকে বিয়ের বাঁধনে জেলে
পুরো না, আমি চাই
বিয়ে, একটা
সাক্ষাৎ প্রতিদ্বন্দ্বীতা--
আমি তোমাকে বলেছিলুম
সবুজ আলো
মে মাসের
নৈশব্দের একটা পরদা ফেলা
হয়েছে
শহরের মাঝখানের বাগানে,
গত
শনিবারের পর
দুপুর, দীর্ঘ
ছায়া আর শীতল
বাতাস, সুগন্ধ
নতুন ঘাসের,
নতুন পাতার,
ফুল ফোটার জন্য তৈরি
প্রচুর---
আর পাখিগুলোকে সেখানে
আমি দেখেছিলুম,
উড়ন্ত পাখিরা যাত্রাপথে
থামছে,
বিভিন্ন রকমের তিনটি পাখি
:
আজেলা-ফুলের রঙ গোল মাথা,
কালচে,
চিত্রবিচিত্র, ফুরফুরে,
ইঁদুরপেছল পাখি,
আর সবচেয়ে ছোট্ট, সোনালি
কাঁটাদার ঝোপের মতন পরে আছে
কালো ভেনিশিয় মুখোশ
আর তাদের সঙ্গে তিনটে
সম্ভ্রান্ত গৃহিনী পাখি
কোমল বাদামি জীবন্ত পালকে
মোড়া---
আমি দাঁড়ালুম
আধঘণ্টার মতো জাদুমগ্নতার
তলায়,
কেউ কাছ দিয়ে যায়নি
পাখিগুলো আমাকে দেখলো
আর
আমাকে যেতে দিলো
তাদের কাছে।
এটা
অপ্রাসঙ্গিক নয় :
আমার সঙ্গে
দেখা হবে
আর তোমার সঙ্গে
দেখা করব
তাই,
একটা সবুজ
ফাঁকা জায়গায়, কারারুদ্ধ
থাকতে চাই না।
মনচলার পর
একবার আমরা খেটেখুটে
আমাদের পুরনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন
করার পর --
‘ভৌতিক’, ‘ঘন’, ‘বাস্তব’,
‘বস্তুনিচয়’ -- থেকে মুক্ত হলে
প্রাচীন পরিমাপ থেকে স্বীকার
করতে হয় কি,
যদিও খোলাচোখে কিন্তু
লুণ্ঠিত
নেত্রগোচর যন্ত্রপাতিতে,
দর্শনীয় নয় (ওহ,
সংক্ষেপে দেখা যায় না!)
স্বীকার করতে হয়
যে ‘বড়ো’ আর ‘ছোটো’ ওদের
মর্মার্থ নেই, কেননা বস্তু
নয় বরং প্রক্রিয়া, কেবল প্রক্রিয়া,
চেষ্টা করে দেখা দেবার
জ্ঞানযোগ্য : জগতসংসার,
ব্রহ্মাণ্ড---
তারপর আমরা যা অনুভব করি
দুর্বল গ্রেপ্তারের মুহূর্তে,
আতঙ্কের কালো কাপড় পড়ে
যাচ্ছে
আমাদের মুখের ওপরে, আমাদের
শ্বাসের ওপরে,
তা পাসকালের আতঙ্কের নতুন
এক মোচড়,
নিরীক্ষণের এক প্রসারণ,
এর উদ্দেশ্য এখন
আমাদের মাংসের ভেতরে,
অনন্ত পরিসর আবিষ্কার
আমাদের নিজের অণুর ভেতরে,
ন্যূনতম
কণা যাকে আমরা অনুমান
করেছিলুম
আমাদের নশ্বর অহং (আর
ভেতরে আর বাইরে,
তারা ঠিক কি?) -- তারা
এখন উদ্দেশ্য
আগে থেকে ফেলে যাওয়া শূন্যতা
বিলাসের ঘোষণা, পরিমাপের
বিরে
আমাদের অশরীরী, কাল্পনিককে
অন্তর্ভুক্ত করে নেওয়া,
(হ্যাঁ, কিন্তু সংবেদী,)
পদার্থের ধারণা,
আমাদের ভাষার মতনই ভ্রমাত্মক,
প্রবহণ যা আত্মা কেবল
পরিব্যপ্ত, এড়িয়ে যায়
কিন্তু নাছোড়।
বিবাহের অবিরাম বেদনা
বিবাহের অবিরাম বেদনা:
উরু আর জিভ, হে প্রিয়,
এর সঙ্গে বেশ ভারি,
তা দাঁতে স্পন্দিত হয়
আমরা আংশিদারীর চেষ্টা
করি
কিন্তু ফিরিয়ে দেয়া হয়,
হে প্রিয়,
প্রত্যেকে আর প্রত্যেকে
এটা হল প্রকাণ্ড হাঙর
আর আমরা
তার পেটের ভেতরে
আনন্দ খুঁজি, কোনও আনন্দ
যা এর বাইরে জানা যাবে
না
দুই বনাম দুই এর সিন্দুকের
মধ্যে এর অবিরাম বেদনা।
নভেম্বর ১৫, ১৯৬৯ বিচার বিভাগে
বাদামি ডিজেল-ধোঁয়া, শাদা
রাস্তার বাতগুলোর তলায়।
তিন দিকে ছাঁটা, সব জায়গা
ভরা
আমাদের দেহ দিয়ে।
দেহ যা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
বাদামি বাতাসহীনতায়, শাদা
রঙে রাঙানো
আলোয়, এক ছাতাপড়া বিহ্বল
দ্যুতি,
যা হুমড়ি খেয়ে পড়ে
হাতে হাত দিয়ে, অন্ধ-করে-দেয়া,
মুখবিকৃতি।
তাকে চাই, চাইছি
এখানে উপস্হিত থাকতে,
দেহ বিশ্বাস করছে নিজের
বিবমিষায় মৃত্যু, আমার
মাথা
নিজের বিষণ্ণতায় স্পষ্ট,
এক ধরনের আনন্দ,
জানতে পারা যে এটা মোটেই
মৃত্যু নয়,
মামুলি, এক দুর্ঘটনা,
একটা
ঠুনকো মুহূর্ত। তাকে চাই,
চাইছি
আমার যাবতীয় চাহিদা দিয়ে
এই ক্ষোভ,
দেহের ভেতরে জানতে পারা
আমরা সকলে কঠোর অস্বাভাবিকতার
বিরুদ্ধে লড়ছি, চাইছি
এর বাস্তব রূপ।
নদীর তীরে যেখানে ডিজেলের
ধোঁয়া
আইভিলতায় পাক খেলো, পরস্পরকে
টেনে নিয়ে
ওপর দিকে, অচেনা, ভাইয়েরা
আর বোনেরা। কিছুই
ঘটবে না কিন্তু
তিক্ততার স্বাদ নেয়া
স্বাদ। নেই জীবন
অন্য, এটা ছাড়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন