রবিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২১

প্রশান্ত গুহমজুমদার

 

কবিতার কালিমাটি ১১৩


বেলাছোটর ক্যাকোফেনি

 

(১)

ইত্যাকার শব্দ বড় গোল করিতে থাকে। মৃদঙ্গ সমতালে। ইহা কেবল বহিরঙ্গের আসর। অভ্যন্তরে কুয়াশা। অভ্যন্তরে ক্রোধ।  অভ্যন্তরে দরজা-জানালা ভাঙিয়া বাতাস। এক টুকরো সংবাদে এইসব সে লিখিতে থাকে। অন্ধকার, তথাপি লেখে। ছন্দ লেখে, ততসম লেখে, নদী এবং গাছ লেখে। কথা লেখে, লেখে কথা। পরিত্রাণ লেখে না। অশ্রু লেখে না। রাত্রি অপূর্ব লেখে, সিঁড়ি অনায়াসে। তাহার কিঞ্চিৎ বাতাস প্রয়োজন। বাতাস লেখে।  রৌদ্র লেখে না। অশালীন দেয়াল লেখে। প্রেম হইতে বাজার অবধি সে লিখিতে থাকে। ইহা এক কাব্য, ফলত আজীবন লিখিত হয়। রক্ত এবং রজ্জু তাহাকে ভালবাসিতে থাকে। যেরূপ প্রথম।


(২)  

প্রতিস্থাপনে জাতীয় বাজিয়া উঠিল। ধ্রুবতারার নীল তোমাতেও বাজিল। উদ্ধ্বত দৌড়ে তুমি। বস্তুত সানাই কিছু অতিরিক্ত আনন্দ করে নাই। কেবল আবহে ছিল। আলো হইতে নামিল বর্ণ। বাতাস হইতে বাতাস। আঙুলে মেজরাব। আমি কি পূর্বেই ঐ অশ্রু স্পর্শ করিয়াছি! মীড় কিছু সঙ্গ দিল। সে এক অনন্ত! পথের। তুমি? আমিও! দরজা সবে খুলিয়াছিল। বোতাম তখন স্পর্ধায়।

 

(৩)  

 ক্রমশ যখন খুলে যাচ্ছে, খুলেই যাচ্ছে। প্রতিমার আলো মেখে নিচ্ছে দেওয়াল। আবীর ইতঃপূর্বে আসিয়াছিল। অশ্রু রক্তের সহিত বর্তমানে অতীত। অঙ্কিত হত্যাটি কখন, অদ্যাবধি অনালোকিত। ছন্দ নাই, সঙ্গীত নাই, বাঁশরী পলায়ন করিয়াছে। তাবত অব্যয় খন্ডবিখন্ড, বিমর্ষ। বিবাদে কে বা হর্ষে আসন পাতিয়াছে! কেবল কিশলয়কিছু প্রকাশ্যেই নতমুখে, ছবি। ইহা পূর্ণিমার পক্ষে ভাল নয়। আরো একমাত্র ছবি ভাঙিয়া ছবির বিপক্ষে। ইত্যাবসরে প্রতিমার নগ্ন হাতটি একটি স্তনকে স্পর্শ করিল। অপরটি আলোর বিপক্ষে। এইরূপে তো প্রারম্ভ ছিল না! প্রকৃত প্রতিভাসে ছিল

 

(৪)  

 এই ছবি নকল। অর্থাৎ রক্তের যে ঘনত্ব ঘটনাকালে ইতিমধ্যেই নিবন্ধিত,  জল গড়াইয়া কালে কালে এই ছবি। আঁশটে গন্ধ অনুপস্থিত, বিলম্বের ফলে। এবং সম্পর্ক সে ঘরদুয়ারে ছিল না। কেবল দুয়ার এবং পাটকাঠির অন্তর্বতী অন্ধকারে একখানি হাসুয়া। অন্তর্বতী, সুতরাং বিশেষ এক কৌতুক। ধর্ষণকালে ঊষা আসিয়াও সে হাস্য।  তরলে তরলঅথচ বর্তমানে পরিত্রাণ নাই বরফেও। দৃশ্যেও এমত তারল্য কৌতূহলোদ্দীপক। মুক্তো যথা। তুলনা কিঞ্চিৎ দুর্বল ঘটিল, কিন্তু মরণকালে সজীব ছিল সে আলো। ছবিতে উহা অপ্রধান হইয়া আছে। এমন কি আক পর্যন্ত। নকলনবিশ শব্দটি প্রচল ছিল না সে কালে। তথাপি জলঙ্গী এই সাক্ষ্য অদ্যাবধি বহন করিতেছে অপরূপ বিহনে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন