সমকালীন ছোটগল্প |
নির্বাক নৈশ প্রহরী
বাইরে ঝিঁ ঝিঁ পোকার একটানা ডাক। কোথাও শেয়াল ডাকল। আর কুকুরের
ঘেউ ঘেউ, সুর তুলে কান্না তো আছেই। মাঝে মাঝে হাওয়া ওঠে। টিলা আর লুঙ্গার মাঝে ধাক্কা
খেয়ে কেমন একটা আওয়াজ হয়, গাছের পাতা ঝরে পড়ে, পাহাড়ি শূকর থপথপ পায়ে হেঁটে যায়। এইধরনের
প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘুমানো কি সম্ভব?
ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে রাজশ্রী।
রাজশ্রী যে দারুণ শহুরে মেয়ে বা এসব কোনোদিন শোনেনি, তা একদমই নয়। তার বাড়িও মফস্বলে, তবে সদ্য শিক্ষকতার চাকরি পেয়ে, তাকে যেখানে জয়েন করতে হয়েছে, সেটা একেবারেই গন্ডগ্রাম। এখানকার সবচেয়ে ভালো বাড়িতে স্কুলের হেডমাস্টার তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কারণ এখান থেকে কাছাকাছি যে
মফস্বল শহর রয়েছে, যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই করুণ, তাই প্রত্যেকদিন
হয়তো অটো বা জিপ পাওয়াই যাবে না, অতএব আপাতত স্কুলের পাশে এই বাড়িটাতে থাকাই ভাল। তারা
লোক ভালো, ভদ্রলোকও শিক্ষক এবং তিনি পাশের গ্রামে শিক্ষকতা করেন। ওনাদের বাড়িতে টিনের
চাল এবং টিনের বেড়া দিয়ে তৈরি কয়েকটি ঘর আছে, তারই একটিতে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে ওর।
বাথরুম এবং টয়লেট বলে যে বন্দোবস্ত রয়েছে, তা মূল ঘর থেকে আলাদা এবং অনেকটাই দূরে।
বারান্দায় লাইট জ্বালিয়ে তবে যেতে হয় ঐদিকে। তাই এই দুসপ্তাহের মধ্যে রাজশ্রী রাতের
বেলা বাথরুমে যাওয়ার পর্বটি বাদ দিয়ে দিয়েছে। খুব কষ্ট হলেও চেপে থাকে। বাইরে বেরিয়ে
যখন মৃদু বাল্বের আলোয় চারপাশ দেখে কেমন যেন প্রাগৈতিহাসিক মনে হয়। উঁচু উঁচু সেগুন
গাছ, টিলা, কলাবাগান, সব মিলিয়ে রাজশ্রী আর সাহস করতে পারে না।
মাস্টার্স করে, বি এড করে অবশেষে টেট পাশ করে রাজশ্রী এই চাকরিটা পেয়েছে, গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকের। সরকারি চাকরি, তাই অফার আসা মাত্র সে সকলের চোখে ঈর্ষার পাত্রী। এই বাজারে স্থায়ী চাকরি যার জুটেছে সেই জানে কত বড় ভাগ্যবান সে। এখন রাজশ্রী তার ভাগ্যের পরীক্ষা দিচ্ছে। এখান থেকে মোবাইলের টাওয়ার খুব দুর্বল, অতিকষ্টে দিনে বা রাতে বাড়ির সঙ্গে ফোনে কথা বলে, বহুবার লাইন কেটে যায় । বাড়ি থেকে মা বাবা আর দাদা আশ্বাস দেয়, কদিন থাক, তারপরই তোর ট্রান্সফার হয়ে যাবে, শহরের স্কুলে এসে যাবি, ব্যস আর চিন্তা নেই। কিন্তু কতোদিন? দুসপ্তাহেই হাঁপিয়ে উঠেছে রাজশ্রী। আগামী মাসে বাড়ি যাবে।
প্রত্যেকটি মুহূর্ত গুনছে সে। কবে বাড়িতে গিয়ে তাদের সামান্য বাথরুম,
হোক সস্তার টাইলস, প্লাস্টিকের নল, সেখানেই অনেকক্ষণ ধরে মগ দিয়ে জল ঢেলে ঢেলে আনগ্ন
স্নান করবে। রাতের বেলা কয়েকবার টয়লেটে যাবে। এটা যে এতো গুরুতর কোনো সমস্যা হতে পারে
তা নিয়ে আঠাশ বছরের জীবনে রাজশ্রী কখনো ভাবেনি। আজ ভাবতে হচ্ছে।
পাশেই টিলার ওপর তার স্কুল। পাকাবাড়ি, মিড ডে মিলের রান্নাঘর। প্রায় তিনশ জন ছাত্রছাত্রী সব ক্লাস মিলিয়ে। অবশ্য তা হলো খাতায় কলমে। বহু ছাত্রছাত্রীদের শুধু নামটুকুই আছে। পঞ্চাশজন ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন আসে কিনা সন্দেহ।
ক্লাস এইটে পড়ে অথচ অনেকেই শুদ্ধভাবে নিজের নাম পর্যন্ত লিখতে
পারে না। রাজশ্রী হাসে, তার মনে হয়, সে যেন ভারতমাতা। দীন, দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদেরকে
ভবিষ্যতের সুনাগরিক বানাবার মহান দায়িত্ব নিয়ে এতো পরিশ্রম করে অবশেষে শিক্ষিকা হয়েছে।
এইসব অসম্ভব দুষ্টবুদ্ধিসম্পন্ন, ফাঁকিবাজ এবং হতদরিদ্র ছেলেমেয়েগুলোকে সেরা করে তুলতে
হবে। ভাষা সমস্যাও প্রবল। তারা বাংলাও বলতে পারে না ঠিকমতো। বিভিন্ন জনজাতি ভাষায় কথা
বলে, যেগুলো রাজশ্রী বুঝতে পারে না। কী পড়াবে ওদের, কোথা থেকে শুরু করবে, ধন্ধে আছে
সে, মিড ডে মিলের পর স্কুল বলতে গেলে ছুটিই হয়ে যায়। ছেলেমেয়েগুলো যে যার মতো দৌড় লাগায়,
হেডমাস্টারেরও যেন মনে মনে তাই ইচ্ছে, যে কয়েকজন টিচার আছেন, তাদের বাইক রয়েছে, আর
যাদের নেই, সেই বাইকের সহ সওয়ারি হোন তারা, মাঝে মাঝে এই পথে চা বাগানের পাতা তোলার
ট্রাক যায়, কোন কোনদিন তাতেও কেউ কেউ চলে যান, ব্যস স্কুলে তালা পড়ে যায়। রাজশ্রীও
ফিরে আসে। একটি অলসতম জীবন এখানে প্রবাহিত
হয়। যে বাড়িতে সে থাকে, সেই বাড়ির মহিলারা উঠোনে বসে গল্প করে, একজন আর একজনের উকুন
বাছে, তারপর বাজার আসে, রান্না বসায়। আটটার মধ্যে গভীর রাত নেমে আসে। একটি টিভি আছে
বটে বাড়িটিতে কিন্তু রিচার্জ করে করে দেখতে হয়, তাই খুব হিসেব করে ওরা টিভি দেখে মাঝে
মধ্যে। সবাই ঘুমিয়ে গেলে রাজশ্রীর কিছু করার থাকে না, ওর ঘুমোবার টাইম রাত সাড়ে বারোটা
নাগাদ, রাত আটটা তো চা খাওয়ার সময়। এতো দীর্ঘরাত কীভাবে কাটায় সে। নেট দুর্দান্ত স্লো, ইউটিউব খোলেই না। গল্পের বই পড়ার অভ্যাস কবেই বিসর্জন দিয়েছে, আবার শুরু করতে
হবে মনে হচ্ছে, এরপর বাড়ি থেকে আসার সময় গল্পের বই নিয়ে আসবে। রাতের বেলা, মাঝে মাঝে
ঘরের জানলাটি খুলে তাকিয়ে থাকে, চারদিকে বনজঙ্গল, বুনো গন্ধ। খুব কান পাতলে আশেপাশের
বাড়ির মৃদু কথাবার্তার আওয়াজ শোনা যায়। হয়তো টিলার ওপার থেকে ভেসে এলো একটি ডাক, কেউ
ডাকছে নাম ধরে অন্যের। রাজশ্রী তখন কান পেতে সেই ডাক শোনে, উত্তর এলো কিনা অপেক্ষা
করে। বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে সাইকেলের আওয়াজ আসে, গ্রামের বাজার থেকে বাড়ি ফিরছে
মানুষজন। মঙ্গলবার আর শনিবার এখানে বাজারবার। সেদিনই একটু বেশি জিনিসপত্র ওঠে।
এরকমই এক শনিবারে রাজশ্রী একটু বাজার করলো, ফ্রিজের সুবিধে নেই, মাছ খেতে ইচ্ছে করেছিল, বেশ তাজা মাছই উঠেছে, কিন্তু কোনরকম সুবিধে করতে পারে না সে রান্নাবান্নায়, এগুলো ধোয়াধুয়ি করে আজই রেঁধে ফেলতে হবে, এইসব অসুবিধার কথা ভেবে, ডিম, আলু, পেঁয়াজ, টমেটো এসব কিনে চলে এলো। অমলেট আর ডালসেদ্ধ দিয়ে খেতে বসেছে, এমনসময় বাড়িওয়ালার স্ত্রী একটি বাটিতে করে তরকারি নিয়ে এলেন, টাটকা মাছের ঝোল। রাজশ্রী খুব কুন্ঠিত বোধ করলো, আপনাদের ভাগ থেকে আবার আমার জন্য?
তুমি কি অন্য কেউ, জানি তো কাটাকুটি, ধোয়াধুয়ির অসুবিধার জন্য
কেনোনি।
এই কয়েকদিনের মধ্যে প্রথম মাঝবয়সী বউটির এরকম আন্তরিক গলার স্বর শুনতে পেয়ে রাজশ্রীর খুব ভালো লাগল। হয়তো ওরাও লজ্জা পাচ্ছে সহজ হতে।
দিনটি ছিল মেঘলা। রাতে বৃষ্টি এলো। টিনের চালে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টির
আওয়াজ পেয়ে, ঘুম ভাঙল রাজশ্রীর। ঘরে একটি ছোট আলো রয়েছে, আবছামতো দেখায় সব, মোবাইল খুলে দেখল রাত সাড়ে এগারোটা। একবার যেতেই
হবে আজ, নাহলে পুরো রাত কাটবে না, শেষপর্যন্ত টর্চ নিয়ে দরজা খুলে বেরুলো রাজশ্রী।
প্রতিদিন বারান্দায় যে মৃদু আলো জ্বলে থাকে সেটা নেই। কিন্তু যা আছে তা হলো, বিপুল
জ্যোৎস্না। অন্যদিন সবকিছু ভৌতিক মনে হয়, এই রাতে অলৌকিক লাগছে। বৃষ্টি থেমে গেছে,
অপূর্ব ঠান্ডা হাওয়া বইছে।
উঠোন পেরিয়ে খানিকটা যেতে হবে, হঠাৎ বাঁশের গেটের দিকে তাকাল রাজশ্রী। তার সিক্সথ সেন্স বলছিল সেখানে কিছু আছে।
খুব ভয়ের কিছু কি?
মুখ থেকে অস্ফুট আওয়াজ বের করতে গিয়েও বের হলো না। হাত পা দিয়ে
বয়ে গেলো ঠাণ্ডা স্রোত। মনে হলো পড়ে যাবে।
একটি যুবক, সু্ন্দর সুঠাম চেহারার, রাজশ্রীর সঙ্গে চোখাচোখি হলো,
গেটের বাইরেই দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু ঠোঁটে আঙুল দিয়ে ইশারা করলো চুপ থাকতে, বুকে হাত দিয়ে
দেখাল, যার মানে অভয়। রাজশ্রী ভাবছিলো জোরে চিৎকার করবে, কেন জানি পারল না, পা টেনে টেনে টয়লেটের দিকে গেলো, ফিরেও
এলো, তখনও ছেলেটি দাঁড়িয়ে। রাজশ্রীর দিকে কিন্তু তাকালো না, রাজশ্রী ছুটে গিয়ে ঘরে
দরজা বন্ধ করে দিল।
পরদিন বহুবার বলতে চাইল, বাড়িওয়ালা ভদ্রলোককে, রাতের ঘটনাটির কথা।
কিন্তু পারল না কেন জানি। এই রহস্যময় ছেলেটি কে, দেখে তো বাঙালিই
মনে হলো, ওর পরনে ঠিক কী ছিল, কে জানে? ভালো করে দেখাই হলো না। এতো রাতে কী মতলবে এসেছিল
সে? ভয়ের চোটে মনে হচ্ছে ঘুমুতেই পারবে না আর কোনোদিন সে।
আবার রাত সাড়ে এগারটা, আশ্চর্য সময়সংকেত, বেরোতে হলো দরজা খুলে। আজ বাড়িওয়ালার মেয়েকে ডাকবে, বিকেলে বলে রেখেছিল, কিন্তু তাকাবে না তাকাবে না করেও গেটের দিকে চোখ চলে গেলো। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, কালকের ছেলেটিই দাঁড়িয়ে, তবে খানিকটা দূরে, আবারও ইশারায় যেন চুপ থাকতে বলল।
পর পর কয়েকদিন এই ঘটনার বারংবার পুনরাবৃত্তিতে রাজশ্রীর ভয় কেটে
গেলো।
দাঁতে দাঁত চেপে সে ব্যাপারটি উপভোগ করছিল।
বাড়ি থেকেও ঘুরে এলো, আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হলো চাকরি পাওয়ার এই প্রথম ধাক্কা থেকে। রহস্যময় যুবককে নিয়ে রাজশ্রীর জলঘোলা করতে ইচ্ছে হলো না, সে যখন ইশারায় চুপ থাকতে বলে, তখন কেমন যেন অসহায় ভাব ফুটে ওঠে ওর চেহারায়। তাছাড়া রাজশ্রীর মনে হলো, ছেলেটি খারাপ নয়। সে আরো কিছুদিন দেখতে চায়।
বাড়ির লোকজনের সঙ্গে মিশে গেছে রাজশ্রী, আজকাল আর বিষণ্ণ লাগে না, তাছাড়া রোমাঞ্চও আছে একটা। দীপ্তকে ঘটনাটা জানাবে রাজশ্রী। তাহলে খুব মজা হবে। দীপ্তকে বলবে ওর একজন নৈশ পাহাড়াদার আছে, নিভৃত এবং সুন্দর।
দীপ্ত নিশ্চয়ই ওকে হালকা সন্দেহ করবে, এ নিয়ে ঝগড়াও চলতে পারে,
প্রেমিক প্রেমিকার অভিমানময় মিষ্টি দুঃখ, নিজের মনেই হাসল রাজশ্রী ।
কিছুদিন পর এক বিকেলে বাড়িওয়ালার স্ত্রী বললো, আজ একজায়গায় নেমতন্ন আছে, তোমাকেও নিয়ে যাবো। বিয়ের নেমতন্ন। কিন্তু খাওয়া নেই।
মানে? রাজশ্রী অবাক হলো।
গরিব লোকের বিয়ে বুঝেছো। গ্রামে খুব গরিব যারা, তারা বিয়ে দেখার
আমন্ত্রণ জানায়, খাওয়াতে পারে না কিছু। হয়তো পান সুপারি দেবে। সেরকমই এক বিয়ে। পরিচিত
একটি ছেলের। সন্ধ্যায় বিয়ে, ছেলের বাড়িতেই বিয়ে হবে, মেয়ের বাড়ি আরো গরিব। ওখান থেকে
এসে আজ আমাদের সঙ্গেই খাবে তুমি।
যাইহোক বিকেল বিকেল বাড়ির সবাই তৈরি হলো মানে মেয়েমহল, রাজশ্রীও ভাবল দেখাই যাক, একটি অভিজ্ঞতা হবে মজার। বেশ খানিকদূর যেতে হলো, দুতিনটি টিলা পেরিয়ে, কলাগাছ আর মাটির মঙ্গলঘট পাতা একটি বাড়ি দেখতে পেয়ে রাজশ্রী বুঝলো এটাই বিয়ে বাড়ি।
বাঁশের ঘর, সামনে খবরের কাগজ কেটে কুঞ্জ বানানো হয়েছে। বর বধূ
রেডি হয়ে বসে আছে। বধূর মুখ প্রায় পুরোটাই ঢাকা ঘোমটায়, বর ধুতি পাঞ্জাবি পরা, টোপর
দেওয়া, বরের মুখখানা এক ঝলক দেখে চমকে উঠল রাজশ্রী, তার নৈশ পাহাড়াদারই তো। ছেলেটিও
দেখল রাজশ্রীকে। যথাসময়ে প্রচুর উলু, হাসি ঠাট্টার মাধ্যমে শুভবিবাহ সম্পন্ন হলো। বাজনা
টাজনা নেই। একটিই আলো জ্বলছে উঠোনে। তবে একদম
খালিমুখে নয়, পান সুপারি আর সবাইকে একটি করে মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করা হলো। কে আপ্যায়ন
করলো বরের বাড়ি না বৌয়ের বাড়ি, বোঝা গেলো না।
ফেরার পথে, বাড়িওয়ালার মেয়ে কৃষ্ণা বললো, জানো রাজশ্রীদি, আমরা কার বিয়ে দেখে এলাম?
কার?
ঐ যে ছেলেটি!
হু। কে সে?
সে হলো গ্রামের চোর। তবে আমাদের গ্রামে চুরি করে না। অন্য গ্রামে
করে। দু তিনবার ধরাও পড়েছে, ছাড়াও পেয়েছে। ছোটখাটো চুরি। কিন্তু খুব উপকারী ছেলে। সবার বিপদে আপদে সাহায্য করে।
রাজশ্রী হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছিল না। শেষপর্যন্ত চোরের বিয়েও
দেখতে হলো এই আঠাশ বছরের জীবনে! এতো মারাত্মক কেস! তাও আবার চেনা চোর।
হঠাৎ রাজশ্রীর মনে হলো, তাহলে তো আজ রাত থেকে তাকে আর কেউ পাহারা
দেবে না, টয়লেটে যাবার সময়। আহা! যাও জুটেছিল! নতুন বউ নিয়ে ছেলেটি এখন ব্যস্ত থাকবে। ইস্।
তবে বিয়েবাড়ি থেকে ফিরে খেয়েদেয়ে গল্প করে ঘুমুতে ঘুমুতে বেশ রাত
হলো, একঘুমে রাত শেষ হলো। যাক্।
পরদিন সাড়ে এগারোটায় যেন রাজশ্রীর ইচ্ছে করেই ঘুম ভাঙল, এতদিনে আর ভয়টয় তেমন করে না, তবুও আজ অসীম কৌতুহল হলো। হয়তো ছেলেটি উদ্দেশহীন ভাবেই রাতে ঘোরাঘুরি করত। চোর তো, তাই রাতে ঘুম আসে না। এরকম অদ্ভুত জিনিসও মানুষের জীবনে ঘটে। ছেলেটি বুঝল কী করে, ওর রাতে বাইরে বেরোতে এতো ভয় করে?
অদ্ভুত এক যোগাযোগ। দুরু দুরু বুকে দরজাটি খুলে, গেটের দিকে তাকাল রাজশ্রী।
কী দেখবে? নেই না আছে?
আশ্চর্য!
ঐ তো! একটু দূরে দাঁড়ানো ছেলেটি। যেন হাত তুলল। নাহ্ তেমন আর কী
আশ্চর্যের, হয়তো অদ্ভুত সুন্দর এইসব বুনো গন্ধে ভরা রাতে এমন ঘটনা ঘটেই থাকে গ্রাম
পাহাড়ে।
নিশ্চিন্তমনে বাইরে পা বাড়াল রাজশ্রী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন