কালিমাটির ঝুরোগল্প ৯৯ |
সংক্রমণ : ঘরে এবং বাইরে
ভোর দুটো-তিনটে বাজে। মোবাইলে টেক্সট মেসেজ আসছে। আমি গুঞ্জন ত্রিপাঠী, একজন ফিমেল কোভিড ভলেন্টিয়ার। মোবাইল রিং হচ্ছে। এটা আমার তথা আমাদের ডিউটির মধ্যেই পড়ে।
হাসপাতালে অনেকগুলো বেড দরকার। ক্রিটিকাল পেশেন্টদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স অ্যারেঞ্জ করতে হচ্ছে। অক্সিজেন সিলিন্ডার হন্যে হয়ে খুঁজছি সারাদিন। অসংখ্য মানুষের শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এই প্যানডেমিকের দ্বিতীয় ওয়েভ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট বুঝিয়ে দিচ্ছে প্রতিটি ক্ষণ কী ভয়ংকর হতে চলেছে। হায় রে, এপ্রিল-মে ২০২১! গভীর রাতেও কত অসহায় মানুষের কণ্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছি। অ্যাম্বুলেন্সের হুটার জানিয়ে দিচ্ছে এমারজেন্সির ব্যাকুলতা। এত-এত মৃত্যু! সংক্রমণ সাড়ে চার লাখ ছাড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন।
এরই মাঝে কিছু ননসেন্স টেক্সট বা ফোনকল্ আসছে–––‘Can you find a bed for both of us?’, ‘Can you share your picture?’, ‘ডার্লিং বুলায়া তোহ্ গলতি ক্যায়া হ্যায়?’
কোভিড পেশেন্টদের সাহায্যে দিল্লি, গাজিয়াবাদ, ফরিদাবাদ, নয়ডা, গুরুগ্রাম-এ
ব্যস্ত কিছু ফিমেল কোভিড ভলেন্টিয়ার। অক্লান্ত পরিশ্রম করে দিনরাত এক হয়ে যাচ্ছে
আমাদের।
ভোর চারটে। ‘হ্যালো’
‘Where are you located?’
‘I am in Delhi. What is the patient’s SpO2 levels?
‘ম্যায় নেহি বাতা রাহা, ম্যায় তেরে ঘর আকে
বাতায়ুংগা...’
স্তব্ধ হয়ে সেই-সেই পুরুষকণ্ঠের ফোননম্বরগুলো ব্লক
করে দিই। অন্ধকার শেষে পুবের আকাশে তখন আলো ফুটে উঠছে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন