কবিতার কালিমাটি ১০৯ |
মুক্তি
পাহাড়ের ওপর গাছপালা, ঝোপ আর
জঙ্গল, আর পাশ ঘেঁষে হলদেটে দেয়াল
আর দেয়াল জুড়ে ছোট ছোট চারকোণা
খোপ, খোপের ভেতর থেকে পাহাড়ের
ঘাস, মাটি উঁকি দ্যায়; গাছ,
মাটি আর
ঘাস ভেজা গন্ধ ছড়ায়। সময়ের ওপর
সময় জমে আর আমরা প্রস্তরীভূত হই।
এর আগে অসম্ভব, অবিশ্বাস্য যন্ত্রণাই
হয়তো আমাদের সাধনা, উপাসনা; এর
ভেতর দিয়েই মুক্তি খুঁজেছো তুমি, এবং
অবশেষে পেয়েছো বই কি; নির্বাণ অথবা
মোক্ষ যে অভিধাই তাকে দেয়া হোক না
কেন। যেন একরাশ অভিমান ঘন হয়ে
জমেছিল দু’চোখের কোণে, আর বুকের
ভেতরটায় যেন কিসের এক অবাধ্য
নড়াচড়া! তারপর শীতের কম্বল হ’য়ে
তোমায় ঢেকে দিল রাজ্যের ঘুম; মা মুরগী
যেমন ক’রে ঢাকে তার ছানাটিকে। এরপর
গন্ধহীন, বর্ণহীন, চেতনাহীন,
মাত্রাহীন
অসীমের দিকে ফিরতি যাত্রা, হয়তো বা
একমুখী, হয়তো বা আর কোনো
গল্পের অপেক্ষায় থাকা।
‘শুবার্টের সেরেনেইড আর নিঃসঙ্গ একটি পাখি’
শীত নামছে বহুদিন ধরে —
বেশির ভাগ সময় নীরবে,
কখনো বা জানান দিয়ে।
ডালপালায়, বাকলে আঁকিবুঁকি
গভীর থেকে গভীর হয়, প্রাচীন
থেকে প্রাচীনতর
প্রতিদিন।তবুও
মনের আকাশে বর্ষার আশ্চর্য
মেঘদল – ঘন, কালো, বিষণ্ণ।
বহুধা বিভক্ত বৃক্ষ! সে প্রত্যাশার
ভারে ন্যুব্জ; ভেঙে পড়তে গিয়ে
নিজেই সামলে নেয়, পরক্ষণেই
আবারো বেসামাল, বেপথু।
শুবার্টের সেরেনেইড একটানা বেজে
চলে; মেঘ জল হয়ে মুহূর্তেই নদী।
অনেক অনেক গভীরে, হৃদয়ের
কোনো এক গোপন কোটরে, ছোট
একটা পাখি ধুকপুক করে যায়;
মাঝে মাঝে অস্থির – সবসময় ভীরু,
নরম এবং নিঃসঙ্গ ছোট্ট সেই পাখি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন