কবিতার কালিমাটি ১০৯ |
অভিযাচিত বেদনার অভিভূতি
দু'চোখ তুলে
তাকানো মাত্র সৃষ্টিশীল সত্তার জাগরণ,
প্রশান্তির
উৎসমুখ খুলে গিয়ে সান্ত্বনার অনন্ত নির্ঝর
পরিচর্যা দেয়
সেই সমস্ত পাথরের ক্ষয়-সহিষ্ণুতার চিহ্নে
যা অনন্ত ঔদাসিন্যে
ব্যাখ্যাতীত।
এক অলৌকিক সুর
মূর্ছনা শ্রুত হতে থাকে আর
প্রতিদিনের
বৈশিষ্ট্যহীন জীবন যাপনে ঢুকে পড়ে
মায়াঘোর অভিভূতি।
অগ্নুৎপাতের
স্বপ্নে বিভোর দু'জোড়া চোখ তখন রূপান্ধ,
স্বৈরাচারী
প্রশ্রয় ও প্রত্যাখ্যানের দিন-রাত্রি
মাধুকরী না
পাওয়া ভিক্ষুকের বিষণ্ণতায়
ভূর্জপত্রে
রাখে সমর্পণের সুধাময় পরিতৃপ্তি।
সেই তৃপ্তি,
সেই যৎসামান্য সন্তুষ্টি
অযুথ যাতনা
মুছে দেয়।
যাপনকথা
এত বঞ্চনা তবু
অমলিন জীবনের রূপকথা
দুই প্রান্তের
স্তব্ধতা নিয়ে নদী বয়ে যায় একা;
মুঠো খুলে দেখি
কিছু নেই হাতে, প্রতিজ্ঞা সম্বল
পুড়ে যেতে
যেতে আজীবন তবু বিমুগ্ধ হয়ে থাকা!
পুনর্জন্মের আয়োজন
বিনির্মাণের
জন্য প্রস্তুত করতে
আমার সমস্ত
আয়োজন।
সমস্ত আয়োজনের
কেন্দ্রে আয়ুক্ষয় বিষয়ক
স্বগত-সংলাপে
যে আলেখ্য রচিত হয়
তার উপজীব্যে
কোথাও তুমি নেই।
কেবল তোমার
পিপাসা, পরবাসী হাওয়ার স্পর্শে
তোমার ধৈর্যহীন
প্রতিক্ষা পুনর্জন্মের জন্য
তীর্থের কাক
হয়ে শৃঙ্খলাবর্জিত কামনায়
অনর্গল চঞ্চু
ঘষে দায়বদ্ধ বৃক্ষের শাখায়।
উজ্জীবনের ইঙ্গিত
সব কোলাহল থেমে
গেলে
শব্দের স্বতন্ত্র
আহ্বানে তুমি
লিপিবদ্ধ করো
দহন কথা;
ঝড়ে উড়ে যাওয়া
বিবর্ণ
পাতাটির মতো
নিরুদ্দেশ তোমার
আত্মপ্রত্যয়
খুঁজে পেতে চাও।
এই অন্বেষণ,
আত্মোপলব্ধির অনিবার্যতা
প্রকৃতপক্ষে
তোমার উজ্জীবনের ইঙ্গিত।
বৈরাগ্য
অপেক্ষার কথা
লিখব বলে
দায়বদ্ধতার
কাছে গোপন রেখেছি সমস্ত ক্রন্দন।
আকাশ ছুঁতে
চাওয়া অহমিকা
প্রজ্ঞার রামধনু
রঙের স্পর্শে দেউলিয়া হয়ে
শুকনো পাতার
দিনতায় উড়ে যায়
বাস্তবতার জোরালো
বাতাসে।
আত্মত্যাগের
কথা লিখব বলে
আবেগের স্রোতস্বিনীতে
অবগাহন করে
অর্পণ করেছি
যৌবন।
রূপময় ব্যাধের
বেশে বৈরাগ্য এগিয়ে আসে ধীরে।
ফাল্গুনের পলাশ
বিছানো রাস্তায়
প্রেম আর বৈরাগ্য
পরস্পর হাত ধরে হাঁটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন