বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

শ্রীজাতা কংস বণিক

 

কবিতার কালিমাটি ১০৮



চাকা

 

প্রতিদিন নতুন ঘাতক

লুকোচুরি খেলা অথবা ম্যাজিক বক্সে লুকিয়ে ফেলা রং পেনসিল,

প্রতিদিন একই লক্ষ্যে বহু ঘুরপাক খেতে খেতে

জন্মের দিনটিতে ফিরে আসি,

চক্রাকার আবর্ত নিয়ে যেসব অঙ্ক ছিল

তা মনে নেই আর,

চক্র মানে আজ জানি লোফালুফি খেলা

জন্ম থেকে মৃত্যু আর মৃত্যু থেকে জীবন।

 

আয়না

 

এদেশে দুঃখ এলে আমি তার দাস হয়ে উঠি

বাগানে ফুল ফোটে, চির সংসারী ভ্রমরও

তখন পথিক হয়ে আমার চোখের উপর এসে বসে।

 

এদেশে দুঃখ আসে যখন সকলে সবার মতো

দেখতে হয়ে যায়

অথচ, তাদের নিজের কোনও প্রশ্ন থাকে না,

 

এদেশে দুঃখ এলে আমি প্রেমের কবিতা লিখি

আমার প্রেমিকের খোঁজ করে সেই প্রতিবিম্বেরা

যুগ যুগ আসক্তের মতো

আমার কবিতা বিকলাঙ্গ হাত পা ছেড়ে

উঠে দাঁড়ায়, রোদ্দুরকে চিনে নেয়

মঞ্চ খুঁজে নেয় অনেকদূরে...

এসব জানার পরে দুঃখ আরও রাজা হয়ে যায়

আর আমি তার অন্যতম দাস

 

এদেশে দুঃখ আসে, আমি যখন তোমার ব্যবহৃত

সকাল দুপুর আয়না হয়ে যাই।

 

মরীচিকা

 

সামান্য পিপাসা নিয়ে যারা এই পৃথিবীতে আসে

অথচ জলের কাছে পৌঁছতে পারে না কোনোদিন

তাদের অক্ষম বেদনায় মিশিয়ে দিয়েছি ঘুম...

এখনো ঘুমোয় তারা অবাধ্য অসুখ চোখে নিয়ে।  

 

প্রবল তৃষ্ণার সঙ্গে ঘুমের মিলন হয়নি, এবং

ক্ষিদের মধ্যে লাম্পট্য অথবা গাছের মধ্যে

দেখিনি তোমার ছায়া...

এভাবে নিজের ঘুম ক্রমাগত অচেনা হয়েছে।

 

অচেতন সেইসব মুহূর্তের মুখে

আয়না ধরার পর অপলক জেগে দেখি

উৎসের মৃত্যু হলে, প্রতিবিম্ব ছুটে চলে অনন্তের দিকে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন