প্রতিবেশী
সাহিত্য
বিট জেনারেশনের মহিলা কবি ডায়ানে ডি প্রিমা-র কবিতা
(অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী)
প্রথম তুষার, কেরহঙ্কসন
অ্যালান-এর জন্য
এটা, তাহলে, পৃথিবী আমাকে
যা উপহার দিয়েছে
(তুমি আমাকে দিয়েছ)
নরম তুষার
কোটরে মুঠোমাপের
পুকুরের জলের ওপরে পড়ে
আছে
দেখতে আমার দীর্ঘ মোমবাতির
সমান
যা জানালায় দাঁড়িয়ে থাকে
যা সন্ধ্যায় জ্বলবে যখন
তুষার
ভরে তুলবে উপত্যকাকে
এই কোটর
কোনো বন্ধুই নেমে যাবে
না
কেউই মেক্সিকো থেকে বাদামি
আসবে না
ক্যালিফোর্নিয়ার সূর্যভূমি
থেকে, মাদক নিয়ে
তারা এখন ছড়ানো, মৃত বা
নিঃশব্দ
উন্মাদনায় ফাটানো
আমাদের সমবেত দৃষ্টিচেতনার
চিৎকাররত ঔজ্বল্য দিয়ে
আর তোমার এই উপহার--
শাদা নৈঃশব্দ্য
ভরে তুলছে আমার জীবনের বর্ণালী-নকশা।
নববর্ষের বৌদ্ধগান
আমি তোমাকে সবুজ মখমলে
দেখলুম, ঝোলাহাতা পোশাক
আগুনের সামনে বসে আছ,
আমাদের বাড়ি
কোনোরকমে করে তোলা হয়েছে
আরও সৌষ্ঠবপূর্ণ, আর তুমি বললে
“তোমার চুলে নক্ষত্র রয়েছে”--
এই সত্য আমি
নিজের সঙ্গে নিয়ে এলুম
এই প্যাচপ্যাচে আর নোংরা
জায়গায় যাকে আমরা করে তুলব সোনালি
করে তুলব দামি আর কিংবদন্তিপ্রতিম,
এটা আমাদের স্বভাব,
আর এটাই সত্য, যে আমরা
এখানে এসেছি, আমি তোমাকে বললুম,
অন্য গ্রহ থেকে
যেখানে আমরা ছিলুম দেবীদেবতা,
আমাদের এখানে পাঠানো হয়েছে,
কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে
যে সোনালি মুখোশ আমি আগে
দেখেছিলুম, তা খাপ খেয়ে গেলো
তোমার মুখে এতো সুন্দরভাবে,
ফেরত দিলে না
ষাঁড়ের মুখ তুমি যোগাড়
করেছিলে সেটাও
উত্তরের লোকজনদের মাঝে,
যাযাবরের দল, গোবি মরুভূমি
ওই তাঁবুগুলো আমি আর দেখিনি,
ওয়াগনগুলোকেও নয়
অত্যন্ত ঝোড়ো উপত্যকায়
অত্যন্ত শ্লথ,
এতো ঠাণ্ডা, আকাশে প্রতিটি
নক্ষত্রের ভিন্ন-ভিন্ন রঙ ছিল
আকাশ নিজেই একটা জট পাকানো
রঙচঙে পর্দা, ঝলমল করছিল
কিন্তু প্রায়, আমি সেই
গ্রহ দেখতে পাচ্ছিলুম যেখান থেকে আমরা এসেছি
আমি মনে করতে পারিনি
(তখন) আমাদের উদ্দেশ্য কি ছিল
কিন্তু মহাকাল নামটা মনে
ছিল, ভোরবেলায়
ভোরবেলায় শিবকে প্রত্যক্ষ
করলুম, শীতল আলো
মেলে ধরল ‘মননপ্রসূত’ জগতগুলো, তেমনই সহজ,
আমি দেখলুম তাদের প্রচার,
বয়ে যাচ্ছে,
কিংবা, সহজভাবে
বললে, একটা আয়না আরেকটাকে প্রতিবিম্বিত করছিল।
তারপর আয়নাগুলো ভেঙে ফেললুম,
তোমাকে আর দেখতে পেলুম না
কিংবা কোনো উদ্দেশ্য,
এই নতুন কালোময়তার দিকে তাকিয়ে রইলুম
মননপ্রসূত জগতগুলো বিদায়
হলো, আর মন হয়ে গেল স্তব্ধ:
এক উন্মাদনা, নাকি এক
সূত্রপাত?
ভালোবাসার একটি অনুশীলন
জ্যাকসন অ্যালেনের জন্য
আমার বন্ধু আমার স্কার্ফ
নিজের কোমরে বেঁধে রাখে
আমি ওকে দিই চন্দ্রকান্তমণি
ও আমাকে দেয় ঝিনুক আর
সমুদ্রগাছালি
ও আসে অনেক দূরের শহর
থেকে আর আমি ওর সঙ্গে দেখা করি
আমরা একসঙ্গে বেগুনচারা
আর সেলেরিশাক পুঁতবো
ও আমাকে কাপড় বুনে দেয়
অনেকে উপহার এনেছে
আমি সেগুলো ওর আনন্দের
জন্য কাজে লাগাই
রেশম আর সবুজ পাহাড়
আর ভোরবেলার রঙের সারস
আমার বন্ধু আলতোভাবে হাঁটে
বাতাসে বোনার মতন
ও আমার স্বপ্নগুলোকে আলো
দেখায়
ও আমার বিছানার পাশে বেদি
তৈরি করে দিয়েছে
আমি ওর চুলের গন্ধে জেগে
উঠি আর মনে করতে পারি না
ওর নাম, কিংবা
আমার নিজের।
জানালা
তুমি আমার রুটি
আর চুলের সিঁথে
আওয়াজ
আমার হাড়গুলোর
তুমি প্রায়
সমুদ্র
তুমি পাথর নও
কিংবা লাভায় গড়া শব্দ
আমার মনে হয়
তোমার হাত দুটো নেই
এই ধরনের পাখি পেছন দিকে ওড়ে
আর এই ভালোবাসা
জানালার কাচে ভেঙে যায়
যেখানে কোনো আলো কথা বলে না
এখন সময় নয়
জিভ জড়াবার
(বালি এখানে
কখনও সরে না)
আমার মনে হয়
আগামীকাল
তোমাকে ওর বুড়ো আঙুলে
বদলেছে
আর তুমি
ঝকমক করবে
ঝকমক
আর ঝকমক
যা খরচ হয়নি আর মাটির
তলায়
খুকি-ও’র গান, যার জন্ম
হয়নি
হৃদয়খুকি
যষখন তুমি চিরে বেরোবে
তুমি পাবে
এখানে একজন কবি
তেমন নয় যা
কেউ বেছে নেবে।
আমি কথা দেবো না
তুমি কখনও ক্ষুধার্ত থাকবে
না
কিংবা তুমি কখনও দুঃখ
পাবে না
এই পোড়া
ভাঙাচোরা
ভূ-গোলকে
কিন্তু আমি তোমাকে দেখাতে
পারি
খুকি
যথেষ্ট ভালোবাস দিয়ে
তোমার হৃদয়কে যা ভেঙে
ফেলবে
চিরকালের জন্য
‘মেয়েটিই বাতাস’
মেয়েটিই বাতাস যাকে তুমি
ছেড়ে যাবে না
কালো বিড়ালকে তুমি মেরে
ফেললে ফাঁকা গ্যারাজে, মেয়েটি
গ্রীষ্মকালের ঝোপজঙ্গলের
গন্ধ, এমন একজন যে
উঁকি দেয় ছেলেবেলার খোলা
আলমারিতে, মেয়েটি কাশে
পাশের ঘরে, শিস দেয়, তোমার
চুলের পাখির বাসায়
সে ডিম পাড়ে
জানালার দিকে মুখ করে
মেয়েটি
তোমার আগুনচিমনির বাঁশি,
শ্বেতপাথরের প্রতিমা
ম্যান্টলপিসে খোদাই-করা
যে রাতের
বেলায় অপেক্ষা করে।
মেয়েটি প্রাচুর্যদায়িকা
যে রাতে কাঁদে, মৃত্যুর
বাঁধন
তুমি ছিঁড়তে পারবে না,
কালো সজল চোখ
ঝোপের পেছনে উন্মাদ মেয়েরা
ক্যারল গাইছে, মেয়েটি
তোমার বিদায়গুলোর
শিস।
সবুজ মণীতে কালো কণা,
আওয়াজ
নিঃশব্দ প্রণাম থেকে,
মেয়েটি
পুড়ে যাওয়া দেয়ালপর্দা
তোমার মস্তিষ্কে, আগুনরঙা
আলখাল্লা
পালকের তৈরি তোমায় নিয়
চলে যায়
পাহাড়ের বাইরে
যখন তুমি আগুন হয়ে দৌড়োও
নীচের দিকে
কালো সমুদ্রে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন