কবিতার কালিমাটি ১০৮ |
অন্দরমহল
লিখতে লিখতে
অনেক শহর কখন যেন গিয়েছে বাদ-
মাছের শিরদাঁড়া
থেকে কাঁটা ছাড়াতে ছাড়াতে ভুলে যাওয়া মাছের স্বাদ-
একটি চারা যত্ন
করতে করতে কলমে জুড়েছে ডাল-পালা-শেকড়।
কলম মানেই গাছের
ভেতরে একই গাছের প্রজাতি, কলম মানেই একই ফলের গাছে দুই মন!
আমাদের ভেতরে
বাইরে একটাই চিলেকোঠা, সিঁড়িতে পায়ের ছাপ ভিন্ন তালে -
অভিন্নতা সরে
সরে নদীর ঠোঁটে দ্বিমুখ…
দ্রৌপদীর শহরের
মাস্তুলে ভাঙা রোদ্দুর, শ্রাবণের পিঠে একই গান
পাতা বিছানায়
কৃষ্ণবর্ণ কোকিল এসে কাটিয়ে যায় সারা সপ্তাহের সুখ...
বৈঠকখানা
দ্রোণের তীর
ছুটে গেলে -
মাছের চোখে
লক্ষ্যভেদ করবে লক্ষ ক্ষত্রিয়!
কেউ এখন আর
কাঁধ নাড়িয়ে নামতা মুখস্থ করে না মাষ্টারমশাই,
গুলতি দিয়ে
নামিয়ে আনে গুগলের পাখির ডিম -
অক্ষয়শব্দকে
কেউ বুমেরাং ভেবে আকাশে উড়িয়ে দেয় না,
ভীষ্মের জবানবন্দি
একজীবনের অন্তরীপে শুইয়ে রাখলে -
রান্নাঘরে পতিত
কণাগুলো অণুজীবের দাঁতে নখে গুড়ের গন্ধ ছাপিয়ে উঠতো -
আমরা কেমন বোকা
বোকা কথা শুনে ইতি গজতে দু’কান নাড়াই…
প্রেম
যখন তোমাকে
ভীষণ মনে পড়ে -
তোমার গায়ের
গন্ধ ঘরময় - আকাশ থেকে কোথাও অবিরাম জল পড়ে!
ছাতিম গাছের
নীচে একটা গোসাপ ঘুরে বেড়ায় সারাদুপুর,
পাশের বাড়ি
সারাদিন ঠুকঠাক; গুঁড়ো গুঁড়ো ধুলো করাতের দাঁতে-
ওদের শরীর রক্তবিহীন,
কিছু কিছু শব্দ পরিচয়হীন।
আলগোছে ভাঁজ
হয় নিপাট শহর, তোমাকে চিঠি লেখে কাগজের ঘর-
দূরে আছো তবু
সাঁকো রেখে গেছে দায়, "ভালোবাসি" কাছেপিঠে বানভাসি হয়!
তোমাকে ভীষণ
মনে করায়, এবেলা নয় ওবেলা নয়...
নির্জন হেঁটে
যায় বাম বারান্দায় -
কৃষ্ণচূড়ায়
বছরভর শ্রাবণ পাতায়, ঝলসানো ঝরাফুল মাটিকে পোড়ায়...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন