শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১

জয়তী দাস

 

কবিতার কালিমাটি ১০৮


অন্দরমহল

 

লিখতে লিখতে অনেক শহর কখন যেন গিয়েছে বাদ-

মাছের শিরদাঁড়া থেকে কাঁটা ছাড়াতে ছাড়াতে ভুলে যাওয়া মাছের স্বাদ-

 

একটি চারা যত্ন করতে করতে কলমে জুড়েছে ডাল-পালা-শেকড়।

কলম মানেই গাছের ভেতরে একই গাছের প্রজাতি, কলম মানেই একই ফলের গাছে দুই মন!

 

আমাদের ভেতরে বাইরে একটাই চিলেকোঠা, সিঁড়িতে পায়ের ছাপ ভিন্ন তালে -

অভিন্নতা সরে সরে নদীর ঠোঁটে দ্বিমুখ…  

 

দ্রৌপদীর শহরের মাস্তুলে ভাঙা রোদ্দুর, শ্রাবণের পিঠে একই গান  

পাতা বিছানায় কৃষ্ণবর্ণ কোকিল এসে কাটিয়ে যায় সারা সপ্তাহের সুখ...

 

বৈঠকখানা

 

দ্রোণের তীর ছুটে গেলে -

মাছের চোখে লক্ষ্যভেদ করবে লক্ষ ক্ষত্রিয়!

 

কেউ এখন আর কাঁধ নাড়িয়ে নামতা মুখস্থ করে না মাষ্টারমশাই,

গুলতি দিয়ে নামিয়ে আনে গুগলের পাখির ডিম -

অক্ষয়শব্দকে কেউ বুমেরাং ভেবে আকাশে উড়িয়ে দেয় না,

ভীষ্মের জবানবন্দি একজীবনের অন্তরীপে শুইয়ে রাখলে -

রান্নাঘরে পতিত কণাগুলো অণুজীবের দাঁতে নখে গুড়ের গন্ধ ছাপিয়ে উঠতো -

আমরা কেমন বোকা বোকা কথা শুনে ইতি গজতে দু’কান নাড়াই…

 

প্রেম

 

যখন তোমাকে ভীষণ মনে পড়ে -

তোমার গায়ের গন্ধ ঘরময় - আকাশ থেকে কোথাও অবিরাম জল পড়ে!

ছাতিম গাছের নীচে একটা গোসাপ ঘুরে বেড়ায় সারাদুপুর,

পাশের বাড়ি সারাদিন ঠুকঠাক; গুঁড়ো গুঁড়ো ধুলো করাতের দাঁতে-

ওদের শরীর রক্তবিহীন, কিছু কিছু শব্দ পরিচয়হীন।  

 

আলগোছে ভাঁজ হয় নিপাট শহর, তোমাকে চিঠি লেখে কাগজের ঘর-

দূরে আছো তবু সাঁকো রেখে গেছে দায়, "ভালোবাসি" কাছেপিঠে বানভাসি হয়!

তোমাকে ভীষণ মনে করায়, এবেলা নয় ওবেলা নয়...

নির্জন হেঁটে যায় বাম বারান্দায় -

কৃষ্ণচূড়ায় বছরভর শ্রাবণ পাতায়, ঝলসানো ঝরাফুল মাটিকে পোড়ায়...

 

 

 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন