বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০

বর্ণশ্রী বক্সী

 

কবিতার কালিমাটি ১০৫


দ্বিরালাপ  

 

মুখোমুখি বসে থাকা দুটি শালিখের মূক অভিনয়

আদানপ্রদানের মনে ঘোর বিরোধীতা-

বহমান নদীর কোলে নুড়ি পাথরের বিছানো পথ

সংগীতাদের বাড়ি ছেড়ে এগিয়ে গেলেই দেখা যায়

জংলা গোলাপের লতানো শাখায় আভিজাত্যের আভা!

 

ওই বুঝি ঝরে পড়া পাতার আবেশে কথকতা

শব্দ ভ্রমে খুঁজে নেওয়া হৃদয়ের লাবডুব-

বেঁচে থাকা মৃত সঞ্জীবনীর আরক পান করে

মৃত্যুর সঙ্গে দ্বিরালাপ শেষে জীবন জেগে ওঠে

ত্রিকালজ্ঞ মুনির ললাটের সেই চোখের মণিতে,

ভীড়ের মধ্যে থেকে ভেসে আসে কার আকুলতা

নিশ্ছিদ্র সময়ের খোলা পাতায় যাপন ইতিহাস আর

সংখ্যাতত্ত্ব দর্শন মিলে মিশে একাকার পরিসরে

রচিত হয় কিছু সংলাপ কিংবা খসড়া সাহিত্য।

 

স্বপ্ন 

 

স্বপ্ন দেখতে ভুলে যেও না, স্বপ্ন উজ্জীবিত করে

বহু বছর ধরে একটা আশার বীজ ধীরে ধীরে

বড় হতে থাকে মনের নাবাল জমিনে অগোচরে,

একটা ঘর বান্ধার বাসনায় উথাল পাথাল-

নক্ষত্রবেষ্টিত আকাশের নিচে হরেক সৌন্দর্য

আনত আঁখির সীমানা ছাড়িয়ে কিছু মোহ।

 

হৃদয়ের গভীরে জমা হতে থাকা মাধুরী মিশিয়ে

বাস্তবের দ্বন্দ্ব কাটাতে চাওয়া মানুষের মানচিত্র,

কখন যেন ফিসফিসানির আওয়াজ শুনে

ভেঙে যায় নীরবতা আর ধৈর্যের পরীক্ষা সম্পন্ন

আবারও আচম্বিতে বেজে ওঠে দেহতেত্ত্বর গান

জনম জনম আমি গৃহস্থালি সাজাতে গিয়ে

ভেসে যাই দরিয়ায় জীবন ছুঁয়ে প্রতীক্ষার

প্রহর কাটাতে, দীপ জ্বলে ওঠে সামদানে...

 

ফ্রন্টলাইনার

 

সামনে আছি রেখা বরাবর পৌনঃপুনিক

সমাজ গঠনের কারিগর, জানি কেউ

বলবে না ওরা বীর মুক্তিযোদ্ধা-

শিক্ষার কর্ষণ ভূমিতে মেধার হাল জুড়ে

তৈরি, যতই মুখাভরণে ঢেকে থাক মুখের

সত্তর শতাংশ, যতই ঘষে ঘষে স্যানিটাইজ

হওয়ার প্রক্রিয়া চলুক, তবুও মারীবীজ

গিজগিজ করছে চতুর্দিকে!

 

আবৃত মুখগহ্বরের থেকে যে ধ্বনি ঝংকৃত হয়

তা লালামথিত, ভিজে যাওয়া চেতনার সুর!

চোখের ভাষায় বুঝে নেওয়া বোঝানোর ক্লাস

সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে আসে স্রোতের ধারা

অপূর্ব মাদকতা উপচে পড়ার ফাঁকে বদলের

ঘন্টা বেজে ওঠে, মাস্ক ও মাস্কহীন সমুদ্রের মাঝে

যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা, গ্লাভস্ পড়া হাতে ঘেমে ওঠা

স্যাঁতসেঁতে অনুভূতিতে ঘরে ফেরা আরেকটা

সকালের অপেক্ষায়...

 


২টি মন্তব্য: