বুধবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২০

ময়ূরিকা মুখোপাধ্যায়

 

সমকালীন ছোটগল্প


মেঘ পিয়ন


বালির ঘরে আপনি কেন প্রেমটাকে একমাত্রিক করে রাখলেন?

সবুজ গোলাপে তথাগতর কি দেবপর্ণার কাছে ফেরাটা খুব জরুরী ছিল? শারীরিক ভাবে না ফেরাটও তো একটা ফেরা।

মাঝদরিয়াতে আপনার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটটা বেশ লাগল, কিন্তু শৈবাল আর অঙ্কনের জীবনের ওঠাপড়াটা আরেকটু বোধহয় স্বতঃস্ফূর্ত হওয়ার দরকার ছিল।

বালির ঘর, সবুজ গোলাপ আর মাঝদরিয়া, অনির্বাণের শেষ দুবছরের তিনটে উপন্যাস। প্রকাশকের অফিসে এখন ঘোর ব্যস্ততা। বইমেলার জন্য এদিক ওদিক  করতে করতে চিঠিগুলো পুনরুদ্ধার হয়েছে। অবাক লাগে, এখনও কোনো পাঠক এইভাবে প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য চিঠি লেখে? অনির্বাণ ভাবলো।

শামসুর এই চিঠিগুলো…

কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে জিজ্ঞেস করলো অনির্বাণ।

এসেছি এখানকার ঠিকানায়। একদিন খুলে দেখছি তোমার নাম লেখা। তাও হলো কিছুদিন… এই গোছগাছের চক্করে একদম ভুলে গেছিলাম।

বালির ঘরে আপনি কেন প্রেমটাকে একমাত্রিক করে রাখলেন?

একনাগাড়ে চিঠিটার দিকে তাকিয়ে কিছু ভাবছিল অনির্বাণ। সত্যিই কি সেই একটা গতানুগতিক প্রেম দেখিয়ে ফেলল? নাহ্, আরেকবার নিয়ে বসতে হচ্ছে, এইভেবে, যেই অনির্বাণ উঠতে যাবে ওমনি মুখোমুখি হল শুভ্রজিৎদার।

 

আরে অনির্বাণ! আরে বসো বসো, চললে কোথায়?

না মানে, এই উঠবো ভাবছিলাম।

আরে উঠবে পরে, বসো এখন। চা খাবে তো?

আড়চোখে ঘড়ি দেখার চেষ্টা করলো অনির্বাণ।

বুঝলে অনির্বাণ, তোমারটা প্রুফে চলে গেছে, বইমেলার দিন কুড়ি আগে, আশা করছি কপিটা পেয়ে যাবেতোমার মাঝদরিয়াটা কিন্তু খারাপ চলছে না। তবে, কী  জানো, আমি একটা সাজেশান্ দিই, তুমি না এবার একটু, ওই একটু হাল্কা ফোল্কা প্রেম-ট্রেম লেখো তো! মানে ওই দুর্জয় দত্ত ধাঁচের। আরে ও যদি দিল্লী থেকে  কলকাতায় এসে মিট আপ করতে পারে, তুমি পারবে না কোলকাতা থেকে দিল্লিতে গিয়ে মিট্আপ করতে? শোনো, বাংলাভাষা নিয়ে ছুতমার্গটা কিছুটা বাঙালিদের মনগড়া। নয়তো সারা বিশ্বে বাংলা ভাষায় বই পড়ার অভাব নাকি? হ্যাঁ, এখন বলতে পারো ই-বুক টি-বুক এসে গেছে। কিন্তু তাতে কী?

শুভ্রজিৎবাবু একবার উত্তেজিত হয়ে কোনও কথা শুরু করলে তাকে আর থামায়  কে! অন্য সময় মজা লাগলেও, অর্নিবাণের এখন মোটেই মজা লাগলো না। ফোনের লক্ বাটনটা বারবার অন্ অফ্ করতে করতে কোনওরকমে হ্যাঁ-হুম করে  কাজ সারছিল।

 

এই দেখেছো... আমি তোমার দেরী করে দিলাম! শুভ্রজিৎবাবু বলল।

ধড়ে প্রাণ ফিরে এল অর্নিবাণের। হেলমেটটা নিয়ে যেই বেরোতে যাবে...

অনির্বাণ, যেটা বললাম একবার একটু ভেবো। বিশ্বাস করো, আমি মন থেকে চাই তুমি বড় হও।

কথাগুলো কেমন ভেতরে এসেও এলো না অনির্বাণের। তবুও যতটা সম্ভব নম্র হয়ে উত্তর দিল, বেশ। মাথায় রাখবো।

বড় হওয়া যে কাকে বলে, এখনও বোঝা গেল না, এনফিল্ড স্টার্ট দিতে দিতে ভাবলো অনির্বাণ। ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে এগিয়ে গেল, শহরের বুক চিরে। সিগন্যালে দাঁড়িয়ে শুভ্রজিৎদার শেষ কথাগুলো ভেবে মনে মনে হাসি পাচ্ছিল অনির্বাণের।

দিল্লিতে মিটআপ! ব্যাপারটা মন্দ নয়। কেউ খুশি হোক বা না হোক, জুঁইয়ের বাবা অন্তত খুশি হবেন, অনির্বাণ ভাবলো।

অনির্বাণ সেন। বছর পঁয়ত্রিশের ঝকঝকে সাহিত্যিক। সংসারীও বটে। বছর তিনেক হলো বিয়ে হয়েছে। জুঁই অনির্বাণের ক্লাসমেট ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বছর ছয়েকের প্রেমঅবশেষে বছর তিনেকের বিবাহিত জীবন। অনির্বাণ চাকরীটাও ছেড়েছে প্রায় দু’বছর হলো।

চাকরী ছেড়ে দেবে? মানেটা কী? জুঁইয়ের বাবা বলেছিলেন।

বাবা ও এত ভালো লেখে! ওই আইটি সেক্টরের নটা ছটায় পড়ে ওর ট্যালেন্টটা এইভাবে নষ্ট হয়ে যাবে?

সেদিন প্রায় একাই লড়াই করেছিল জুঁই। ব্যাস, ওমনি সিস্টে ম ইঞ্জিনিয়ার  অনির্বাণ সেন রাতারাতি বদলে গেছিল সাহিত্যিক অনির্বাণ সেন-এ।

 

কিন্তু ওই চিঠিটা! আনতে ভুলে গেলাম নাকি?

বাড়ি ফিরে, হুডির পকেট হাতড়ে চিঠিটা না পেলেও, চিঠির বিষয়বস্তু ভালোই মনে ছিল অনির্বাণের। মা-বাবা দিদির কাছে ব্যাঙ্গালোর চলে যাওয়ার পর থেকে,  দুপুরবেলাটা ইদানিং একাই কাটছে। জুঁইও এখন যথারীতি অফিসে। তাই প্রত্যক্ষ ভাবে না হোক, পরোক্ষ ভাবে নটা-ছটা র সঙ্গে সম্পর্ক এখনও আছে। সদ্য সদ্য অপ্রত্যাশিত ভাবে, পাঠকের চিঠি পাওয়াতে, অনির্বাণের হঠাৎ ইচ্ছে হলো, বেশ ওই সিনেমা গল্পতে দেখানো সাহিত্যিক হতে। সেইমত, এক কাপ কফি বানিয়ে   জানলার ধারে বসলো। চা-কফি নিয়ে এমনিতেই খুব একটা বিলাসী নয় সে। তার ওপর এই ভরদুপুর বেলা...!

যথারীতি, অনভ্যেস বশত, সামগ্রিক ভাবে খুব একটা উপভোগ করা হলো না অর্নিবাণের। সে যাইহোক, তবু চিঠির প্রশ্নটা কেমন যেন হঠাৎ হঠাৎ করেই খোঁচা দিয়ে যাচ্ছে ভেতরটা। অথচ বালির ঘর নিয়ে খুব একটা কম হৈ চৈও হয়নি! চাকরী ছাড়ার ওপর বালির ঘরের রয়্যালটিই তো জুঁই-এর বাবাকে ভরসা দিয়েছিল।

কফি-টফি সরিয়ে রেখে, একবার ফের আনকোরা পাঠকের মতো বসলো এবার  নিজের উপন্যাসটা নিয়ে। ওই কয়েকটা লাইন, কয়েকটা শব্দ সারা দুপুর, সন্ধ্যে, শুধু ভাবিয়ে গেছে অনির্বাণকে।

রাতের সময়টাই জুঁই আর অর্নিবাণের একমাত্র ‘কোয়ালিটি টাইম’। ‘বেচারা জুঁই! এত স্ট্রেস যায় মেয়েটার ওপর দিয়ে...’ মনে মনে ভাবল অনির্বাণ। মাঝে মাঝে মনে হয়, এম.টেক অবধি পড়াশোনা করে, এই মার্কেট প্রাইসে শুধু বসে বসে লিখে কাটিয়ে দেবে? সেইমতই তলে তলে ওর নিজের কলেজেই একসময় খোঁজ-খবর চালাচ্ছিল। লেকচারার না হলেও, অন্তত যদি ল্যাব অ্যাসিসটেন্টরও একটা চাকরী!

কিন্তু, শেষমেষে মনে হল, ওই ছেলেপুলের কোডিং-এর এরর ঠিক করে, আর যাইহোক সাহিত্য হবে না। এর পরপরই, ওদেরই পাড়ার একটা নাটকের দলের জন্য একটা গান লিখে দিয়েছিল। নেহাৎই শখে। কিন্তু গানটা কেমন করে জানি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেল। দু-একটা ছোটো প্রোডাকশন্-এর সঙ্গে এরপর কথা হয়েছে। যদিও গানের থেকেও চিত্রনাট্য লেখার ব্যাপারে ও বেশী আগ্রহ দেখিয়েছ।

 

আচ্ছা! তুই ওই চিঠিটাকে এত সিরিয়াসলি নিচ্ছিসই বা কেন?

সবটা শোনার পর জুঁই প্রশ্ন করলো

আরে না রে, ও যেভাবে ধরেছে না জায়গাটা, সিরিয়াসলি আমাকে ভাবাচ্ছে

অনি, টেক মাই সাজেশানএকবার ফোন করে জান তো, অবতারটা ছেলে না মেয়ে?

মানে?

আরে যেটা বলছি, কর না!

কিন্তু

উফফ! এত প্রশ্ন করিস কেন বল তো?

আরে দাঁড়া... ছেলে মেয়েতে কী এসে যায়? অদ্ভুত তো!

এসে যায় বাবু, এসে যায়... শোন! যদি মেয়ে হয় তাহলে জানবি নিঘ্যাৎ পটানোর জন্য করছে। তোর মত এরকম একটা কমবয়সী হ্যান্ডসম নভেলিস্ট আর কোথায়  পাবে বল?

হয়েছে বাজে বকা?

বাজে বকছি? আমি? এই জানিস তো অনি, আমার না সিক্স সেন্স বলছে, এটা একটা মেয়ে। হয় যাদবপুর অথবা প্রেসিডেন্সি।  হয় বাংলা বিভাগ নয় কমপারেটিভ্ লিটেরেচার। পলিটিকস্-ফলিটিকস্ করে, জিন্স-এর ওপর প্রিন্টেড টি-শার্ট, আর  কপালের মাঝ বরাবর কালো টিপ। আঁতলামো মেরে বেনামে চিঠি লিখেছে।

উফফ্ জুঁই! প্লিজ!

আর কিছু বলতে যাওয়ার আগেই, জুঁই মোবাইলটা নিয়ে অর্নিবাণের হাতে ধরিয়ে দিল। সত্যিই, একবার জানা উচিত ছিল, চিঠিটা ঠিক কে লিখেছে! যদিও পৌনে এগারোটা বাজে, কিন্তু তাও এখন ফোন করাটা...

কি রে করলি?

দাঁড়া রিং হচ্ছে তো…

হ্যালো, হ্যাঁ শামসুর বলছি, ওই সকালের চিঠিটা কার নামে গো? হ্যাঁ কী? ওহহ্, আচ্ছা।

কী বলল? জুঁই জিজ্ঞেস করল।

মেঘ পিয়ন’। উত্তর দিল অর্নিবাণ।

কী? মেঘ পিয়ন? পাঠকের ছদ্মনাম!

ইন্টারেস্টিং! মনে মনে বলল অর্নিবাণ।

 

 

শেষ কিছু বছর দুর্গাপুজোতে কলকাতাতে থাকা হয় না আর। শারদীয়ার ঝামেলা চুকিয়ে টুক করে যুগলে পাড়ি দেয় অন্য কোথাও যদিও বইমেলাই এখন অনির্বাণের দুর্গাপুজো এবারের উপন্যাস 'তৃতীয় সপ্তাহ'এর কপি ইতিমধ্যেই পেয়ে গেছে শুভ্রজিৎদার হস্তক্ষেপে বইমেলার প্রথমদিন সুনীলদা উদ্বোধনও করেছেন এ এক পরম প্রাপ্তি তবুও 'মেঘপিয়ন'এর চিঠির রেশ এখনও অনির্বাণের স্নায়ু মজ্জায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে

সবুজ গোলাপ’এ তথাগতর কি দেবপর্ণার কাছে ফেরাটা খুব জরুরী ছিল? শারীরিক ভাবে না ফেরাটাও তো একটা ফেরা! হয়তো ঠিকই, কিন্তু অনেকসময় আপতদৃষ্টিতে পরাজয়টাও কোথাও না কোথাও জিতে যাওয়া কিন্তু বালির ঘর...

মেঘপিয়নের সঙ্গে প্রশ্নোত্তরের কাঁটাছেঁড়াটা ভেতরে ভেতরে লেগেই আছে।

মাঝে অনির্বাণ এতটাই উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল যে, বালির ঘরের দ্বিতীয় সংস্করণ-এর মতো উদ্ভট চিন্তাভাবনা মাথায় এসেছিল সব শুনে শুভ্রজিৎদা বলেছিল...

ভাই অনির্বাণ, এটা কে. সি নাগ-এর অঙ্ক বই নয়, বিশ্বাস করো!

খিলখিল করে হেসে উঠেছিল জুঁই

শালা, এর থেকে তো শখের কবিই ভালো ছিল... অনির্বাণ বললো

তাই বুঝি? তাহলে  শৈবাল স্যারকে তোর সি.ভি-টা দিয়ে একবার বলি?

জুঁই প্লিজ! আমি একেই... আচ্ছা তুই বল তো! বছরে কি দুটো উপন্যাস লিখতেই হবে? গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ সতেরো বছর ধরে একটা উপন্যাস লিখেছিল সতেরো বছরশালা এখানেও টার্গেট? এখানেও ডেডলাইন?

আর নয়তো মেঘপিয়নের খোঁচা!

জুঁই!

এখনকার মত মেসেঞ্জারের আনরিড মেসেজগুলো আগে কখনও বোধহয় এত ঘাঁটে নি অনির্বাণ! নিজের পোস্ট করা প্রায় সবকটা ছবির লাইক-রিঅ্যাক্ট করা লোকজনের নামের তালিকায় দেখেছে। কিন্তু... নিস্তব্ধে, মেঘপিয়নের উড়ো চিঠি অনির্বাণের চিন্তা ভাবনার স্তরকে সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর করেছে। কিন্তু, সে যদি আমার এত ভালো পাঠকই হয়, বইমেলাতেও একবার আসবে না?

বইমেলায় দাঁড়িয়ে কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে ভাবছিল অনির্বাণ

এক্সকিউজ মি!

ঘোর ভাঙল অনির্বাণের

আপনি অনির্বাণ সেন না? আমি আসলে আপনার লেখার অনেক বড় ভক্ত।

কাষ্ঠ হাসি হাসলো অনির্বাণ বিড়বিড় করে রমণীটিকে উত্তর দিল, অন্ধভক্ত!

কিছু বললেন? মেয়েটি প্রশ্ন করলো।

আরে না নাআলাপ হয়ে ভালো লাগলোভালো থাকবেন। হেসে উত্তর দিল অনির্বাণ

একটা সেলফি?

ইয়া শিওর...

ইস্, জুঁইয়ের বাবা যদি থাকত! মনে মনে ভাবলো অনির্বাণ

হঠাৎ কী মনে হল অর্নিবাণের, ফিরে যাওয়া মেয়েটিকে ডেকে বসলো-

এক্সকিউজ মি!

মেয়েটি ফিরে উত্তর দিল-

কিছু বলবেন?

এক ঝলক আপাদমস্তক চোখ বুলিয়ে উত্তর দিল-

না।

সেলফি, পাল্টা-সেলফি, দেখা-সাক্ষাৎ, চেনা-অচেনা, জানা-অজানার মধ্যে ভালোই কাটছে বইমেলা অনির্বাণের এবারের উপন্যাস 'তৃতীয় সপ্তাহ'র রেসপন্সও ভালো সই নেওয়ার জন্য দু-চারজন ভিড় জমাচ্ছে জুঁইয়ের বাবার সামনেই ঘটছে সেসব  আনন্দে-উচ্ছ্বাসে-স্বস্তিতে, অনির্বাণ এখন তাই সপ্তম স্বর্গে 'তৃতীয় সপ্তাহ' ছাড়াও, অনির্বাণের অন্যান্য উপন্যাসগুলোও খারাপ সাড়া পাচ্ছে না সব মিলিয়ে-ঝুলিয়ে মেঘপিয়নের চিঠির ওপর আস্তে আস্তে জমা হচ্ছে অনির্বাণ সেনের আত্মবিশ্বাস

আজ বইমেলার শেষদিন শেষ কিছু বছর, এই শেষদিনটাতে অনির্বাণ একা থাকতে পছন্দ করে শেষ গোধূলিতে বইমেলাটা আজ পুরো বিসর্জনের সময়  দুগ্গাঠাকুরের মত লাগে একটা ছোট্ট প্রকাশনার স্টলে, টুক করে ঢুকে পড়লো অনির্বাণ তথন সেখানে জোরকদমে শেষ দিনের তোড়জোড় চলছে। তার মধ্যেও যে কটা এদিক-ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ একটাতে চোখ পড়ে গেল তার। দৃষ্টি আটকে গেল, একটা বইয়ের মলাটের দ্বিতীয় লাইনে-

আধভেজা জানলার পাশে

মেঘ পিয়ন


এই বইটা?

অনির্বাণ ঘুরে প্রশ্ন করলো

একজন তরুণ কবির কবিতার বই, খুব একটা বিক্রিবাটা নেই

অনির্বাণ তখন একদৃষ্টে দেখে চলেছে, বইয়ের লেখাগুলোতিনচার পাতা ওল্টাতে, নতুন করে চোখে পড়ল, একদম শুরুর পাতার মাঝের অংশ-

প্রিয় সাহিত্যিক অনির্বাণকে’

স্টল থেকে বেরিয়ে মাঝখানের সিঁড়ির ধাপগুলোতে বসে পড়লো অনির্বাণ দু-ফর্মার বইটা রীতিমত গিলছে খানিকক্ষণ চুপ করে বসে রইল অর্নিবাণ। সাইড ব্যাগ থেকে, ‘তৃতীয় অধ্যায়’এর' কপি বের করে মুচকি হাসলো ততক্ষণে বইমেলার শেষের ঘন্টা বাজতে শুরু করে দিয়েছে সদ্যজাত মেট্রোর তখন বাড়ি ফেরার তাড়া ফেরার তাড়া অনির্বাণেরও ফেরার তাড়া, সাইড ব্যাগের উপন্যাস আর কবিতারও

 

 


1 টি মন্তব্য: