শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০

অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়

 

কবিতার কালিমাটি ১০৩


কারফিউ

 

 

(ক)  

 

তুমি ছিলে,

আমার শহর ছিলো পাশে,

আনমনে তুমি চেয়েছিলে,

আকাশের দিকে,

মেঘ ছিলো, রোদ ছিলো,

আশ্চর্য আলোয় ঢেকেছে দেশ,

তুমি ছিলে, আমি ছিলাম,

আমার শহরে, একেকটা গল্পের মতো,

পড়ে থাকা এতটুকু, মৃদু অবশেষ।

 

(খ)  

 

শহরে কারফিউ যখন,

বুকের ওপরে তোমার হাত,

বন্ধ দরজাতে, একেকটা খসখস,

জানলায় ওড়ানো সুখ,

পাঁচিলের ফাঁক দিয়ে দেখি,

কার্ণিশে পা ফেলে ফেলে,

বেড়ালীরা হেঁটে গেছে,

একফালি কলকাতা, ছবি হয়ে আছে।

 

(গ)

 

রাত হবে, তুমি জিজ্ঞেস করবে আমায়,

অসুখ কি অনেকটা ছড়িয়েছে?

আমি সাজাবো তোমার জন্য,

একেকটা চলভাষের গান,

যেখানে মানুষের মতোই,

একেকটা ছোটো ছোটো পাখি,

ফুল হয়ে ঠিক উড়ে যাবে।

 

 

অপেক্ষা

 

যে মেয়েটি অপেক্ষারত,

অবাক চাউনিতেই,

একেকটা সুখ নিয়ে,

রয়েছে তাকিয়ে ঠিক,

আমাদেরই দিকে,

যে মেয়েটি হেঁটে গেছে,

বহুদূরে হেঁটে গেছে,

পাশাপাশি একা হয়ে হেঁটে গেছে,

সেখানে থামেনি কেউ,

যেখানে নদীর শেষ,

মোহানার কাছে,

যে মেয়েটি অপেক্ষারত,

পথ বেয়ে বেয়ে গেছে,

সুখের প্রতীক্ষারত,

নির্জনে স্বপ্নগাছ,

মেঘ হয়ে ফুটে ওঠে,

যেখানে কুয়াশাভোর,

রঙিন কাগজে লেখা,

একেকটা ঠিকানার মতো,

নীল চিঠি পাহাড়ের গায়ে,

অপেক্ষারত হয়ে, থেকে গেছে,

বহুমাস কেটে গেছে,

স্যাঁতস্যাঁতে দেওয়ালের গায়ে,

জীবাশ্ম হয়ে থেকে গেছে,

মাটি সুখ নদী জল – কবিতার মতো...

 

 

সূর্যাস্ত

 

ঘুড়ি কেটে পড়ে,

জমিতে চরকা-রঙ,

পোড়া পোড়া জমি,

ঘুমে চোখ বুজে আসে,

আমার শহরে,

অসুখ বেড়েছে বুঝি,

কপালে এখনও তাপ,

হাত ছুঁয়ে দেখি,

পিচঢালা পথ বেয়ে,

গাড়ি চলে গেছে,

সুস্থতা খুঁজে দেখি,

কাঠফাটা রোদে,

ভালোবাসা – সুখ হয়ে,

ফিরে আসে,

এখনও বছর বাকি,

জল হবে, রাত হবে,

বিকেলে ফুলের গাছে,

প্রাণ আসে, ঝোপ হয়ে,

ময়দানে ফিরে দেখি,

বেঁচে আছে যত প্রেম,

ফুল হয়ে দেবদারু গাছে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন