বুধবার, ১৫ জুলাই, ২০২০

ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী



কবিতার কালিমাটি ১০২



খিদে

তাকে বলা হয়েছিল খিদের বাইরে থেকে খিদের কবিতা লিখতে। সে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ  করে আর ভাবে কীভাবে ভাতের কবিতা সে লিখবে। কীভাবে কবিতার মধ্যের থেকে ভাতের গন্ধ আসবে? সে তথ্যচিত্রে দেখে কীভাবে চিত্রপরিচালক উনুনে ভাত  ফোটানোর দৃশ্য দেখাচ্ছে। গন্ধ আসছে কি? সে আপাতত দশদিন না খেয়ে আছে আর চেষ্টা করছে যে তাতে যদি ভাতের কবিতা আসে। রাতে স্বপ্ন দেখে যে কে যেন দৈববাণী করে বলছে যে হরিণের মাংস বেচলে তুমি ভাত পাবে। সে দেখে সারি সারি হরিণ ছুটে বেড়াচ্ছে স্বপ্নের মধ্যে। সে তাদের পেছনে ছোটে। ক্রমশ পায়ের গতি বাড়তে থাকে এবং শেষমেষ ওদের মধ্যে পৌঁছে যায়। কিন্তু হরিণ ধরবে কি? নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে, সে নিজেও ওদের মত হরিণ হয়ে গেছে।


মড়ক
  
সেইবার যখন মড়কে এতগুলো লোক মারা গেল, তখন এক অদ্ভুত ব্যাপার হলআমাদের প্রত্যকের গা থেকে নিদারুণ বাজে গন্ধ বেরোতে লাগলমড়কের গন্ধআমরা সবাই একই স্বপ্ন দেখতে লাগলামস্বপ্নে আমরা শৌচালয় খুঁজে পেতাম নাশরীর ক্রমশ ভারী হয়ে উঠছে অথচ শৌচালয় পাওয়া যাচ্ছে নাস্বপ্ন যদিও কিন্তু তাহলেওকিন্তু যাইহোক এই প্রবল চাপের মধ্যে একটা টোটকা কাজে লেগে গেলঘরের মধ্যে ইঁদুর পুষতে লাগলাম, এবং রোজ দেখতে লাগলাম কীভাবে সে দৌড়ায় খাবারের জন্যটোটকাটা কাজে লেগে গেছিল


ছায়া

কিছুদিন হলঘরের মধ্যে একটা ছায়া ঢুকে পড়েছে। প্রথম রাত্রে সে বসার ঘরে আস্তানা গেড়েছিল। ভাবলাম সকালবেলা সে চলে যাবে। কিন্তু সকালবেলা উঠে দেখি ছায়াটাকে আরও গাঢ় দেখাচ্ছে সূর্যের আলোয়। বাচ্চারা উঠে বলল, এটা  কিসের ছায়া? আমরা বললাম, ও কিছু নারোজ ভাবি ছায়াটা যাবে, কিন্তু সে  কিছুতেই যাবে না। তাই বাড়ি বদলালাম। কিন্তু সাথে সাথে সে এসে বসার ঘরে আস্তানা গড়ল। কিছুই করে না, তবু তার উপস্থিতি বিরক্ত করে। শেষে না পেরে একদিন তাকে ছুঁয়ে মিষ্টি করে বললাম, কী হয়েছে? সে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল। দেয়াল ভিজে গেল। বলল, থ্যাঙ্ক ইউ, জানতে চাওয়ার জন্য, আজ যাই। সে চলে গেল আর আমাদের খুব কষ্ট হতে লাগল।



২টি মন্তব্য: