কবিতার কালিমাটি ১০২ |
ঈশ্বরহীনতা এবং ধর্মগ্রন্থ
(এক)
একটি সরল রেখার পথে যখন একটি অর্ধসত্য এসে পড়ে
তখন তাকে সম-দ্বিখণ্ডিত হতে হয়
এখন প্রশ্ন হল তাহলে কি একদিক সত্য অন্য দিক মিথ্যে
পাবে
অথচ আমি দেখেছি যে সকল নিরীশ্বর আকাশের দিকে ছুটে
গেছে বিনিদ্র রাত
তার যত ভাগই হোক সবগুলি অর্ধসত্যই থাকে
ঠোঁটের উপর রাখে যা কিছু অপরিমেয়
আমি রাত এবং দিনের মাঝে এই ব্যবধানটুকুর কাছে, সেই
সরল রেখায়
একটি মাত্র শব্দ রেখেছি
যা লিখতে গেলে সবকটি বর্ণ ব্যবহার হবে
আর সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার আগে
অবিশ্বাসী বাতাসের বিপরীতে অন্তত খোলা যাবে
আমার দিগন্ত হারানো নৌকার পাল
তাহলে যা ভেশে গেল তার কি কোনো উচ্চারণ নেই
নাকি দাঁড়ের ছপাৎ ছপাৎ আওয়াজকেও লিখে
সে ভরিয়ে দিয়েছে টুকরো টুকরো মায়ের বা স্ত্রীয়ের
ছেঁড়া কাপড়ের পাল
যা পেয়েছে তা হয়তো আমরা আগেই ভাগ করতে চেয়েছি।
(দুই)
আমাদের পারিবারিক শত্রু বলে গেছে
একটি খোলা মুখ কলিয়ারির মাঝে নিজের স্বরূপ দেখে
যদি তুমি ভয় পাও
তাহলে বুঝবে
এই বিষণ্ণতারোগ কেটে উঠে আসছে টুকরো টুকরো
আমাদেরই আগের মৃত প্রাণীদের প্রণয়
আর যা বিস্ময় রয়ে গেল তার কোনো মুক্তি নেই
টুসু নামক মেয়েটি দুহাত জড় করে আছে
যার একটিতে লেখা আছে নিবেদন অন্যটিতে ঈশ্বরহীনতা
দুহাতের মাঝ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে ঘন কালো পারদ
এত চাপ আর তাপেও সে কঠিন হয়নি
সেই ভয় থেকে পাওনাগুলো ক্ষয়ে গেছে একটু একটু করে
যা আমাদের সাবেকী খাতায় ছিল না
বারবার একটি নকল দলিল হয়ে ফিরে আসছিল জীবনে
(তিন)
আমি পৈত্রিক বলতে একটি ভাঙা চেয়ার আর
মায়ের সেই শাড়ি পেয়েছি
যার কাছে এক প্রাগৈতিহাসিক স্থিরতা রয়েছে
করুণা এবং নিবেদন
লিখেছি যাকে আমি আপ্রাণ ক্ষমা করে এক আশ্বিনের রাতে
আঁকড়ে ধরে ছিলাম
সে আমাকে সকাল বেলায় অভিযুক্ত করেছে
তার অনিচ্ছুক ঘুমের ভিতর আমি স্বেচ্ছাচারী
এক দীর্ঘ এবং নিরবচ্ছিন্ন শীৎকার
তাহলে এই সেই শব্দ যা লিখে মনে হয় আমরাও হয়তো
একটা সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে এসেছি
আর দেখেছি আমাদের মেটা-ফিজিক্স থেকে ঝরে গেছে আলো
সব আলো সব অন্ধকারের কাছে সেই ফেলে আসা সরল রেখাই
চাইছে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন