রবিবার, ১৭ মে, ২০২০

উল্কা



কালিমাটির ঝুরোগল্প ৮৪



নিরুদ্দেশ


রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখলাম তোমার হোটেলের রুমে আলো জ্বলে উঠলো। রাত দেড়টা বাজার পর থেকে ঘড়ির কাঁটাদুটোর মধ্যে বিবাদ চলছে। অমীমাংসিত জানি তাই অযথা সময় নষ্ট না করে সেদিক থেকে চোখ ফেরালাম। ক্রমে গ্রীষ্মকাল নেমে আসছে শহরে। স্পষ্ট হয়ে উঠছে ঘেমে যাওয়া কপালের ভাঁজ। ঘর ছেড়ে বেরিয়েছি বেশ কয়েক ঘন্টা হল। নিরুদ্দেশ বিজ্ঞাপন বগলদাবা করে হেঁটে চলেছি। রাস্তার অভিমুখ সোজা রেখেছি, ঠিক সাইকেল চালানোর সময় বাবা যেমন বারবার বলত হ্যান্ডেল সোজা রাখতে, যাতে তাল হারিয়ে আছড়ে না  পড়তে হয়। সেই ব্যালেন্স খুঁজতেই লেগে গেছিল সপ্তাখানেক। কিন্তু বাবাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি ব্যালেন্স হারালাম কবে! ছোটোবেলায় গোয়েন্দা সেজে অনেক খবরের কাগজ পুড়িয়েছি রোদের মধ্যে ম্যাগনিফাইং গ্লাস ধরে। আমল দিইনি হারিয়ে যাওয়ার সময় নিরুদ্দিষ্টের পরিধেয় বিবরণীতে।  নিরুদ্দেশদের ঘরে ফেরানোর তাগিদ নিয়ে হারিয়ে যায় অনেক সন্ধানী। আবার তাদের ঘরে ফেরাতে আরেক দল। একটা বড়াপাও কিনে এই অভিযানে খরচের খাতা খুললাম। গুজরাটের রাতগুলো বড্ড বেশী আগলে রাখে তাই বেপরোয়া হবার ইচ্ছা ‌তড়তড়িয়ে বেড়ে যায়। মুঠোফোন বাঁধ সেধেছে। অন্য নামের নম্বরে মুখস্থ নম্বর বসিয়ে বোঁ বোঁ করে পাক খেতে খেতে এসে থেমেছি রাজপ্রাসাদের লেটারবক্সে। আমার পরনের রং সাদা থেকে বদলে গেছে কালোয়। হাসপাতালের দরজায় জ্বলজ্বলে এমার্জেন্সি লেখা আলো পেরিয়ে গেল কেউ। হারিয়ে গেল মুহূর্তের মধ্যে  চেনা অন্ধকারের বুক চিরে। তন্দ্রাচ্ছন্নের মতো সোজা এগিয়ে চলেছি, খুঁজতে বেরিয়েছি একটা কাউকে। হারিয়ে যাওয়ার সময় যার সঙ্গে ছিল GJ01BF1053 লেখা একটা নাম্বারপ্লেট!



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন