অবন্তিকা সিরিজ
অমরত্ব
সালিশি-সভার শেষে তাড়া করে পিটিয়ে মেরেছে যারা, তারা
তোকেও রেয়াত করল না অবন্তিকা; আমরা
দুজনে পচে
চলেছি হুগলি ঘোলা জলে ভেসে : কী দোষ বলতো আমাদের?
বউ তুই বৈভবশালীর, আমি গোপন প্রেমিক
ছোটোলোক;
সাম্যবাদ নিয়ে কত কথা চালাচালি হল তিরিশ বছরে,
প্রেমিকের জন্য নয়, কে জানে কাদের জ্ঞানে
লেগেছে কেতাব–
প্রেমে পচে গলে হারিয়ে যাওয়া ছাড়া যা থাকে তা
অর্থহীন
সংসারের ঘানি টেনে কলুর বলদে মেটামরফোজড প্রাণী,
পার্টির ফেকলু কর্মী। ভাল এই লাশ হয়ে সমুদ্র ফেনায়
বিশাল ঢেউয়ে চেপে সকালি আলোর পথে মৃত জড়াজড়ি…
জ্যামিতির উৎস
অবন্তিকা বললি তুই :
নৌকো মাতাল হতে যাবে কেন ? এ-যুগে
সমুদ্রটা নিজেই মাতাল!
আমি বললুম :
যত জ্যামিতি কি শুধু তোরই দখলে? কার
কাছ থেকে পেলি?
অবন্তিকা বললি তুই:
আর্কিমিডিস দিলেন দেহের ঘনত্ব!
রেনে দেকার্তে দিলেন শরীরের বাঁকগুলো!
ইউক্লিড দিলেন গোপন ত্রিভূজ!
লোবাচোভস্কি দিলেন সমন্বিত আদল!
ব্রহ্মগুপ্ত দিলেন মাংসময় বুকের নিখুঁত বর্তুলতা!
শ্রীধর দিলেন আয়তন!
নারায়ণ পণ্ডিত দিলেন দৃষ্টি আকর্ষণের ক্ষমতা!
আর তুই কী দিলি? অক্ষরে সাজানো যত
ফাঁকা মন্তর?
আমি বললুম :
আমি দিয়েছি প্রেম!
অবন্তিকা তুই বললি :
প্রেম তো আলো হয়ে বেগে আসে আর তত বেগে চলে যায়!
মেরু বিপর্যয়
অবন্তিকা, হিপি বিদেশিনী,
স্লিপিং ব্যাগেতে তোর
চুপচাপ ঢুকে যেতে দিয়েছিলি, শুনে
আমি কবি,
‘টাইম’ পত্রিকা ফোটো ছাপিয়েছে,
বিটনিকরাও
লিখেছে আমার কথা বড়ো করে তাদের কাগজে—
হ্যাশ টেনে ভোম মেরে দু-ঠ্যাং ছড়িয়ে সে-প্রণয়
গিঁথে আছে চেতনায় কবিতা ভাঙিয়ে তোর শ্বাস
না-মাজা দাঁতের ভাপ সোনালি শুকনো চুল ধরে
বুকে ময়লাটে তাপে মুখ গুঁজে কবিত্ব করেছি;
বলেছিলি, কবিতা তো জিভের ডগায়
বাস করে,
তোমার ভাষায় লেখো জিভ দিয়ে রহস্যগহ্বরে।
আমার পৃথিবী উল্টে দিয়েছিস সেই রাত থেকে
পা উপরে মাথা নিচে এ-আমার সৃজন-জগত–
হিপি বিদেশিনী তোর গন্ধ ভুলে গেছি; তোর
নাম
টিকে আছে অবন্তিকা হয়ে আরো নারীদের সাথে।
ডাক্তারের নির্দেশে আমাকে রোজ দুই কিলোমিটার হাঁটতে হয়। আজ মলয়দার কবিতা পড়লাম। আগামী এক সপ্তাহের হাঁটা আমাকে যতখানি জীবনীশক্তি দিতো, তার বেশি আজকেই মজুত করলাম। আমি যদি মুকেশাম্বানি হতাম,'জ্যামিতির উৎস'-র জন্য আপনাকে এ বছরের আইপিএল ট্রফিটা কিনে দিতাম। মলয়দা যুগ যুগ জিও।
উত্তরমুছুন