শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২০

সুকান্ত দেবনাথ


নিজস্ব কাশফুল

   
(১)  

একটি একাকী শূন্য আর নিজস্ব কাশফুল
বসেছিল আদি থেকে অন্তের দিকে 
হাওয়া যেখানে বয়ে চলা সেই সব পৃথিবীর হারানো পিয়ন    
নিজেদের স্মৃতি কুয়াশাকাগজে লিখে ফেলে গেছে 
দরজা বন্ধ ছিল  
শূন্য এখন আর কোনো সংখ্যার অঙ্কশায়িনী নয় 
ঝুল বারান্দায় সেও চির উদাসীন
ঘুম থেকে ছড়িয়েছে সাদা কাশফুল     


(২)

একদিন যাব তোমাদের মহুয়া বাগান দিয়ে 
ফেরি করে আসব আমাদের পালিত কান্নাকাটি 
নিসর্গ প্রেরিত জাদুবৃন্দাবন আর
কিছু লাল কিছু হলুদ কিছুটা আবির 
পায়ের ছাপ রয়েছে দেখো আমার নেশাতুর ঝোলার ভিতর
উন্মুক্ত হতে চেয়ে স্বপ্নবিলাসী    
প্রতিটি স্থিতি যেখানে অতল গভীর  


(৩)

মাটি ছিল ভিন্ন হয়ে গেছে 
এখন শুধু পোড়া হাঁড়ি দাউ দাউ খিদে 
নিকান উঠোন দিয়ে হেঁটে গেছে মা 
বৌ তার তৃতীয় অধ্যায়টুকু নকল রেখেছে   
অদ্বিতীয় বলিরেখা রেখেছে শেষ ভাগ 
দেখো আমি প্রথম আর দ্বিতীয় পাতায়     
নিজেকে অবিশ্রান্ত খুঁজে দেখছি 
সব অর্থহীনতার এক দোসর অর্থহীনতাও থাকে  
  
   
(৪)     

শেষ মৃত্যুর কথা আমার মনে নেই 
অন্তিম জন্মেও ছিল না কোনো আশ্রয়     
নিঝুম ঘাটের কাছে সেই শূন্য কলস 
আর ভেসে যাওয়া বৈমাত্রেয় ভাই 
দেখিনি  শ্রাবণেও দেখিনি অথবা কালবৈশাখে 
অভাগার জন্য যেটুকু জ্বালানি ছিল   
ঘুণপোকা মাটি করে গেছে 


(৫)  

এভাবেই হয়তো একটি ঋণাত্মক জয় 
যুদ্ধের শেষ দিকে বিষণ্ন রক্তের দাগ আর     
নিজেকে পেয়েছে শূন্যপোয়াতি    
মৃত শিশু, প্রসব কষ্টসার 
তাই নিয়ে সারি দিয়ে বসেছে রাস্তায় 
কুয়াশা কাগজখানি উড়ে এসে ছুঁয়েছে তাদের 
নীরব ভূমিকা থেকে আশ্চর্য গরমিল ঝরে পড়েছে 
তাহলে দাহ্য ছিল অথবা অপেক্ষায়
সাদা কাশফুল না হলে তার কায়া শরীর 
হিসেবি রোজনামচার প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে         

৩টি মন্তব্য: